যৌতুক না দেওয়ায় কোরবানির ছুরি দিয়ে শাহানাজ বেগম (১৮) নামে এক গৃহবধুকে কুপিয়ে হত্যা করেছে স্বামী।
মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাহানাজ পারভিন পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের বৈগ্রামের সাহিদুল সরদারের মেয়ে।
নিহতের বাবা সাহিদুল সরদার বলেন, প্রায় পাঁচ মাস আগে শাহানাজ পারভিনের সঙ্গে মো. সাজুর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুক হিসেবে ২ লাখ টাকা দাবি করে আসছিল সাজুসহ তার পরিবার। এ জন্য শাহানাজ পারভিনকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হতো।
সাহিদুল সরদার আরো বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় তার মেয়ে শাহানাজ পারভিনকে নিয়ে জামাতা সাজু শ্বশুর বাড়িতে এসে এক লাখ টাকা দাবি করেন। কয়েকদিন পর টাকা দেওয়ার কথা বলায় তিনি চারদিন শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করে।
গত মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) পুনরায় টাকা দাবি করেন সাজু। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় রাগ করে বিকেল ৩টায় মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে চলে যান। এরই এক পর্যায়ে একইদিন রাত সোয়া ৯টায় সাজুর বাবা আজিজুল ইসলাম মোবাইল ফোনে জানান তার ছেলে ও ছেলে বউ মারামারি করে গুরুতর জখম হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এ সংবাদ পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নিহত মেয়ে শাহানাজ পারভিনের মরদেহ দেখতে পান বাবা। এ সময় সাজুর বাবা আজিজুল ইসলাম ও বড় ছেলে রাজু হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা বলেন, সাজু তার স্ত্রীকে কোরবানির ছোড়া দিয়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এরপর হত্যার দায় এড়াতে নিজে নিজের পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করে স্ত্রী তাকে ছুরিকাঘাত করেছে এমন প্রচার চালায় তার পরিবার। জনরোষ থেকে বাঁচতে ওই রাতেই সাজুর পরিবার বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ নাসিম হাবিব বলেন, এ ঘটনায় নিহত শাহানাজ পারভিনে বাবা সাহিদুল সরদার বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে চারজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলার ১নং আসামি সাজুকে চিকিৎসারত অবস্থায় আটক করা হয়। পরে তার বাড়ি থেকে ছুরিকাঘাতে ব্যবহৃত কোরবানির ছোড়াসহ রক্তমাখা বিছানা ও চাদর জব্দ করা হয়েছে। মামলা অন্য আসামিদের তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।