অবশেষে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে এতিম নাতি ও নানিকে ভিটে বাড়ি ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার তারাব পৌরসভার ঐড়াবো এলাকায় গিয়ে ভিটে বাড়িতে ঝুলানো তালা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয় তাদের। পুলিশ প্রশাসনের এ ধরনের ভালো কাজের জন্য সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।
রূপগঞ্জ থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মোস্তাক আহাম্মেদ জানান, নিয়তি রানী দাস নামের এক বৃদ্ধা ঐড়াবো এলাকায় তার বাবার ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হয়ে এক কাঠা জমিতে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলো দীর্ঘ দিন ধরে। ওই বৃদ্ধার মেয়ের জামাতা মানিক দাস ও মেয়ে শান্তা রানী দাস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এক মাত্র এতিম নাতি মনিষা রানি দাসকে নিয়ে নানি নিয়তি রানি দাস বর্তমানে ওই বাড়িতেই বসবাস করে আসছেন।
গত এক মাস আগে খেলাধুলার সময় নাতি মনিষা রানি দাসের হাতে থাকা একটি বাশের ফালা গিয়ে রিহান নামের অপর এক শিশুর চোখে লাগে। এতে রিহানের ডান চোখ নষ্ট হয়ে যায়। এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ বিচারসালিশের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করে দেয়ার পর নিয়তি রানি দাস জরিমানার টাকা ভিক্ষা ও ধারদেনা করে পরিশোধ করেন। কিন্তু জরিমানার টাকা গ্রহণ না করে নিয়তি রানি দাসের এক কাঠা বাড়িসহ জমি লিখে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে এবং হত্যার পর শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার হুমকি প্রদান করে রিহানের বাবা রাজু মিয়া।
এরপর শনিবার রাতে নাতি-নানিকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে ঘরে তালা বন্ধ করে দেয় রাজুসহ একদল সন্ত্রাসী। এতে সারারাত খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করতে হয়েছে তাদের। পরে রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি খুলে বলেন ভুক্তভোগী নিয়তি রানি দাস। পরে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল হককে অবহিত করার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে এতিম নাতি-নানিকে তালা খুলে ঘরে প্রবেশ করে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হক বলেন, ওই বৃদ্ধ নাতি-নানির সাথে কেউ ঝামেলার চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন অন্যায়কারীকে ছাড় দেয়া হবেনা বলে তিনি উল্লেখ করেন।