Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নদীটি এখন মৃত খাল

জাহিদুল ইসলাম, পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৮:২৬ PM
আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৮:২৬ PM

bdmorning Image Preview


স্বাভাবিক পানি প্রবাহসহ উৎসমুখে বাঁধ তৈরি করায় এক সময়ের খরস্রোতা বেড়ের ধন নদী এখন পরিনত হয়েছে মৃত খালে। দেড় যুগের বেশি সময় খনন না করায় এবং শাখা খালগুলোতে অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মানের ফলে তৈরি হয়েছে এ অবস্থা।

স্থানীয়রা জানায়, ২০০৩ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে এবং বেসরকারি সংস্থা ডানিডার কারিগরি সহায়তায় একবার খনন করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

জানা যায়, এক সময়ের খরস্রোতা বেড়ের ধন নদীতে পটুয়াখালী থেকে বরগুনা ও পিরোজপুরে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চের শব্দে স্থানীয়দের ঘুম ভাঙত। ঝালকাঠি ও খুলনা থেকে পণ্য বোঝাই বড় বড় ট্রলার চলাচল করত। এ নদীর পানি ছিল কৃষকদের ফসলি জমিতে চাষের ভরসা। নদী কেন্দ্রিক সভ্যতায় বসতি পরিবার গুলো তাদের দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করত এ নদীর পানি।

এসব এখন অতীত। ১২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর নদীটি বর্তমানে সংকুচিত হয়ে ৮-১০ ফুট দৈর্ঘের সরু খালে পরিনত হয়েছে। বর্তমানে ৯৫ ফুট প্রস্থ ও ৯ ফুট গভীরতা নিয়ে বহন করছে কালের স্বাক্ষ্য। এখন লঞ্চ, ট্রলার কোন কিছুই চলাচল করছে না। জোয়ার দু'একটি ট্রলার নদীতে প্রবেশ করলেও ভাটার সময় আটকে পড়ছে। এক সময়ের কর্মচাঞ্চল সুবিদখালী লঞ্চ ঘাটটিতে বিরাজ করছে নীরবতা। নদী পাড়ের সহস্রাধিক পরিবারের দৈনন্দিন কাজে পুকুরের ময়লা পানিই একমাত্র ভরসা। পলি জমে চর পরে যাওয়ায় পায়ে হেঁটে নদী পার হচ্ছে অনেকেই।

ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন বলেন, নৌ-যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের সড়ক পথে মালামাল আনতে হচ্ছে। এতে পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সোহাগ হাওলাদার বলেন, পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে নদীটি পূনঃখননসহ আমতলার খাল, কাবিল আকন খাল, চন্দ্রকান্দা খাল, বকশীর খাল ও লেমুয়ার খালের বাঁধ কেটে স্লুইজ গেট নির্মাণ করতে হবে।

গৃহিনী সুরাইয়া বেগম বলেন, নদীটি খনন করা হলে প্রায় দেড় শতাধিক কৃষক ফসল উৎপাদনে প্রয়োজনীয় পানির সংস্থানসহ বসবাসকারী সহস্রাধিক পরিবারের পানির কষ্ট লাঘব হবে।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খান মো. আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, নদীটি পুন:খননের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রনালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল জাকী বলেন, বেড়ের ধন নদীটি বর্তমানে খাল নামে পরিচিত। পুনঃখনন করা হলে পানির স্বাভাবিক প্রবাহের মাধ্যমে মৃতপ্রায় নদীটি প্রাণ ফিরে পাবে। পাশপাশি নদীপাড়ের জেলেদের আয়ের উৎস হবে।

Bootstrap Image Preview