নিজের মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়ানোর কথা বলে সাতক্ষীরার হাবিবুর রহমান সবুজ (২৬) খুলনা যায়। তারপর থেকেই তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
অন্যদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে খুলনা মহানগরের শেরেবাংলা রোডে পলিথিনে মোড়ানো অজ্ঞাত এক যুবকের হাত-পা ও মাথাবিহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ফরাজীপাড়া লেন থেকে দেহের বাকি অংশ উদ্ধার করা হয়। তখনও ওই যুবকের ব্যাপারে কোনো কিছু জানা যায়নি।
তবে আজ শুক্রবার পাওয়া ওই গেলো যুবকের নাম ঠিকানা। সাতক্ষীরা থেকে খুলনায় বেড়াতে যাওয়া নিখোঁজ হাবিবুর রহমান সবুজের লাশই ছিল এটি। ছেলের লাশটি শনাক্ত করলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ওমরাপাড়া গ্রামের আবদুল হামিদ।
জানা যায়, সবুজ রাজধানীর মিরপুর বাংলা কলেজের ছাত্র ছিলেন। কয়েকদিন আগে ক্যানসারে আক্রান্ত মা জাহানারা খাতুনকে দেখতে সাতক্ষীরায় নিজেদের বাড়িতে যান তিনি।
সবুজের বাবা আবদুল হামিদ জানান, গত মঙ্গলবার সকালে সবুজ তার মাকে নিজের মোটরসাইকেলে করে খুলনায় বেড়াতে যাওয়ার কথা বলেন। পরদিন ফিরে আসার কথাও জানান সবুজ। এরপর দুই দিন পার হলেও ফিরে না আসায় সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি জিডি করেন তার বাবা।
এর আগে খুলনার শেরে বাংলা রোড ও ফরাজীপাড়া লেন থেকে পাওয়া যায় সবুজের বিচ্ছিন্ন লাশ। আজ ওই লাশটি নিজের ছেলে সবুজের বলে শনাক্ত করেন বাবা আবদুল হামিদ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি নিয়ে যাওয়া হয় খুলনা সদর হাসপাতাল মর্গে।
সবুজের বাবা জানান, গতকাল সবুজের খোঁজ জানতে খুলনায় ফোন করা হলে সাদি নামের এক ব্যক্তি ফোনটি ধরে জানান সবুজ মোস্তফা মামার সঙ্গে যশোর গেছে। এরপর থেকে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
আবদুল হামিদ আরো জানান, খুলনায় সবুজের ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়। এই মামলায় কিছুদিন আগে জেলও খেটেছিলেন সবুজ। ব্যবসায়িক লেনদেনকে কেন্দ্র করে তার ছেলেকে খুলনায় কৌশলে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আবদুল হামিদ।
এ দিকে আজ শুক্রবার সকালে সবুজের ফোন থেকে সাতক্ষীরায় তাদের বাড়িতে একটি ফোন আসে। ফোনে এক ব্যক্তি বলেন, সবুজকে আমরা বেঁধে রেখেছি। ছয় লাখ টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পুলিশ এ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছেন। সবুজের লাশ নিতে খুলনায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি।