প্রবাস থেকে মায়ের ফেরার প্রতিক্ষায় ঝিনাইদহের শৈলকুপার কৃপালপুর গ্রামের রোজিনা খাতুন। গত ১ জানুয়ারি লেবাননে গৃহ পরিচারিকা সাজেদার আত্মহত্যার খবরে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পরিবার প্রধান সাজেদার স্বামী নজরুল ইসলাম জানান, ৪ মাস পূর্বে তার স্ত্রী একই গ্রামের লেবানন প্রবাসী মিরুন্নাহার তানিয়ার বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজে যায়। কর্মরত অবস্থায় সাজেদার সাথে তানিয়া’র বনিবনা না হওয়ায় দেশে ফিরে আসার কথা ছিল সে মোতাবেক প্রস্তুতিও চলছিল।
হঠাৎপহেলা জানুয়ারি সাজেদা গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে মিরুন্নাহার তানিয়া টেলিফোনে পরিবারকে খবর দেয়। নজরুলের মেয়ে রোজিনা খাতুনের অভিযোগ তার মাকে মানুষিকভাবে নির্যাতন করায় হয়তো আত্মহত্যা করতে পারে।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সাজেদা বরাবরই পাড়াগ্রামে বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করে বেড়াতো। সাজেদা একজন সহজ সরল মানুষ ছিলো।তাদের নিকট আত্মীয় মিরুন্নাহার তানিয়া দম্পতি সাজেদাকে ভুলভাল বুঝিয়ে মোটা বেতনের কথা বলে বিদেশের স্বপ্ন দেখিয়ে বাসার কাজের জন্য ৪ মাস পূর্বে লেবানন নিয়ে যায়।
অপরদিকে লেবাননে থাকা তানিয়ার পিতা স্কুল শিক্ষক রেজাউল ইসলাম জানান, সাজেদাকে ভুলভাল বুঝিয়ে লেবানন পাঠানো হয়নি তার সাংসারিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে পারিবারিক আত্মীয় পরিজনদের সাথে আলাপ আলোচনা করে নিজ ইচ্ছায় বিদেশ গেছে।
তিনি আরও বলেন, তানিয়া একজন পরিচ্ছন্ন ভাল মনের মানুষ তাকে কেউ নির্যাতন করেনি।
তবে কি কারণে সাজেদা আত্মহত্যা করতে পারে এ ব্যাপারে তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে সাজেদা লেবানন থেকে ফিরতে চায়নি, তানিয়ার বাসা থেকে পালিয়ে অন্য কোথাও কাজে যোগদানের চেষ্টা চালাচ্ছিল বলেই তানিয়া তাকে দেশে পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পন্ন করেছে। সাজেদা দেশে ফিরবে না বলেই হয়তো অভিমানে আত্মহত্যা করতে পারে।
তিনি আরও জানান, সাজেদা নিজ ইচ্ছায় লেবানন কোথাও কাজে যোগদান করলে পরবর্তী সময়ে হয়তো হারিয়ে যেতে পারে। ফলে তার পরিবারের দায়ভার এড়াতেই সাজেদাকে গ্রামে ফেরত পাঠাতে চেষ্টা চলছিল এবং ফ্লাইট প্রস্তুতির শেষ মুহুর্তে সাজেদা দেশে ফেরার খবরে ফাঁকা বাসা পেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
লেবাননে ময়নাতদন্ত শেষে সাজেদার লাশ সত্বর দেশে পাঠানোর সর্বাত্বক চেষ্টা করছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।