Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৯ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ছুটিরদিনে চট্টগ্রামে বইমেলা ছিল জমজমাট ও প্রাণবন্ত

বশির আলমামুন, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১১:৩৪ AM
আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১১:৩৪ AM

bdmorning Image Preview


শুক্রবার ছুটিরদিনেও বেশ জমেছে চট্টগ্রামের অভিন্ন বই মেলা। অন্যান্যদিনের চেয়েও এদিন বই প্রেমি নানা শ্রেণীর পাঠক, লেখক ও প্রকাশকদের ভিড় বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে। বিকাল তিনটার পর থেকেই মেলা প্রাঙ্গনে মানুষের উপচে পড়া ভীড় শুরু হতে থাকে। সে ভীড় থাকে রাত ৯ টা পর্যন্ত। প্রতিটি স্টলেই ছিল পাঠকদের উপচে পড়া ভীড়।

রবিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের কয়েক ঘন্টা আগে থেকেই মেলার স্টলগুলোতে বই প্রেমি মানুষের ভীড় লেগে যায়। নতুন বইয়ের গন্ধে মেলা প্রাঙ্গণে ভিড় করতে শুরু করেন বই প্রেমীরা। স্টলে-স্টলে ঘুরে মলাট উল্টিয়ে দেখছিলেন নতুন বইয়ের। সাথে খবর নিচ্ছিলেন, প্রিয় লেখকের বই কবে আসবে।

বই প্রেমীদের উচ্ছ্বাস, আনন্দে চট্টগ্রামে শুরু হওয়া বইমেলাকে ঘিরে পেয়েছে প্রাণ চাঞ্চল্য। কারণ, এবারই প্রথম অভিন্ন আয়োজনের বইমেলা হচ্ছে চট্টগ্রামে।

নগরীর এম এ আজিজ ষ্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে ১৯ দিনব্যাপী এ বই মেলার আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। বইমেলা বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ এবং চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজ, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো।

উদ্বোধনের প্রথম দিনেই মেলা প্রাঙ্গণে ছিল সাহিত প্রেমিদের ভিড়। উপচে পড়া এই ভিড়ের মধ্যেও খুশি ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। সেই খুশির ঢেউ ছিল প্রকাশক এবং আয়োজকদের চোখে-মুখেও। দ্বিতীয় দিন সোমবারও একই অবস্থা। বিকাল গড়াতে না গড়াতেই মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে মেলা প্রাঙ্গন।

এদিকে শুক্রবার ছুঠির দিন বিকালে অর্থাৎ শুরুর ৬ষ্ঠদিনে মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্যদিনের চেয়েও এদিন নানা শ্রেণীর পাঠক, লেখক ও প্রকাশকদের ভিড় বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে।

সংকল্প প্রকাশনের মালিক মো. মনির হোসাইন মল্লিক বলেন, প্রথমদিনেই পাঠকের সন্তোষজনক সাড়া মিলছে।

শৈলী প্রকাশনীর স্টলে কথা হয় আরিফ রায়হানের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রথমদিনেই প্রত্যাশানুযায়ী সাড়া পাচ্ছি। ধীরে ধীরে মেলা আরো জমজমাট হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি বলেন এবারের বই মেলা একটু ভিন্ন। কারণ  দীর্ঘদিন পর হলেও চট্টগ্রামের নামকরা সব প্রকাশকদের একত্রিত করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এ মেলার আয়োজন করেছেন। প্রচারও হয়েছে ভাল। তাই ক্রেতা সমাগমও বেশি হচ্ছে।

সুবহা বিনতে মামুন নামে এক পাঠক বলেন, প্রথমদিন দেখতে আসলাম। পরিবেশ ভালো লাগছে। তাই আবারো দ্বিতীয় দিন আসলাম বই কেনার প্রস্তুতি নিয়ে। স্টলে এবার নতুন নতুন লেখকদের বই দেখে খুবই ভাল লাগল।

প্রসঙ্গত, রবিবার শুরু হওয়া বইমেলা চলবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা উন্মুক্ত থাকবে। তবে ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে।

এবারের মেলার আয়তন প্রায় ৮০ হাজার ৩০০ বর্গ ফুট। স্টল আছে ১১০টি। এর মধ্যে ঢাকার প্রকাশকদের জন্য ৬০টি এবং চট্টগ্রামের প্রকাশকদের স্টল ৫০টি।

আয়োজক কমিটি জানায় উদ্ভোধনের দিন গত রবিবার মেলা প্রাঙ্গনে দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। বই দুটো হচ্ছে খ্যাতিমান সাহিত্যিক জামাল উদ্দীনের 'চট্টগ্রামের লোকসাহিত্য' এবং অক্ষর বৃত্ত প্রকাশনীর 'বসন্ত কাবিন'। শুরুর দিন থেকে প্রতিদিন মেলা মঞ্চে বেশ কিছু নতুন বইয়ের মোড়ক উম্মোচন করা হচ্ছে। প্রতিদিন চলবে নতুন নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মেচন কার্যক্রম।

এদিকে গত রবিবার বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে বই মেলার উদ্ভোধন করেন, উদ্বোধনী করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে বইমুখী করতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বইমেলা ভূমিকা রাখবে। এসময় তিনি 'একসময় বইপড়া নেশা ছিল' উল্লেখ করে বলেন, এখন বইপড়া চলে গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এটার বিরূপ প্রভাব সমাজের উপর আছে।

তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে গেছে। এটার অনেকগুলো ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিক আছে।

এসময় তিনি অবিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নেতিবাচক প্রভাব থেকে নতুন প্রজন্মকে, আমাদের কিশোর-কিশোরিদের রক্ষার জন্য, তাদেরকে আত্মপ্রত্যয়ী করার জন্য, তাদের দেখা স্বপ্ন পূরণের জন্য তাদের হাতে মোবাইল ফোন-স্মার্ট ফোন তুলে দেয়ার পরিবর্তে বই তুলে দিন।

বাংলা সাহিত্য পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধ সাহিত্য। বাংলা সাহিত্যের অনেক কবিতা এবং গল্পের বই অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে এবং সেগুলো সমগ্র পৃথিবীতে সমাদৃত হয়েছে।

Bootstrap Image Preview