১৯৮৫ সাল থেকে চুড়িহাট্টায় ওয়াহিদ মার্কেটের সামনের একটি মার্কেটের নিচতলায় ডেকোরেটরের ব্যবসা করতেন শামছুল হক। স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, ছেলে মাহবুব, মেয়ে পারভীন ও নিপাকে নিয়ে কেরানীগঞ্জে থাকতেন তিনি। তার বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার রুদ্রগাও গ্রামে।
পুরান ঢাকার চকবাজারে যখন আগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, ঠিক তখনই খবর পেয়ে সেখানকার ডেকোরেটর ব্যবসায়ী শামছুল হক বেপারীকে ফোন করছিল তার পরিবার। রিং হচ্ছিল কিন্তু কেউ রিসিভ করেনি। করবেও বা কী করে। ওই সময় তো আগুনে জ্বলছিল তার তরতাজা দেহ।
চুড়িহাট্টা মসজিদের সামনে আল মদিনা ডেকোরেটর মালিক শামছুল হক বেপারী (৬২) বুধবার রাতে বিয়ের একটি অনুষ্ঠানের জন্য কাপড় প্রস্তুত করছিলেন তার দুই কর্মীকে নিয়ে। কিন্তু ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শামছুল হকসহ তার দুই কর্মী পুড়ে অঙ্গার হয়ে যান।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া ওই দোকান থেকে তিন জনের লাশ উদ্ধার করে।
শামছুল হক বেপারী দীর্ঘদিনের সহচর কিরণ পাটওয়ারী জানান, মাঝে কয়েক বছর বিরতি দিয়ে ১৯৮৫ সাল থেকে চুড়িহাট্টা মসজিদের সামনে ডেকোরেটরের ব্যবসা করছেন শামছুল হক। ১ ছেলে ও ২ মেয়ের জনক শামছুল হক ফরিদগঞ্জ পৌর সভার ৪নং ওয়ার্ডের রুদ্রগ্রাও গ্রামের আলিমুদ্দিন বেপারী বাড়ির মৃত চান মিয়া বেপারীর ছেলে।
শামছুল হকের ভাতিজা রফিকুল ইসলাম জানান, বুধবার রাতে চুড়িহাট্টা মসজিদের সামনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর পরিবারের লোকজন তার মোবাইল ফোনে কল করলেও কেউ রিসিভ করেনি। এক পর্যায়ে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে গিয়ে শামছুল হকের মুখের দাড়ি ও হাতে থাকা একটি ঘড়ি দেখে শামছুল হককে শনাক্ত করে তার ছেলে মাহবুব ও ভাতিজা কবির।
পরে শুক্রবার সকালে রুদ্রগাও ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে গ্রামের আলিমুদ্দিন বেপারী বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে তার দীর্ঘদিনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সম্পূর্ণ মালামাল পুড়ে যাওয়ায় প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে জানায় তার পরিবার।