Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৪ শনিবার, মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বানরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ রামপুরবাসী, অভয়ারণ্য চায় এলাকাবাসী

বাকি বিল্লাহ, মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ০১ মার্চ ২০১৯, ১০:১২ PM
আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৯, ১০:১২ PM

bdmorning Image Preview


নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত খিদিরপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রাম। গ্রামে প্রায় দেড়শ' বছর ধরে একঝাঁক বানরের বসবাস। দিন দিন বিস্তৃত বন-জঙ্গল ক্ষীণ হয়ে আসার কারণে এদের প্রাকৃতিক খাবার উৎস কমে আসছে। বাধ্য হয়ে তাই বানরগুলো ফসলের জামি আর বসত বাড়িতে হানা দিচ্ছে। শুধু বাড়ি-ঘর নয় পথচারীদের হাত থেকেও অনেক সময় খাবার ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটছে।

দিনে দিনে এই বানরগুলোর অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামবাসী দ্রুত সরকারি কিংবা বেসরকারি উদ্যোগে বানরের বসবাস উপযোগী অভয়ারণ্য তৈরি করে বানর রক্ষার দাবি জানিয়েছেন।

গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মনোহরদী উপজেলার সিমান্তবর্তী একটি গ্রামের নাম রামপুর। গ্রামটির বেশির ভাগ অংশ বন-জঙ্গলে ঘেরা। যুগ যুগ ধরে এখানে মানুষের সাথে মিলে মিশে বানরের বসবাস।

অত্র এলাকায় বানরে আবির্ভাব নিয়ে লোকমুখে শোনা যায়, প্রায় দেড়’শ বছর পূর্বে রামপুর ভূমি অফিসের জৈনক এক তহশিলদার শখের বসে একটি পুরুষ বানর পুষতেন। কয়েক বছর পর তিনি অন্যত্র বদলি হয়ে গেলে তার বানরটি কর্মস্থলে রেখে যান। পরবর্তীতে অপর এক তহশিলদার এসে একটি স্ত্রী বানর এনে লালন পালন করে। এক বছর পর ঐ তহশিলদার পুরুষ এবং স্ত্রী বানর দুটি গ্রামের গহিন জঙ্গলে ছেড়ে দেন। সেই থেকে পর্যাক্রমে বানরের বংশ বৃদ্ধি পেয়ে রামপুর গ্রামে আজ বানরের সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার হাজার।

তবে দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ার ফলে এলাকাবসী তাদের প্রয়োজনে বন জঙ্গল উজাড় করা শুরু করেছে। ফলে বিপাকে পড়ে এই বানর সমাজ। খাবারের অভাবে অনেকটা বাধ্য হয়ে তাই বানরগুলো হানা দিচ্ছে এখানকার ফসলের জামি এবং মানুষের বসত বাড়িতে।

রামপুর গ্রামের বাসিন্দা জিতেন্দ্র কুমার বলেন, এই গ্রামে প্রায় ১৫-২০টি বানরের দল আছে। প্রদিটি দলেই প্রায় দুই শতাধিক বানর রয়েছে। খাবারের অভাবে বানরগুলো দলবদ্ধভাবে বিভিন্ন জায়গায় আক্রমণ করে। না পেরে আমরা এদের অত্যাচার সহ্য করছি।

কৃষক মন্টু সাহা বলেন, আমাদের রামপুর গ্রামের ৬০ শতাংশ মানুষ পান চাষ করে। বানরগুলো প্রতিনিয়ত পানের বরজে আক্রমণ করে বরজের অনেক ক্ষতি করে। তাদের আক্রমণ থেকে বরজ রক্ষা করার জন্য সবসময় বরজ পাহারা দিতে হয়। এমনকি এদের অত্যাচারে গাছের ফল থেকে শুরু করে ঘরের ভেতর খাবার রাখা যায় না। সুযোগ পেলেই ঘরের ভেতর প্রকেশ করে খাবার নিয়ে যায়।

দুষ্ট এ বানরেগুলো দেখার জন্য প্রাতিদিন বিভিন্নস্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসেন। সাথে নিয়ে আসেন মুড়ি, পাউরুটি ও কলাসহ বিভিন্ন ধরণের শুকনো খাবার। তাই সরকারি বেসরকারি উদ্যোগ নিয়ে অত্র এলাকাকে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করেন এই গ্রামের বাসিন্দা সমর দাস।

খিদিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জামিল বলেন, রামপুর গ্রামের বানরের ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। বানরগুলোর জন্য নিরাপদ বসবাস এবং খাবারের ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবি। সরাকারি-বেসরকারি সংস্থা এগিয়ে এলে এই এলাকাকে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।

Bootstrap Image Preview