কারাগারে বন্দী নারীদের জন্য দেয়া হচ্ছে নতুন সুবিধা। এখানে বলা হয়েছে, এক থেকে ১০ বছর মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দি নারীর এই বিশেষ সুবিধার আওতায় আনা হচ্ছে। তাদের জন্য কারা অভ্যন্তরে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাদের যে কাজে লাগানো হবে তা থেকে যা আয় হবে তা দিয়ে তাদের শিশুসন্তানদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করা হবে।
তাছাড়া সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি যখন জেল থেকে মুক্তি পাবেন তখন যেন ব্যবসা-বাণিজ্য করে খেতে পারেন সে জন্য তাকে ফান্ড দেওয়া হবে।
এক থেকে ১০ বছর মেয়াদে যারা সাজা খাটছেন, তাদের দিয়ে ব্লক বা বুটিক, সুচিশিল্প, হেয়ারকাটিং, বাঁশ ও বেতের কাজ, দর্জি বিজ্ঞান, কাপড়ের ফুল তৈরি, বিউটিফিকেশন, নিটওয়্যারিং, এমব্রয়ডারি, কারচুপি ও জরি চুমকি, কম্পিউটার অপারেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন এবং রন্ধনশিল্পসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলা হবে। উৎপাদিত পণ্য বাজারে বিক্রি করে তা সমাজসেবা অধিদপ্তরের নির্দিষ্ট ফান্ডে জমা রাখা হবে।
এ বিষয়ে সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক গাজী নূরুল কবির বলেন, যেসব মহিলার এক থেকে ১০ বছর মেয়াদে কারাদ- হয়েছে তাদের এবং জেলের বাইরে থাকা সন্তানদের কল্যাণে আমরা একটি কর্মসূচি এরপর হাতে নিয়েছি। তাদের বিভিন্ন ট্রেডের ওপর প্রশিক্ষণ দিয়ে পণ্যদ্রব্য উৎপাদন করে তা বিক্রি করা হবে। বিক্রির অর্থ তাদের শিশুসন্তানদের ভরণপোষণের কাজে ব্যয় করা হবে।
তাছাড়া তাদের সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তারা যাতে আত্মকর্মসংস্থান করতে পারে সে জন্য ফান্ড দেওয়া হবে। নিজের পায়ে নিজে দাঁড়াতে পারেন সেজন্যই এ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আয়ের পাই টু পাই তাদের কল্যাণে ব্যয় করা হবে। সে লক্ষ্যে একটা নীতিমালা তৈরি করছি। একই সঙ্গে তাদের সংশোধনের জন্য কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নীতিমালার একটা খসড়া তৈরি করে অনুমোদনের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, বিভিন্ন ব্যক্তির সহায়তায় বিশেষ সুবিধার আওতায় নারীদের জন্য উপর্যুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিশেষ সুবিধার আওতাধীন নারীদের কল্যাণ ও মঙ্গলের জন্য সামাজিক চিত্তবিনোদন এবং শিক্ষামূলক সুযোগ-সুবিধা লাভে সহায়তার ব্যবস্থা থাকবে। বিভিন্ন শাস্তিমূলক অপরাধ থেকে বিরত থাকতে নারীদের উদ্বুদ্ধ করা হবে।
খসড়া নীতিমালার সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের দায়িত্ব ও কর্তব্য অংশে বলা হয়েছে, তিনি কারাগারে নিয়মিত তার আওতাধীন ক্ষেত্রমতে কারাগার বা উপকারাগারে অবস্থানরত কয়েদিদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখবেন। কারাগারভিত্তিক এক বা একাধিক প্রবেশন অফিসার নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রবেশন অফিসার হিসেবে যথাসম্ভব নারী প্রবেশন অফিসার নিয়োগ করা হবে। এক থেকে ১০ বছর মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত নারী কয়েদিদের তালিকা প্রস্তুত করে তা নিয়মিত হালনাগাদ করবেন।
বিশেষ সুবিধার আওতায় আনা নারী কয়েদিদের জন্য পৃথক নথি সংরক্ষণ করতে হবে। বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত নারী কয়েদি যে জেলায় অবস্থান করবে সেই জেলার অথবা উপজেলায় অবস্থান করলে উপজেলা প্রবেশন অফিসার তার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করবেন। বিশেষ সুবিধার আওতায় আসা নারীকে প্রথমে দুই মাসে কমপক্ষে ১৫ দিনে একবার পরবর্তীকালে দুই মাসে একবার পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। প্রয়োজনীয় পরামর্শ, নির্দেশনা প্রদান এবং তা বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত নারীর নথিতে লেখা হবে।