'মাথায় নষ্ট মামা মাত্র বিশ টাকায় পেতে পারেন পালসার ১৫০ সিসি, রানার ৮০ সিসি কিংবা নগদ এক লাখ টাকাসহ আর্কষণীয় পুরস্কার। তাই আগে আসুন আগে টিকিট কাটুন।' ঠিক এভাবেই উচ্চ শব্দে শব্দ ধারণ করা মাইক বাজিয়ে ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলার পাড়া মহল্লা গ্রাম শহরে চলছে 'দৈনিক মুক্তা' নামে র্যাফেল ড্রয়ের টিকিট।
র্যাফেল ড্র'টি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নেকমরদ ওরশ মেলার আয়োজনে চলছে। এ মেলাটি গত ১৩ জানুয়ারী গরু ছাগল প্রসাধনী বিক্রির লক্ষে মূলত উদ্বোধন করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিনুল ইসলাম উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি সোহাগ চন্দ্র সাহাসহ স্থানীয় রাজনৈতিক সামাজিক নেতৃবর্গ।
অথচ সে মেলায় মানুষকে বিভিন্ন আর্কষণীয় পুরস্কারের প্রলোভন দেখিয়ে র্যাফেল ড্রয়ের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও এবিষয়ে কিছু জানেন না উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী আফরিদা এবং কি র্যাফেল ড্রঃ চালানোর অনুমতি মেলা কমিটি পেয়েছে কিনা সেটিও তার মনে পড়ছে না বলে সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) মুঠোফোনে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয় আমার কাছে প্রতিবেদন চেয়েছিলো আমি দিয়েছি। এখন অনুমতি পেলে মেলা কমিটি পাবে। এ সময় আপনি স্থানীয় প্রশাসনের প্রধান হিসেবে অনুমতির খবর জানবেন না এটা কেমন করে হয় প্রশ্নে তিনি বলেন, অনুমতি পেয়েছে কিনা তা আমার মনে পড়ছে না।
এদিকে মেলায় অশ্লীল যাত্রাপালাও চলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চলমান এস এস সি পরীক্ষার সময় মেলার নামে উপজেলা জুড়ে উচ্চ শব্দের মাইকিং দিয়ে টিকিট বিক্রিতে যেমন মানুষকে পুরস্কারের প্রলোভনে ফেলে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অন্যদিকে রাত ৮-৯ টা পর্যন্ত মাইক বাজিয়ে টিকিট বিক্রি করায় পড়াশুনার বিম্বনায় পড়ছেন পরীক্ষার্থীরা। এতে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে অভিভাবকদের মধ্যে।
অন্যদিকে প্রশাসনের প্রতিও এমন কার্যকলাপের কারণে ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে সাধারণ মানুষ অভিভাবক ও সচেতন মানুষদের।
সোমবার র্যাফেল ড্রয়ের ৮ম রজনী এদিন প্রথম পুরস্কার পালসার ১৫০ ও রানার ৮০ সিসি এবং নগদ এক লাখ টাকাসহ ৫১টি আর্কষনীয় লোভনীয় পুরস্কারের ঘোষনা দিয়েছে রবিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক টিকিট বিক্রেতাকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি চার থেকে পাঁচশ টিকিট নিয়ে বের হয়েছি দৈনিক এমনি টিকিট বিক্রি হয়। তাতে প্রতিদিন গড়ে দশ হাজার টাকা বিক্রি হয়।
এভাবে প্রায় দেড়শতটি গাড়ি বের হয় সে হিসেবে দৈনিক টিকিট বিক্রি হয় প্রায় পচাত্তর হাজার। যার মূল্য বিশ টাকা হারে প্রায় পনের লাখ টাকা। তাতে উপহার দেওয়া হয় সব মিলে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা। বাকি টাকা থেকে যায় আয়োজন কমিটির কাছে।
সে হিসেবে ড্র চলার আট দিনের মধ্যে কমিটি আয় করেছে প্রায় বাহাত্তর লাখ টাকা। লুটে নেওয়া হচ্ছে মানুষের কষ্টে অর্জিত টাকা। এভাবে চলতে থাকলে এলাকায় চুরি ডাকাতি রাহজানি বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন সচেতন ব্যক্তিরা।
এ বিষয়ে মেলা কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান হাজ্বী এনামুল হক বলেন, প্রশাসনের সমস্যা নেই। তাহলে আপনাদের (সাংবাদিকদের)সমস্যাটা কোথায়?