Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

প্রধান শিক্ষকের খামখেয়ালি, রাকিবুলের শিক্ষা জীবন থেকে হারিয়ে গেল দু'বছর 

জাহিদুল ইসলাম, পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৩:৫৮ PM
আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৩:৫৯ PM

bdmorning Image Preview


পটুয়াখালীর বাউফলে কালিশুরী এস,এম ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষকের খাম খেয়ালীতে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করা হল না ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলামের। এতে করে অনিশ্চিত শিক্ষা জীবনের মুখোমুখি হয়ে পড়েছেন ওই শিক্ষার্থী। 

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে এক লিখিত অভিযোগে শিক্ষার্থী রাবিকুল জানায়, কালিশুরী এস,এম ইনস্টিটিউশন থেকে ২০১৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন। ইংরেজী, সাধারণ গনিত এবং ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ে অকৃতকার্য হয়ে ২০১৯ সালে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের জন্য যথারীতি ফরম পূরণ করে। কিন্তু ৪ ফেব্রুয়ারি তাকে সরবারহ করা প্রবেশপত্রে পিতার নাম মিজানুর রহমানের পরিবর্তে ইছাহাক এবং মায়ের নাম মরিয়ম বেগমের পরিবর্তে আনিচা বেগম উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি প্রধান শিক্ষক মাহাবুবুর রহমানকে অবহিত করা হয়। তিনি প্রবেশপত্রের মূলকপি রেখে দিয়ে ভুল সংশোধনের জন্য ৬শ' টাকা নিয়ে নেন। কিন্তু কোন প্রকার সংশোধন না করেই ত্রুটিপূর্ণ ওই প্রবেশপত্র দিয়েই শিক্ষার্থী রাকিবুলকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে বলেন প্রধান শিক্ষক মাহাবুব। ইংরেজী ১ম পত্রের পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করলেও ইংরেজী দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে গেলে উত্তরপত্র কেড়ে নিয়ে রাকিবুলকে হল থেকে বের করে দেন তিনি। আর এ কারণে রাকিবুলের জীবন থেকে হারিয়ে গেল দু'বছর।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান জানান, অফিস সহকারী কম্পিউটারের কাজ না জানায় শিক্ষক সুভাস চন্দ্রকে দিয়ে ফরম পূরণের কাজ করানো হয়েছে। এটি কম্পিউটারের ভুল। অফিস সহকারী লুৎফর রহমান বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, তাকে উপেক্ষা করে, না জানিয়ে অনলাইনে ফরম পূরণের কাজ করানো হয়েছে। অপর প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক মাহাবুব বলেন, আগামীতে রাকিবুলের ফরম পূরণসহ লেখাপড়ার সব দায়-দায়িত্ব আমি নিব।

রাকিবুলে পিতা মিজানুর রহমান জানান, রাবিকুল এখন পড়তে চাচ্ছে না। দুটি বছর আমার ছেলের জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছে এর দায়ভার কে নেবে?

এদিকে ক্ষুদ্ধ বেশ কয়েকজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রধান শিক্ষককে ফরম পূরণের টাকা দেয়া পরেও ২০১৪ সালের পরীক্ষায় বিকাশ নামে এক ছাত্র অংশ নিতে না পেরে এখন চায়ের দোকান দিচ্ছে। তার খামখেয়ালির কারণে দুই ছাত্রীর আত্মহত্যা করতে গিয়ে বেঁচে গেছে। এমন অসংখ্য ঘটনা রয়েছে বলে তারা জানান।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, প্রধান শিক্ষক মাহাবুর রহমান বিদ্যালয় সংশ্লিস্ট দায়িত্বশীলসহ পরিচালনা পর্ষদকে উপেক্ষা করে নিজ পছন্দ লোকজন নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা করেন।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি কালিশুরী ডিগ্রি করেজের অধ্যক্ষ ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. নেছার উদ্দিন শিকদার বলেন, প্রবেশপত্রের ভুল সংশোধন করার সুযোগ ছিল। কাজেই রাকিবুলকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে দেয়া উচিত ছিল। 

Bootstrap Image Preview