Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সাশ্রয়ী দামে বিদ্যুৎ দিতে দেশীয় কয়লায় নজর দিতে হবে: নসরুল হামিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২ মার্চ ২০১৯, ১০:৪০ PM
আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯, ০১:৩৭ PM

bdmorning Image Preview


‘সাশ্রয়ী দামে বিদ্যুৎ দিতে হলে নিজেদের কয়লার দিকে নজর দিতে হবে। আগামীতে দেশের জ্বালানি পুরোপুরি আমদানিনির্ভর হচ্ছে৷ যেসব বড় বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র আসছে, সেগুলো আমদানি করা কয়লা ও গ্যাসে চালাতে হবে৷ এতে খরচও বেশি হবে।’ এমনই বলছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।

শনিবার (২ মার্চ) ঢাকা-চাঁদপুর নৌবিহারে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এফইআরবি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এফইআরবি’র চেয়ারম্যান অরুণ কর্মকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক সদরুল হাসান। এসময় এ সংগঠনের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাগরে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম এখনই গ্রহণ করা উচিত। ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্তে মাল্টি ক্লায়েন্ট সার্ভের কাজ আপাতত বন্ধ, এটা না হলে বিদেশি কোম্পানি আসতে চাইবে না। জরিপ করে যদি সম্ভাবনার দিকগুলো দেখানো যায়, তখন বিদেশি কোম্পানি আগ্রহী হবে। এটা না করতে পারলে জ্বালানি খাত পিছিয়ে পড়বে।

নসরুল হামিদ বিপু বলেন, ‘আমদানি কয়লার দর দুইশ’ ডলারের বেশি হয়ে থাকে। সেখানে দেশীয় কয়লা ১২০ ডলারের মধ্যে পাওয়া সম্ভব। বালাসীঘাট ব্যবহার করে সেখানে আরও একটি রেললাইন বসিয়ে উত্তরের কয়লা দক্ষিণে নিতে পারি। নদী ড্রেজিংয়ের জন্য একটি বরাদ্দ রাখলেও খরচ বেশি পড়বে না। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। ভবিষ্যতে কয়লায় কার্বন ট্যাক্স বসতে পারে, এটাও মাথায় রাখতে হচ্ছে। তবে দেশীয় কয়লা উত্তোলনের ক্ষেত্রে কৃষি জমি, পরিবেশ, স্থানীয় অধিবাসীদের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।’

তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘৮ ডলার দিয়ে কিনলেও ৭ সেন্টের মতো পড়ে। এরচেয়ে বেশি লাগছে ভারত থেকে কেনা বিদ্যুতে। তাই নিজেরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে ভালো। তবে সরকার চিন্তিত উদ্বৃত বিদ্যুৎ নিয়ে। উপযুক্ত ক্রেতা তৈরি না হলে বিদ্যুৎ নিয়ে বসে থাকতে হবে।’

গ্যাসের অবৈধ সংযোগ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘৩০ কোটি ঘনফুট এলএনজি ব্যবহার করছে চট্টগ্রাম। ঢাকায় আসছে ১৫ কোটি ঘনফুট। কিন্তু এর কোনও হিসাব মিলছে না। পুরোনো পাইপলাইনের কারণে হয় সিস্টেম লস হচ্ছে, নাহয় চুরি হচ্ছে৷ ঢাকা শহরের সব পাইপলাইন পরিবর্তন করা হবে। এতে সব ধরা পড়বে। আর পাইপগুলো অনেক পুরনো এবং ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ‘২০২৩ সালের দিকে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উৎপাদনে আসবে। ব্যয়বহুল তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। তখন বিদ্যুতের দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে। তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১০-১২ শতাংশ উৎপাদিত হবে।’

গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ধীরগতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সাগরে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম এখনই গ্রহণ করা উচিত। ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্তে মাল্টি ক্লায়েন্ট সার্ভের কাজ আপাতত বন্ধ, এটা না হলে বিদেশি কোম্পানি আসতে চাইবে না। জরিপ করে যদি সম্ভাবনার দিকগুলো দেখানো যায়, তখন বিদেশি কোম্পানি আগ্রহী হবে। এটা না করতে পারলে জ্বালানি খাত পিছিয়ে পড়বে।’

স্থলভাগে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে দুর্বলতার জন্য জ্বালানি বিভাগকে দায়ী করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের দক্ষতার অভাব রয়েছে। ত্রিমাত্রিক জরিপের তথ্যে সমস্যা রয়েছে৷ কূপের নির্দিষ্ট অবস্থান চিহ্নিত করা যাচ্ছে না৷ ১০৮টি কূপ খননের পরিকল্পনা আবার পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’

সিএনজি সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ থেকে পুরান ঢাকার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা অবশ্যই বিপদজনক। সিস্টেমে আনতে না পারলে এটা একটি বোম। এখনই আমরা এটা বন্ধ করে দেবো; এটিকে রেগুলেট করতে হবে।’

বিদ্যুতের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন বিষয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে ৮০-১২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়বে। এই বিনিয়োগ আমাদের জন্য কোনও সমস্যা নয়। মধ্যপ্রাচ্য থেকে এখন অনেক বড় বড় বিনিয়োগের প্রস্তাব আসছে।’

Bootstrap Image Preview