বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ূরপঙ্খী’ ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় নিহত পলাশ আহমেদের সাবেক স্ত্রী চিত্রনায়িকা শিমলা। গেলো চার মাস আগেই পলাশকে ডিভোর্স দেন নায়িকা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, পলাশের বাড়িতে ১ মাস তার স্ত্রী হিসেবে বসবাস করেছিলেন শিমলা। এছাড়াও স্ত্রী হিসেবে পলাশের বাড়িতে তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল।
পলাশের পরিবার বলছে শিমলা তার দ্বিতীয় স্ত্রী। এই হিসেবেই সে বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। পলাশের প্রথম স্ত্রী বগুড়ায় রয়েছেন। ওই ঘরে এক পুত্র সন্তানও রয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া সদর উপজেলার সাতমাথা ভাইপাগলা মাজারের পাশে পলাশ ২০১৪ সালে মেঘলা নামে একজনকে বিয়ে করেন। তাদের আড়াই বছর বয়সী আয়ান নামে একটি সন্তান আছে। মেঘলা বগুড়ার স্থানীয় নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপালের মেয়ে। তার বাবা বগুড়ায় আইন পেশায় জড়িত।
পলাশের ফেসবুকে শিমলাকে নিজের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর তিনি লিখেছেন, 'এই হচ্ছে আমার বউ, যে আমার হাজারো ভুলের মাঝে আমাকে সহ্য করে পার করে দিলো একটি বছর। দোয়া করবেন যাতে সারাটা জীবন এই পাগলীটা আর আমি এক সাথে থেকে যেন মরতে পারি। বউ অনেক ভালোবাসি তোমায় আর কষ্ট দেবো না, শুভ বিবাহ বার্ষিকী আদরের পুতুল বউ আমার।'
পলাশের বাবা ১৯৯০ সাল থেকে বিদেশে থাকতেন। প্রথমে কুয়েত এবং পরে সৌদি আরবে ছিলেন তিনি। প্রবাসী বাবার দেওয়া টাকা-পয়সা নিয়ে উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন করতেন পলাশ। এর মধ্যে নাচগান থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র শিল্পে জড়ান তিনি। কয়েকটি শর্টফিল্মও তৈরি করেন। একটা সময় বাসা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন পলাশ। বাড়িতে তেমন যেতেন না। মাঝে মধ্যে টাকার প্রয়োজন হলে বাড়ি যেতেন।
পলাশের বাবা পিয়ার জাহান বলেন, ‘গত ২০-২৫ দিন আগে বাড়িতে আসে পলাশ। সাধারণত বাড়িতে সে এত দিন থাকতো না। গত ২০-২৫ দিনে অনেকটা পাল্টে যায় সে। মসজিদে যাওয়া-আসা করে, এমনকি আজানও দিয়েছে।’
পলাশ ও শিমলার বিয়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এক-দেড় মাসের ব্যবধানে দু’বার আসে পলাশ ও সিমলা। দ্বিতীয়বার এসে পলাশ বলেছে, আমি সিমলাকে বিয়ে করেছি। সিমলাও বিষয়টি স্বীকার করেছে। আমি তখন সিমলাকে বলেছি, তোমার সঙ্গে বয়সের এত ব্যবধান, কীভাবে আমার ছেলেটাকে বিয়ে করেছো? যা হোক বিয়ে যেহেতু করেই ফেলেছো, আমার ছেলেটা যাতে ভালো হয়ে যায় একটু খেয়াল রেখো।'
বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনার বিষয়ে প্রথমে কিছুই জানতেন না পলাশের বাবা-মা। পরবর্তীতে তারা ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন। সোনারগাঁও থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ রাতে তাদের বাসায় এসে একটি ছবি দেখিয়ে জানতে চান, এটা আপনার ছেলে কিনা। পরে দুবাই যাওয়ার বিষয়টি এবং ছবি মিলে যাওয়ায় পলাশের পরিচয় নিশ্চিত হন তারা।