Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৫ বুধবার, মে ২০২৪ | ৩১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আসামি হয়েও থানায় বসে হিরো আলমের হাসি-ঠাট্টা, ভিডিও ভাইরাল

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ মার্চ ২০১৯, ০৫:১৭ PM
আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯, ০৫:১৭ PM

bdmorning Image Preview


যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর আগে গতকাল বুধবার রাতে বগুড়া সদর থানায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

এদিকে নারী নির্যাতনের আসামি হয়েও থানায় অতিথি আপ্যায়ন পেয়েছেন হিরো আলম। আজ ‍বুধবার তেমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ।

ভিডিওতে দেখা যায়, থানায় বসে পুলিশের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা করছেন হিরো আলম। এ সময়ত তিনি চা-ও পান করেন। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গেও দীর্ঘ আলাপ করেন তিনি। ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ভিডিওতে তাকে সবার সঙ্গে আনন্দ ও হাসিমুখে কথা বলতে দেখা যায়।

থানায় এসে কী কী খেয়েছেন-এমন প্রশ্নের উত্তরে হিরো আলম বলেন, ‘আঙ্গুর-আপেল সব খাইছি’, ‘ওসি স্যার দিয়েছিল।’

আপনাকে হাজতখানায় রাখা হয়নি কেন? উত্তরে হিরো আলম বলেন, ‘রাখবে সকাল হলে।’

আপনি এত জনপ্রিয় হয়ে কেন এই কাজটা করলেন-এ প্রশ্নের উত্তরে হিরো আলম বলেন, আমি দুইটা জিনিস প্রশ্রয় দেই না। মিথ্যা কথা ও মিথ্যুককে। অন্য কেউ হলেও আমি ছাড় দেই না। ওরে (স্ত্রী) আমরা হাতেনাতে ধরছি বলেই কিন্তু আমার কাছে সাক্ষী-প্রমাণ আছে। তাই বউ আছে ঠিক আছে, বউ বলেও ছাড় নেই।’

আপনি নারী নির্যাতন মামলার আসামি, এভাবে থানায় বসে চা খাওয়া আপনার রেকর্ড। হিরো আলম বলেন, ‘বাংলাদেশে কত আইনই তো আছে, কয়টা আইন কে মানে।’

এখন আপনি কি করবেন, রাতে হাজতখানায় থাকবেন, উত্তরে হিরো আলম বলেন, ‘হ্যাঁ। সকাল বেলায় জেলখানায় যাব। গ্রেফতার হলে যাওয়া লাগবে না। এটা কি শ্বশুরবাড়ি আমার।’

জেলখায় গিয়ে কী করবেন-জানতে চাইলে হিরো আলম বলেন, ‘জেলখানায় গিয়ে স্টোরি লিখব। কয়েদিদের জীবন ঘটনা লিখে একটা মুভি বানাব।

গতকাল বুধবার দুপুরে হিরো আলমের শ্বশুর সাইফুল ইসলাম খোকন বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় মামলা করলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামলায় বাদী সাইফুল ইসলাম উল্লেখ করেন, তার মেয়ে সাদিয়া বেগম সুমিকে (২৮) ১১ বছর আগে বগুড়া সদরের এরুলিয়া পলিবাড়ী গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের পালিত ছেলে আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলমের সঙ্গে বিয়ে দেন। তাদের সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই হিরো আলম তার স্ত্রীর কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। মেয়ের সুখের কথা বিবেচনা করে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর হিরো আলমকে তিনি এক লাখ টাকা দেন। আরও এক লাখ টাকার জন্য হিরো আলম তার স্ত্রীকে প্রায়ই মারধর ও নির্যাতন করতেন। গত ৫ মার্চ (সোমবার) হিরো আলম যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী সুমি বেগমকে বেদম মারধর করেন। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমি অভিযোগ করেন, শুনেছেন হিরো ঢাকায় দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। এ কারণ তিনি স্ত্রী-সন্তানের খোঁজ রাখেন না এবং সংসারের খরচ দেন না। এ প্রসঙ্গে কথা বললেই তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়।

এছাড়া রাতে বিছানায় শুয়ে হিরো আলম অন্য নারীর সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন বলে অভিযোগ করেছেন সুমি।

এ ঘটনায় সুমির বাবা সাইফুল ইসলাম বুধবার দুপুরে সদর থানায় অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ আমলে নিয়ে ওইদিন রাত সোয়া ১০টার দিকে হিরো আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, শ্বশুরের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে হিরো আলমকে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহিম জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হিরো আলম নিজেই থানায় আসেন। স্ত্রীর সঙ্গে দাম্পত্য কলহের জেরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে মারধর করেছে এমন অভিযোগ করেন।

তবে তার অভিযোগের কোনো সত্যতা মেলেনি। পরে তার শ্বশুরের দায়ের করা মামলায় থানাতেই তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

অন্যদিকে, হিরো আলমের অভিযোগ, স্ত্রীর সঙ্গে দাম্পত্য কলহের জের ধরে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে শ্বশুর সাইফুল ইসলাম ও স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমির নেতৃত্বে ৪-৫ জন তার ওপর চড়াও হয়ে কাঠের বাটাম দিয়ে মারপিট করেন। পরে তিনি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে তিনি বুধবার সকালে বগুড়া সদর থানায় স্ত্রী, শ্বশুরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে তার বাড়িতে গিয়ে হামলা, মারপিট ও টাকা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন।

Bootstrap Image Preview