Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৪ শনিবার, মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের নামফলক কালি দিয়ে মুছে দিল ছাত্রলীগ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৪:৫০ PM
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৪:৫০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


চট্টগ্রামে কাজীরদেউড়ীতে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের নাম পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নামকরণ করার দাবিতে ‘মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ছাত্র ফোরাম’ সংগঠনের ব্যানারে মানববন্ধন করেছে ছাত্রলীগ।

মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের সামনে এ মানববন্ধন আয়োজন করা হয়। মানববন্ধন শেষে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের নামফলক কালি দিয়ে মুছে দিয়েছে তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘একজন বিতর্কিত মানুষের নামে কখনও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জাদুঘর হতে পারে না। স্বাধীনতা দিবসের আগে এ জাদুঘরের নাম পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নামকরণ করতে হবে।’

মানববন্ধন শেষে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরের নামফলক কালি দিয়ে মুছে দেন ছাত্রলীগ নেতা আবদুর রহিম শামীম। আবদুর রহিম শামীম বলেন, ‘জিয়া একজন বিতর্কিত মানুষ। তার নামে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জাদুঘর হতে পারে না। তাই তার নাম মুছে দিয়েছি।’

মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ছাত্র ফোরামের সভাপতি ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য আবদুর রহিম শামীমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ও নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক রাহুল দাশের পরিচালনায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, সহকারী কমান্ডার সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, মো. হেলাল উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা প্রশান্ত সিংহ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সরওয়ার আলম মনি, ছাত্রলীগ নেতা একরামুল হক রাসেল, কামরুল হুদা পাবেল, মোশরাফুল হক পাবদাশ, জাহিদুল ইসলাম প্রমি, মেজবাহ উদ্দিন শিকদার সুমন, শাহাদাত হোসেন মানিক, তোফায়েল আহম্মেদ তুহিন প্রমুখ।

এদিকে আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে চট্টগ্রামে গড়ে তোলা ‘জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে’ স্থলে ‘চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর’ স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তার এ প্রস্তাবে মন্ত্রিসভার বেশিরভাগ সদস্য এ প্রস্তাবে সমর্থন দেন বলে জানা গেছে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার নওফেল বলেন, যে ভবনটিকে জিয়া স্মৃতি জাদুঘর বানানো হয়েছে, সেটি ব্রিটিশ আমলে নির্মিত। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃৃৃৃতিবিজড়িত ভবনটি। এক সময় এটি সার্কিট হাউস হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এখানে মহান মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃৃতি জড়িয়ে আছে। ১৯৭১ সালে অনেক নিরীহ বাঙালি ও মুক্তিযোদ্ধাকে পাকিস্তানি সেনারা ধরে নিয়ে ওই ভবনে রেখে নির্যাতন করেছিল।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান যখন রাষ্ট্রপতি ছিলেন, তখন এই সার্কিট হাউসে এসে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৯১ সালে তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পর সেটিকে আকস্মিকভাবে জিয়া স্মৃৃৃতি জাদুঘর হিসেবে রূপান্তর করেন, যা চট্টগ্রামবাসী এবং আপামর মুক্তিযোদ্ধারা মেনে নেননি। সেখানে জিয়াউর রহমানের কোনো স্মৃৃৃতি নেই। শুধু ১৯৭১ সালে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে যে ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছিল, সেটি এনে সেখানে রাখা হয়েছে। অথচ জিয়াউর রহমানের আগে একই ট্রান্সমিটার ব্যবহার করে এ ঘোষণা দিয়েছেন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এমএ হান্নান। তা হলে শুধু জিয়াউর রহমানের নামে কেন জাদুঘর হবে?

তিনি আরও বলেন, আদালতের রায়ে জিয়াউর রহমান একজন অবৈধ সামরিক শাসক। তার নামে কেন একটি রাষ্ট্রীয় স্থাপনা এভাবে ব্যবহার করা হবে? তা ছাড়া জিয়ার নামে স্থাপনা হওয়ায়, এই দর্শনীয় স্থানটিতে চট্টগ্রামের মানুষ যান না। অথচ এটিকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর করে একটি সার্বজনীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে রূপান্তর করলে এটি দেশের সম্পদে পরিণত হবে।

Bootstrap Image Preview