Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চেয়ারম্যান প্রার্থীকে জেতাতে এমপির কাছে ৫ লাখ টাকা চাইলেন শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬ মার্চ ২০১৯, ০৯:২৮ PM
আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯, ০৯:২৮ PM

bdmorning Image Preview


আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে জেতাতে সংসদ সদস্যর কাছে সমিতির ফান্ডের জন্য ৫ লাখ টাকা চাইলেন নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে কাজ করা শিক্ষকরা।

বুধবার দুপুরে গোদাগাড়ী উপজেলা শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা ও মিলন উৎসবে এমপি ও শিক্ষকদের বক্তব্যে এ ধরনের কথা উঠে আসে।

শিক্ষকদের অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। সভাপতিত্ব করেন গোদাগাড়ী উপজেলা শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আমিনুর রহমান।

রাজশাহী নগরীর পদ্মাপাড়ে বিজিবি পরিচালিত পার্ক সীমান্ত নোঙরে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গোদাগাড়ী উপজেলা কলেজ শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির এই আয়োজনে অংশ নেন প্রায় ৮০০ মানুষ। এদের মধ্যে ৩২০ জন উপজেলার ১৪টি কলেজের শিক্ষক। আগামী ১০ মার্চের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এদের অধিকাংশই প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।

অনুষ্ঠানে এমপি ফারুক চৌধুরী বলেন, আপনাদের কিন্তু একটা জিনিস জানা দরকার। এই পিকনিক আপনারা যে টাকা সমিতিতে জমা দেন সেই টাকায় হয় না, আউট সাইড থেকে হয়। আপনারা শিক্ষকরা এই আমাদের মতো, মজিদ মেয়রদের মতো, রশিদ সাহেবদের মতো লোকদের ঘাড় মটকে খেয়ে নেন। এ সময় সংগঠনের তহবিলে টাকা দেয়ার জন্য এমপির কাছে দাবি জানান শিক্ষকরা।

এমপি প্রশ্ন করেন, এক লাখ টাকা? একজন শিক্ষক বলেন, গতবার তিন লাখ টাকা দিতে চেয়ে এমপি ভুলে গেছেন। প্রতি উত্তরে এমপি বলেন, নির্বাচনের কারণে সেটা পরিনি। বকেয়া তিন লাখ এবার পরিশোধ করে দিব। তখন শিক্ষকরা তাদের তহবিলে এমপির কাছে ছয় লাখ টাকা দাবি করেন।

এ সময় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যানকে (প্রার্থীকে) জিতিয়ে দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে নিব, আপনি শুধু ঘোষণা দিয়ে দেন। কি আপনারা পারবেন? তখন শিক্ষকরা একটু করতালি দেন।

আগামী ১০ মার্চ অনুষ্ঠেয় গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম।

আর মনোনয়ন না পেয়ে ‘বিদ্রোহী’ হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. বদিউজ্জামান।

এদিকে রাজশাহী নগরীর সীমান্ত নোঙরে শিক্ষকদের এই মিলনমেলাস্থলে জাহাঙ্গীর আলমের পোস্টার লাগানো একটি প্রাইভেটকার দেখা যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বদিউজ্জামান বলেন, শিক্ষকরা নির্বাচনে প্রিসাইডিং এবং সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তাই পরিকল্পিতভাবে সমিতির নামে শিক্ষকদের নিয়ে পিকনিক-সমাবেশ করা হয়েছে। আগামী ১০ তারিখের নির্বাচনকে প্রভাবিত ও কারচুপি করার উদ্দেশ্যেই এই আয়োজন।

তিনি বলেন, এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর নির্বাচনী এলাকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তিনি শিক্ষকদের এলাকার বাইরে ডেকে তাদের সঙ্গে আঁতাত করতে চাইছেন। তাদের উৎকোচ দিয়ে উপজেলা নির্বাচনকে কলুষিত করতে চাইছেন।

গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, নির্বাচনে এসব কলেজ শিক্ষকরা প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এই সমিতির অধীনে কতজন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা আছেন সেটি খতিয়ে দেখা হবে।

এ বিষয়ে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

Bootstrap Image Preview