Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

প্রধানমন্ত্রী ৫ দিনের সফরে জার্মানি ও সংযুক্ত আরব আমিরাত যাচ্ছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০২:৩৯ PM
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০২:৫৬ PM

bdmorning Image Preview


আগামীকার কাল ১৪ হতে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫ দিনের সরকারি সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

আজ বুধবার বেলা ১১টায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এ কথা জানান।

জার্মানি সফর সম্পর্কে তিনি বলেন, মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স (Munich Security Conference) উপলক্ষে দেশটির চ্যান্সেলের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১৫-১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে জার্মানির মিউনিখ-এ অনুষ্ঠিতব্য ৫৫ তম সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী জার্মান চ্যান্সেলরসহ অন্যান্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। (প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে আমিসহ উর্ধ্বতন সহকারী কর্মকর্তাবৃন্দ অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।)

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, Munich Security Conference (MSC) প্রধানত: রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, মন্ত্রী, আন্তর্জাতিক সংস্থা, মিডিয়া, সুশীল সমাজ, বেসরকারি খাতের শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধিগণের অংশগ্রহণে সমকালীন ও ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা বিধানে উচ্চ পর্যায়ের বাৎসরিক আলোচনা ও বিতর্কের একটি স্বীকৃত প্লাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত। ২০১৯ সালের এই সম্মেলনে ইতিমধ্যে ২৫ জনের অধিক রাষ্ট্র/সরকার প্রধানসহ বিপুল সংখ্যক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করবেন মর্মে আয়োজক সংস্থা নিশ্চিত করেছে।

তিনি বলেন, ১৯৬৩ সালে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সের যাত্রা শুরু হয়। গত পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে এ সম্মেলনে বিশ্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও বিন্যাস (Global Security and Order) পরিবর্তনের বিভিন্ন প্রেক্ষিত নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে এটি বর্তমানে বিশ্ব নিরাপত্তা আলোচনায় Best Think Tank Conference  হিসেবে পরিচিত হচ্ছে। স্নায়ুযুদ্ধের পটভূমিতে এর যাত্রা শুরু হলেও বিদ্যমান ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতার আলোকে এ সম্মেলনের গুরুত্ব আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রথাগত নিরাপত্তার পাশাপাশি তাই এ সম্মেলনে খাদ্য, পানি, স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত নিরাপত্তা, শরণার্থী ও অভিবাসনসহ বিভিন্ন বিষয়সমূহ গুরুত্বের সাথে আলোচিত হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে প্রথম বারের মতো বাংলাদেশের কোন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী এ সম্মেলনে আমন্ত্রিত হয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন যা ছিল বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত সম্মানের। এবার প্রধানমন্ত্রী 'Climate Change as a Security Threat' এবং 'Health Security Roundtable'  সংক্রান্ত সেশনে সম্মানিত প্যানেলিস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করে বক্তব্য রাখবেন। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আলোচনায় বিশ্বের দেশগুলোর প্রাপ্তি, সম্মেলনের দাতা দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন অঙ্গীকারসহ বিশ্ব নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে খাদ্য, পানি,স্বাস্থ্য, পরিবেশ,  উদ্বাস্তুু ও অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয় সমূহ স্থান পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে ১৭-১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপ-রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং দুবাই-এর শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশীদ আল-মাকতুমের আমন্ত্রণে এই সফরে যাচ্ছেন তিনি।

এই সফরে প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং আমিসহ উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর এ দ্বিপাক্ষিক সরকারি সফরের প্রতিনিধিদলে থাকবো বলেও জানান ড. মোমেন।

প্রধানমন্ত্রী ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে আবুধাবিতে অনুষ্ঠিতব্য International Defence Exhibition (IDEX-2019) এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন ও এক্সিবিশন পরিদর্শন করবেন। এরপর তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপ-রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এবং দুবাই-এর শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশীদ আল-মাকতুমের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। তিনি ইউএই-এর আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স এবং আরব আমিরাতের ডেপুটি সুপ্রিম কমান্ডার শেখ মুহাম্মাদ বিন যায়েদ আল নাহিয়ানের সাথে বৈঠক করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। ১৮ তারিখে প্রধানমন্ত্রী ইউএইর এর জাতির মাতা হিসেবে বিবেচিত প্রয়াত প্রেসিডেন্ট শেখ যায়েদ বিন সুলতানের স্ত্রী শাইখা ফাতিমা এর সাথে সাক্ষাৎ করবেন। উক্ত সফরে তিনি বাংলাদেশ কমিউনিটির সাথে মতবিনিময় সভায় (আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক আয়োজিত নৈশভোজে) অংশ নিবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

এ সফরকালে প্রধানমন্ত্রী একাধিক সংবাদ মাধ্যমের সাথেও সাক্ষাৎকার প্রদান করতে পারেন।

মন্ত্রী বলেন, সফরে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ, দু’দেশের মধ্যে বিরাজমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ়করণ এবং সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র চিহ্নিতকরণ প্রধানমন্ত্রীর এ সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য।

ড. মোমেন বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রম বাজার। ইতিমধ্যে ১৯ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। তা ছাড়া চিকিৎসা ও ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বেশ কিছু খাতে বাংলাদেশী পেশাজীবীদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার ভিসা উন্মুক্ত করেছে। গত বছর আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউএই সরকার কর্তৃক ঘোষিত সাধারণ ক্ষমার আওতায় সেদেশে অবৈধ হয়ে পড়া প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশী নিয়মিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এ সফর সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশীদের আরো অধিক কাজের সুযোগ সৃষ্টিতে অবদান রাখবে বলে আশা করা যাচ্ছে ।

২০ ফেব্রুয়ারি ৫ দিনের সফর দেশে আসবেন তিনি।

Bootstrap Image Preview