খুলনা থেকে পাইকগাছা যাওয়ার একমাত্র রাস্তা তালা উপ শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া সড়কটি। ভিন্ন কোন রাস্তা না থাকায় প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হয় যানজট ফলে প্রায় ঘটতে থাকে সড়ক দুর্ঘটনা। তালাবাসীর অনেক দিনের প্রত্যাশী একটি বাইপাস সড়ক। এতে করে যেমন কমবে যানজট অন্য দিকে মুক্ত হবে সড়ক দুর্ঘটনা।
তালা বাজারের গা ঘেঁষে বয়ে গেছে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কপোতাক্ষ নদ। কালের বিবর্তনে নদটিতে পলি জমে মরা নদে পরিনত হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬১ কোটি ৫৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকা ব্যয়ে কপোতক্ষ নদটি খনন করান। যার কারণে উন্মুক্ত হয় চরের কিছু জমি। চরের জমি উন্মুক্ত হওয়ায় নতুন করে জেগে ওঠে তালাবাসীর বাইপাস স্বপ্নের সড়ক। সড়কটির জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডে একটি কয়েকটি কালভার্ট নির্মাণ করে ১৬ সালে। সড়কটির জন্য আঞ্চলিক ও জাতীয় পত্রিকায় ফলাওভাবে প্রকাশিত হয়।
পত্রিকায় প্রকাশের জের ধরে সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ জাকির হোসেন সরেজমিন তদন্ত করে বাইপাস সড়ক তৈরীর ঘোষণা দেন। সেই স্বপ্নের বাইপাস সড়কের পরিবর্তে একদিকে চলছে দোকান বরাদ্ধ অন্য দিকে চরদখল করে পাকাঘর নির্মাণের পালা। ফলে তালাবাসীর সেই বাইপাস সড়কের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যেতে বসেছে।
তদন্তে জানা যায়, তালা বাজারের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া সড়কটির সৃষ্ট যানজটের ফলে প্রতিনিয়ত ঘটতে থাকে সড়ক দুর্ঘটনা। যার দৃষ্টান্ত গতবছর সড়ক দুর্ঘটনায় মটরসাইকেল চালক সহ দুই জন নিহত হয়। এছাড়া এ বছরেও গত ১৮ জানুয়ারি তালা সেটেলমেন্ট অফিসের নৈশী প্রহরী বাবুলাল পুরাতন থানা মোড়ে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়। এছাড়া প্রতিনিয়ত কোন না কোন ছোট খাটো সড়ক দুর্ঘটনা ঘটতেই আছে। বিকল্প কোন সড়ক ব্যবস্থা না থাকায় এমন ঘটনা যেন তালাবাসীর নিত্য দিনের সঙ্গী হয়ে পড়েছে। বাইপাস সড়ক নির্মাণ করার জায়গা থাকার সত্বেও কেন করা হচ্ছে না তালা বাসীর প্রাণের দাবি বাইপাস সড়কটি। এসব সড়ক দুর্ঘটনায় প্রমান দিচ্ছে বাই পাস সড়কের কতটা প্রয়োজন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, গত কিছুদিন আগে সার্ভেয়ার দ্বারা প্রায় ২শত দোকানের জায়গা বরাদ্ধ দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিটি দোকানের জন্য জায়গা দেওয়া হচ্ছে সোয়া এক শতক করে জমি। যে বরাদ্ধে অর্থ বানিজ্যের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
তালা বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা সহ স্থানীয় লোকজন জানান, তালা বাজার একটি সড়ক থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। অনেক দিন ধরে শুনে আসছি কপোতাক্ষের ধারদিয়ে একটি বাইপাস সড়ক হবে। কিন্তু আজ দেখছি সেখানে জায়গা বরাদ্ধ দেওয়া হচ্ছে। বাইপাস সড়ক হলে তালাবাসীর কাচমাল বেচাকেনা যেমন বাড়বে তেমনি কমবে যানজট, কম ঘটবে সড়ক দুর্ঘটনা।
তালা বাজার বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য মীর জাকির হোসেন জানান, বাই পাস সড়কটি হওয়ার কথা অনেকদিন ধরে শুনছি। কিন্তু হঠাৎ করে দেখছি দোকানপাট বরাদ্দ চলছে। তালা বাজারের সকল ব্যাবসায়ী ও সুশীল সমাজের একটাই দাবি বাইপাস সড়ক করা হোক।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিমেষ বিশ্বাস জানান, অস্থায়ী ভিত্তিতে ১ বছরের জন্য জায়গা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। সরকার বাইপাস সড়ক করলে উচ্ছেদ করে বাই পাস সড়কের জায়গা বের করে দেওয়া হবে।
তালা বাজারের ব্যবসায়ী সুধী সমাজ ও সর্বস্তরের মানুষ খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরের উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষ ও প্রধানমন্ত্রীর অতিদ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।