কেমিক্যাল নয়, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে পুরান ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন দগ্ধদের দেখতে এসে এ কথা জানান শিল্পমন্ত্রী। তার দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে কেমিক্যালের গোডাউনের কোনো সম্পর্ক নেই।
বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, গতরাতে সেখানে যা ঘটেছে তার সঙ্গে রাসায়নিক পদার্থের কোনো সম্পর্ক নেই। সেখানে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটেছিল।
ভয়াবহ এই আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এই এলাকায় গ্যাসের স্বল্পতা থাকায় সিলিন্ডারে করে এলপি গ্যাস দিয়ে রেস্টুরেন্ট ও বাসা বাড়িতে রান্নার চালানো হয়। ঘটনার সময় সেখানে গ্যাসের সিলিন্ডার নেওয়া হচ্ছিল। ওই সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে দুর্ভাগ্যবশত একটি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারে আগুন লাগে। এতে ট্রান্সফরমারটিও বিস্ফোরিত হয়ে পুরো এলাকা অন্ধাকার হয়ে যায়।
আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবন সম্পর্কে শিল্পমন্ত্রী বলেন, সেখানে কেমিক্যালের কোনো গোডাউন নেই, পারফিউম ও কসমেটিক সামগ্রীর গোডাউন আছে। আমি নিজে এটা দেখলাম। কেমিক্যালের সঙ্গে এই ঘটনার সম্পর্ক নেই।
নিমতলি ট্রাজেডির প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, ২০১০ সালে কেমিক্যাল থেকে আগুনের ঘটনা ঘটেছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেটাকে সুন্দরভাবে মোকাবিলা করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের প্রক্রিয়াও চলছে।
সেই সঙ্গে তিনি বলেন, অবিলম্বে পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক সামগ্রীর ব্যবসা কেরাণীগঞ্জে স্থানান্তর করা হবে।
নুরুল মজিদ বলেন, ‘আমাদের প্রজেক্ট পাস হয়ে গেছে একনেকে। উই আর ওয়েটিং টু শিফট তাদের। দূরে তারা যেতে চায় না। পৈতৃকভাবে ব্যবসাটা তারা করে। তাদের ছেলে-মেয়ে নিয়ে তারা যেতে চায় না। কাছাকাছি কোনো প্লেসে আমাকে যেতে হবে। ওটা প্রক্রিয়াধীন আমি বলবো না এটা প্রায় শেষ পর্যায়ে।’
এর মধেই আবার তো একটা দুর্ঘটনা ঘটলো, এ বিষয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘তো, এই শহর ভেঙে আমাকে গুড়িয়ে দিতে হবে। কেমিক্যাল আর এটা কিন্তু এক সঙ্গে মিলিয়ে ফেলবেন না। এটা একটা এক্সিডেন্ট, আমরা এজন্য মর্মাহত।’
প্রসঙ্গত, বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের একটি ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে স্থানীয়রা জানান। পরে তা পাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ রাত ৩টার দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ২০০ কর্মী। তবে ছোট গলি ও পানির স্বল্পতার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রচণ্ড বেগ পেতে হয়।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত ৭০টি লাশ উদ্ধার হয়। এ ছাড়া দগ্ধ হয়েছেন অর্ধশতাধিক।