Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ডিজিটাল ঝুঁকির ফাঁদে বাংলাদেশের ৩২% শিশু

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৬:৫৫ PM
আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৬:৫৫ PM

bdmorning Image Preview
ফাইল ছবি


বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৩২ শতাংশ শিশু অনলাইনে নানান ধরণের সহিংসতা, ভয়ভীতি ও ডিজিটাল ঝুঁকির শিকার হওয়ার মতো চরম বিপদের মুখে রয়েছে।

মঙ্গলবার রাজধানীতে জাতিসংঘের  শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের ‘নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস’ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে  প্রকাশিত   প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

সারা বিশ্বে পাঁচ সপ্তাহ ধরে ১৬০টির বেশি দেশে ইউনিসেফের ১০ লাখ শিশুর ওপর একটি জরিপ চালায়। এর মধ্যে বাংলাদেশের হয়ে অংশ নেয় ১ হাজার ২৮১ জন  ।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রায় ১০ শতাংশ শিশুই ধর্মীয় উস্কানিমূলক বিভিন্ন বিষয়বস্তুর সম্মুখীন হওয়ার অভিযোগ করে। তারা (১৬-১৭ বছর) অন্য বয়সী শিশুদের তুলনায় অনেক বেশি এই ধরনের ভয়াবহ বিষয়বস্তুর সম্মুখীন হয়।

অনুষ্ঠানে অনলাইনে শিশু ও তরুণ জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সহিংসতার বিভিন্ন ঘটনা মোকাবেলা ও প্রতিকারের সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।

বাংলাদেশের ইউনিসেফ  প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বেগবেদার বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং বিশ্বব্যাপী শিশু ও তরুণ জনগোষ্ঠীর কথা আমরা শুনেছি এবং তারা যা বলছে, তাতে পরিষ্কার; ইন্টারনেট একটি নির্দয় মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এজন্য নিরাপদ ইন্টারনেট দিবসে ইউনিসেফ তরুণ জনগোষ্ঠীর নেতৃত্ব অনুসরণ করছে ও অনলাইনে তাদের প্রতি সদয় হতে সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।’

ইউনিসেফ সমীক্ষা অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় ২৫ শতাংশ শিশু (১০-১৭ বছর বয়সী) ১১ বছর বয়সের আগেই ডিজিটাল জগতে প্রবেশ করতে আরম্ভ করে।

এ ছাড়া শিশুদের একটি বড় অংশ (৬৩%) প্রাথমিকভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারের স্থান হিসেবে তাদের নিজেদের বেডরুমটিকেই ব্যবহার করছে। এটা ‘বেডরুম কালচার’ এর ব্যাপকতা নির্দেশ করে, যা অপেক্ষাকৃত কম নজরদারির মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

বাংলাদেশে উচ্চমাত্রায় অনলাইনে প্রবেশাধিকারের সুযোগ ও ব্যবহারের দিক থেকে ছেলেরা (৬৩%) মেয়েদের (৪৮%) চেয়ে এগিয়ে আছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ইন্টারনেটে নিয়মিত সবচেয়ে বেশি যে দুটি কাজ করা হয় তা হচ্ছে, অনলাইন চ্যাটিং (বার্তা আদান-প্রদান) ও ভিডিও দেখা। প্রতিদিন গড়ে ৩৩ শতাংশ সময় অনলাইন চ্যাটিং এবং ৩০ শতাংশ সময় ভিডিও দেখা হয়।

সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ৭০ শতাংশ ছেলে ও ৪৪ শতাংশ মেয়ে অনলাইনে অপরিচিত মানুষের বন্ধুত্বের অনুরোধ গ্রহণ করে। এমনকি জরিপে অংশগ্রহণকারীদের একটি অংশ তাদের নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলে সেই অনলাইন ‘বন্ধুদের’ সঙ্গে সরাসরি দেখা করার কথাও অকপটে স্বীকার করে।

ইউনিসেফ বলেছে, ক্ষতিকর সামগ্রী, যৌন নিগ্রহ ও অপব্যবহার এবং ভয়ভীতির সম্মুখীন হওয়ার ঝুঁকি থেকে শিশুরা কখনোই কোনভাবে মুক্ত নয়। অনলাইনে হয়রানি এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন ব্যাপক ক্ষতির কারণ হতে পারে বলেও ধারনা করা হচ্ছে।

সংস্থাটি আরও বলছে, অন্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় যারা অনলাইনে ভয়ভীতির অবস্থার শিকার হয়, তাদের অ্যালকোহল ও মাদকে আসক্ত হওয়ার এবং স্কুল ফাঁকি দেয়ার প্রবণতাও বেশি। এরই প্রভাবে পরীক্ষায় ফলাফল খারাপ হয় এবং ছেলে মেয়েরা স্বাস্থ্যঝুঁকির প্রকোপে পড়ে।

Bootstrap Image Preview