Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠালে বাংলাদেশকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেব!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ মার্চ ২০১৯, ০৭:৪৯ PM
আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯, ০৭:৪৯ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হুমকি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভিডিও প্রকাশ করেছে এক রোহিঙ্গা যুবক। ভিডিওটি ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।

জোর করে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হলে বাংলাদেশের যত উঁচু দালান-কোঠা আছে সব মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হবে বলে ভিডিওতে হুমকি দিয়েছে ঐ রোহিঙ্গা যুবক। একই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও হুমকি দিয়েছে এই যুবক।

হুমকিদাতা রোহিঙ্গা যুবক দামি জামাকাপড় এবং অলঙ্কারে শোভিত অবস্থায় একটি গাড়িতে বসে প্রধানমন্ত্রীকে আরাকানি ভাষায় ‘পরিণতি খারাপ হবে’ বলে হুমকি দেয়।

নিজেকে আবদুল খালেক বলে পরিচয় দেয়া রোহিঙ্গা যুবক সপরিবারে মালয়েশিয়া অবস্থান করছে।

সেখান থেকে দামি গাড়িতে বসে ফিল্মের ভিলেন স্টাইলে হুমকি দিয়ে নিজেকে জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেও দাবি করে এই যুবক।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হুমকি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভিডিও প্রকাশ করে এই রোহিঙ্গা যুবক। ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়।

এই রোহিঙ্গা যুবক প্রধানমন্ত্রীকে আরাকানি ভাষায় ‘পরিণতি খারাপ হবে’ বলে হুমকি দেয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশের যত উঁচু দালান-কোঠা আছে তা ধ্বংস করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেবে বলেও জানায়।

ভিডিও বার্তায় এই রোহিঙ্গা যুবক আরও বলেছে, রোহিঙ্গাদেরকে যেন মজবুর (বাধ্য) করা না হয়। এমনটি করা হলে বাংলাদেশের যত উঁচু দালান-কোঠা আছে তা ধ্বংস করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হবে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমার বাহিনীর ওপর আক্রমণ করতে তৈরি হচ্ছে। ওই সময় পর্যন্ত যেন রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার পাঠাতে তোড়জোড় করা না হয়।

কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্পের ডা. জাফর আলম ডিপু এই যুবকের পরিচয় নিশ্চিত করে বলেন, রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি প্রধানমন্ত্রীকে হুমকিদাতা রোহিঙ্গার নাম আবদুল খালেক।

তিনি বলেন, খালেকের বাবা আবদুস সালাম মিয়ানমারের বলীবাজার ধুমবাই এলাকার হুয়াক্কাট্ট (চেয়ারম্যান) ছিলেন। যদিও তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। তার আট ভাইয়ের মধ্যে এক ভাই থাকে থাইল্যান্ডে আর ছয় ভাই থাকে উখিয়ার তিনটি ক্যাম্পে।

ছয় ভাইয়ের মধ্যে থাইংখালী তাজনিমারখোলা ক্যাম্পে থাকে আলী আহাম্মদ ও আলী হোসেন, বালুখালী ১ নম্বর ক্যাম্পে থাকে মো. হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম এবং বালুখালী ২ নম্বর ক্যাম্পে থাকে ফয়সাল ও হাছান। আবদুল খালেক সপরিবারে দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়া অবস্থান করছে বলেও জানান জাফর আলম।

ডা. জাফর বলেন, আমরা লজ্জিত। যে মানবতার মা আমাদের সরলমনে এখানে আশ্রয় দিয়েছেন, শঙ্কাহীন জীবন-যাপনের ব্যবস্থা করেছেন তাকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এখানে অশান্ত কোনো পরিবেশ তৈরি করতে আবদুল খালেক কোনো এজেন্টের হয়ে এমন কাজটি করেছে বলে আমাদের মনে হয়।

বাংলাদেশ সরকারকে এই হুমকির রহস্য উদঘাটনের অনুরোধ জানিয়ে ডা. জাফর বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় আমরা এখানে আশ্রয় পেয়েছি, আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের অনুরোধ এই হুমকির রহস্য যেন উদঘাটন করেন তিনি।

এদিকে প্রকাশের কিছুক্ষণের মধ্যেই এই ভিডিও ভাইরাল হয়। তাকে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন কক্সবাজারের স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।

এ বিষয়ে টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাবেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, যতটুকু দেখলাম তাতে আমরা বুঝতে পারলাম রোহিঙ্গারা নিমকহারামির দল। মানবতার খাতিরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সারা দেশের মানুষ সহযোগিতা দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে তাদের। অথচ আমাদের খেয়ে এখন আমাদেরই হুমকি দিচ্ছে। হুমকিদাতা রোহিঙ্গা যুবক যেখানেই থাকুক তাকে ধরে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাই। এভাবে চলতে থাকলে আমরা হুমকির মুখে পড়ে যাব। কাজেই ওই রোহিঙ্গা যুবকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই।

উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গারা অকৃতজ্ঞ একটি গোষ্ঠী। অনেক সহযোগিতা পাওয়ার পরও না পাওয়ার অভিযোগ তুলে সবসময়। অনেক সময় আমাদের সেনাবাহিনী ও পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছে তারা। নতুন করে রোহিঙ্গা আবদুল খালেক জাত চিনিয়েছে। এটি তো দুধ দিয়ে কালসাপ পোষার মতো। এরা পারে না এমন কাজ নেই। যেহেতু এই যুবক প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশকে হুমকি দিয়েছে সেহেতু যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেয়া হোক। সেই সঙ্গে এই যুবককে ধরে বিচারের আওতায় আনা হোক। তবে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেয়া ছাড়া বিকল্প পথ নেই।

Bootstrap Image Preview