Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২২ বুধবার, মে ২০২৪ | ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিজিবির আহ্বানে অপরাধ ছেড়ে আলোর পথে ফিরল ২৪ জন

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:৩৬ PM
আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১০:৩৬ PM

bdmorning Image Preview


সীমান্তের এপার থেকে ওপারে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান, কাঠ, বাঁশ ও সুপারি চুরিসহ নানা ছোট-খাটো সীমান্ত অপরাধ ছেড়ে ২৪ ব্যক্তি আলোর পথে ফিরলেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মানুষগুলোকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়। অন্ধকার জগৎ থেকে ফিরে আসা ওই ২৪ ব্যক্তি নতুন করে আর কোনো অপরাধে জড়াবেন না বলে আনুষ্ঠানিক অঙ্গীকার করেছেন।

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জেলার সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সীমান্তবর্তী বাঁশতলা এলাকায় বিজিবির পক্ষ থেকে আলোকিত সীমান্ত গড়ে তোলার লক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

‘আলোর পথে’ নামে অনুষ্ঠানে ওই ২৪ জনকে ফুল দিয়ে বরণ করেন বিজিবির সুনামগঞ্জের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাকসুদুল আলম।

বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ৭ জানুয়ারি দোয়ারাবাজার উপজেলার বাঁশতলা গ্রামের নুরু মিয়া (৩৫) নামের এক ব্যক্তি সীমান্তের ওপারে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে সুপারি চুরি করতে গিয়ে সেখানকার খাঁসিয়াদের গুলিতে নিহত হন। এক সপ্তাহ পর ভারতীয় পুলিশ বাংলাদেশের পুলিশের নিকট নুরু মিয়ার লাশ হস্তান্তর করে।

এরপরই বিজিবি ওই সীমান্ত এলাকায় যারা অতীতের বিভিন্ন সময়ে সীমান্ত অপরাধের সঙ্গে সম্পৃুক্ত ছিলেন তাদেরকে অপরাধ জগৎ থেকে ফিরিয়ে আনতে নানাভাবে আলোচনা শুরু করে। প্রথমে এমন ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করা হয়। এরপর তাদের সঙ্গে আলোচনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয় স্থানীয় জনপ্রতিতিনিধিদের। এলাকার ২৪ ব্যক্তি অপরাধমূলক কাজ ছেড়ে দিতে রাজি হন। এরই ধারাবাহিকতায় বাঁশতলা এলাকায় বিজিবি আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেন।

উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. খুরশেদ আলম  বলেন, আমরা বিষয়টি বোঝানোর পর মানুষগুলো অপরাধমূলক কাজ ছেড়ে দিতে রাজি হন। এ রকম একটি ভালো কাজ করতে পেরে আমাদেরও ভালো লাগছে।

উপজেলার বাঁশতলা গ্রামের বাসিন্দা আসকর আলী বলেন, আমার একটা চায়ের দোকান ছিল। পুঁজির অভাবে সেটি বন্ধ। অভাবের কারণেই এসব করতাম। এখন স্যার (বিজিবির অধিনায়ক) বলছেন পুঁজি দেবেন। আমরা সবাই বলেছি, আর কোনো অপরাধ করব না। এখন থেকে ভালো পথে চলব।

অনুষ্ঠানে বিজিবির পক্ষ থেকে এই ২৪ জনকে আর্থিক সহায়তা, রেশন, কর্মসংস্থানসহ নানাভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়।

বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল মাকসুদুল আলম বুধবার বলেন, তারা দু'জনকে বিজিবি ক্যাম্পে পাচক হিসেবে চাকরি দেবেন। এক জনকে চায়ের দোকান দেওয়ার জন্য অর্থের এবং অন্যদের প্রাথমিকভাবে রেশন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবেন। একই সঙ্গে ওই এলাকার নির্মাণাধীন সীমান্ত হাটে তাদের কাজ দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে সুপারিশ করা হবে।

প্রসঙ্গত, সারা দেশের সীমান্ত এলাকাগুলোর মধ্যে সীমান্ত অপরাধ ও চোরাচালান সহ নানা অপতৎরতা বন্ধে ২৮-বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ'র (বিজিবি) সুনামগঞ্জের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. মাকসুদুল আলম এই প্রথম বারের মত আলোকিত সীমান্ত নামক অনুষ্ঠান আয়োজন করেন।

ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. মাকসুদুল আলম আরো বলেন, পর্যায়ক্রমে জেলার পুরো সীমান্ত এলাকায় এ ধরণের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সীমান্ত অপরাধ প্রবণতা কমিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

Bootstrap Image Preview