Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কয়লা সংকটে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২ ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ

দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০১:৫৩ PM
আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০১:৫৩ PM

bdmorning Image Preview


কয়লা সংকটের আশংকায় তিনটি ইউনিটের মধ্যে একটি ইউনিট দিয়েই বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে কয়লা ভিত্তিক দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। বন্ধ রয়েছে অপর দু’টি ইউনিট। ফলে ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) বোরহান হায়দার জানান, এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট ৩টি ইউনিটের মধ্যে বর্তমানে ২৭৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন তৃতীয় ইউনিটটি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এই ইউনিটটি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে দৈনিক ১৫০ মেগাওয়াট। বাকী মোট ২৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটগুলো বন্ধ রয়েছে।

এর মধ্যে ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন প্রথম ইউনিটটি সার্ভিসিং-এর জন্য গত ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর থেকে বন্ধ রয়েছে। আর আরেকটি ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দ্বিতীয় ইউনিটটি বন্ধ রয়েছে চলতি বছরের ১ জানুয়ায়ি থেকে। প্রথম ইউনিটটি সার্ভিসিং-এর জন্য বন্ধ রাখা হলেও দ্বিতীয় ইউনিটটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। কয়লা সংকটের আশংকায় এটি চালু করা হচ্ছে না। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা পেলেই এবং জরুরি প্রয়োজন সাপেক্ষে দ্বিতীয় ইউনিটটি চালু করা হবে বলে জানান তিনি।

ব্যবস্থাপক (অপারেশন) বোরহান হায়দার আরও জানান, তৃতীয় ইউনিটটি চালু রাখতে প্রতিদিন প্রয়োজন হচ্ছে প্রায় ১ হাজার ৬শ' মেট্রিক টন কয়লা। দ্বিতীয় ইউনিটটি চালু করতে হলে প্রতিদিন আরও ১ হাজার ৩শ' টন কয়লার প্রয়োজন হবে।

তিনি জানান, বর্তমানে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে মজুদ রয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। খনির উৎপাদন বন্ধ থাকার কারণে আপাতত বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে কয়লা সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। 

আগামী মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে কয়লা সরবরাহের কথা জানিয়েছে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ। কয়লা সরবরাহ বন্ধ থাকায় মজুদকৃত কয়লা দিয়ে দুটি ইউনিট চালু রাখলে সরবরাহ শুরুর আগেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার মজুদ ফুরিয়ে যাবে। তাই কয়লা সংকটের আশংকায় দ্বিতীয় ইউনিটটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। কয়লা প্রাপ্তি সাপেক্ষে এবং জরুরি চাহিদা মেটাতে ওই ইউনিটটি চালু করা হবে বলে জানান তিনি।

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি সূত্র জানায়, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উপর নির্ভরশীল পাশ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। গত বছর ১৯ জুলাই কয়লা খনি থেকে কয়লা উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় কয়লার অভাবে ৩ মাসেরও বেশী সময় ধরে বন্ধ ছিলো বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। তখন খনি কর্তৃপক্ষ কয়লা সরবরাহের কথা নিশ্চিত করার পরও সময় মতো কয়লা সরবরাহ করতে পারেনি। তাই এবার খনি কর্তৃপক্ষ আগামী মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে কয়লা সরবরাহের কথা লিখিতভাবে জানালেও কয়লা সরবরাহ শুরু না হওয়া পর্যন্ত তারা খনির উপর ভরসা করতে পারছেন না। খনি থেকে কয়লা সরবরাহ শুরু হলেই বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন দ্বিতীয় ইউনিটটি চালু করা সম্ভব হবে বলে জানান সূত্রটি।

এদিকে গত ২১ জানুয়ারি থেকে বন্ধ রয়েছে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন। আর খনির ইয়ার্ডে বর্তমানে মজুদ রয়েছে মাত্র ৫ থেকে ৬ হাজার টন কয়লা।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেড (বিসিএমসিএল)-এর মহাব্যবস্থাপক (সারফেস ও মাইন অপারেশন) সাইফুল ইসলাম জানান, খনির উৎপাদনশীল ১৩১৪ নম্বর কোল ফেইসের মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় গত ২১ জানুয়ারি থেকে বন্ধ রয়েছে খনির কয়লা উৎপাদন। ওই কোল ফেইস থেকে যন্ত্রপাতি সরিয়ে নতুন ১৩০৮ নম্বর ফেইসে স্থানান্তর করা হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, নতুন ১৩০৮ নম্বর ফেইস থেকে কয়লা উৎপাদন শুরু হতে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। কয়লা উৎপাদন শুরু হলেই সেই কয়লা পাশ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহ করা হবে।

তিনি জানান, ১৩১৪ নম্বর ফেইস থেকে কয়লা উৎপাদন শুরু হয় ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে। এই ফেইসে উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। 

Bootstrap Image Preview