নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি মাদ্রাসায় দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৫ শিশু ছাত্রকে বলৎকারের অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টার দিকে এ যৌন নির্যাতনের ঘটনা ফাঁস হয়েছে।
জানা যায়, মাদ্রাসার দুই শিক্ষক নোয়াখালীর বাসিন্দা ক্বারী লোকমান হোসেন ও যশোর জেলার বাসিন্দা আজগর আলী গত দুই থেকে আড়াই মাস যাবত ৯ থেকে ১২ বছর বয়সের ৫ জন ছাত্রকে কৌশলে রাতে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক বলাৎকার করে। এসময় তারা আরো কয়েকজন ছাত্রকে বলাৎকার করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়।
ঘটনার পরই অভিযুক্তরা ঐ ছাত্রদেরকে বলাৎকারের বিষয়টি কাউকে জানাতে নিষেধ করেন। এ ঘটনা জানালে তাদেরকে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয়। শিশু ছাত্ররা ভয়ে অভিভাবকের কাছে প্রকাশ করার সাহস না পেলেও সহপাঠিদের কাছে বলাবলি করে এবং অন্যান্য শিক্ষকদের কাছে জানায়। তবে অন্যান্য শিক্ষকরা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। নির্যাতিত ছাত্রদের মধ্যে ১২ বছরের একজন ছাত্র গুরুত্র অসুস্থ্ হয়ে পড়লে তাকে পারিবারিকভাবে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
নির্যাতিত ছাত্রদের অভিভাবকদের অভিযোগ, মঙ্গলবার সকালে ওই ছাত্রদের অভিভাবকরা মাদ্রাসায় গিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে বিচার দাবি করে হৈচৈ শুরু করে। তবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিরা আইনের শরণাপন্ন না হয়ে উল্টো সালিশি বৈঠক করে প্রতি শিশুকে ৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে।
এ ব্যাপারে শাহজাহান মাদবর বলেন, সামাজিক মান সম্মানের কথা চিন্তা করে আমরা এ বিষয়টি সমাধানের জন্য বসেছিলাম। কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক থাকায় আগামী ১০ তারিখ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই দিনই আলোচনায় বসে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান করা হবে।
মাদ্রাসার দুই সহকারী শিক্ষক হাফেজ আব্দুল আলীম ও ক্বারী মো: জুয়েলের বলেন , আমরা ঐ ছাত্রদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছি। তারা আমাদের কাছে সব বর্ণনা করেছে। আজ সকালে আমাদের বড় হুজুর মাদ্রাসার প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধিরগঞ্জ থানা জাতীয় পার্টির সভাপতি কাজী মো. মহসিন, তার ছোট ভাই স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা কাজী ওয়াসিম ও শাহজাহান মাদবরসহ এলাকার আরো কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে মাদ্রাসায় এ বিষয়ে মিটিং করেছেন। যেহেতু অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক রয়েছেন, সে কারণে আগামী ১০ তারিখ বিচারের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শাহীন শাহ্ পারভেজ বলেন, এ ঘটনাটি আমার জানা নেই। এমনকি কেউ অভিযোগও করেনি। আমি বিষয়টির খোঁজ খবর নিচ্ছি। সত্যতা পেলে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।