Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

হবিগঞ্জে শ্রমিক সংকট ও মজুরি নিয়ে বিপাকে কৃষকরা

আজিজুল ইসলাম সজীব, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ 
প্রকাশিত: ০২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৯:১০ PM
আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৯:২৩ PM

bdmorning Image Preview


সারের অতিরিক্ত দাম, শ্রমিক সংকট ও শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় হবিগঞ্জে বোরো চাষে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। এবার বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার আশঙ্কা করছেন জেলার কৃষকরা।   

জেলার কৃষকদের দাবি, এবার বোরো ধান চাষে খরচ অনেক বেশি হচ্ছে। খরচের এই টাকা উঠবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তারা। তবে জেলা কৃষি অফিস মনে করছে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।

হবিগঞ্জ কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে হবিগঞ্জ জেলায় প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হচ্ছে। জেলার সব উপজেলায়ই বোরো চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জমিতে চাষাবাদ করা হচ্ছে আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় এবং বানিয়াচঙ্গ উপজেলায়।

তবে এবার জমিতে কাজের জন্য কৃষি শ্রমিক সংকট রয়েছে আর যে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে তাদের দিতে হচ্ছে দ্বিগুণ মজুরি। অন্য দিকে সারের দাম বেশি হওয়ায় বোরো চাষাবাদ নিয়ে অনেকটা শঙ্কিতও কৃষকরা।

কৃষকদের অনেকেই জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা গেছে এক বিঘা জমিতে ধান চাষে যে পরিমাণ খরচ হয় সেই অনুযায়ী টাকা উঠে আসে না। আবার বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেক সময় ধান নষ্ট হয়ে যায়। এবারও আমরা আশঙ্কা করছি, যে অর্থ খরচ হচ্ছে সেই তুলনায় ধানের উৎপাদন আমরা পাবো না।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়ার গ্রামের কৃষক কদ্দু্ছ জানান, জমিতে ধান উৎপাদন করে যে অর্থ পায় তার চেয়ে খরচ আরও বেশি হয়। আমরা যেহেতু কৃষক, তাই বাধ্য হয়েই আমাদের এ কাজ করতে হয়।

তিনি বলেন, এখন ডিজেলের দাম বেড়েছে কিন্তু ধানের দাম সে তুলনায় বাড়েনি। বর্তমানে কৃষি কাজে শ্রমিক সংকট রয়েছে। অনেকেই কৃষি কাজ করতে চান না। আবার শ্রমিক পাওয়া গেলেও তাদের অধিক মজুরি দিতে হয়। আগে যে শ্রমিক ২০০ টাকায় পাওয়া যেত, এখন সেই শ্রমিককে ৪০০-৫০০ টাকায় আনতে হচ্ছে।

বানিয়াচং উপজেলার হিয়ালা গ্রামের কৃষক মুক্তার মিয়া জানান, বর্তমানে কৃষি কাজ করতে গেলে অনেক দাম দিতে হয়। প্রতিটি কাজেই মূল্য বেড়েছে। এখন আর আগের মতো শ্রমিক পাওয়া যায় না। আবার পাওয়া গেলেও মজুরি বেশি হওয়ায় স্কুল পড়ুয়া ছেলেকে নিয়েই কৃষি কাজ করতে হচ্ছে। কৃষকরা বিনামূলে সার পেলে অনেক কৃষক বাঁচতে পারতো।

পার্শ্ববর্তী মক্রমপুর গ্রামের কৃষক সাদত আলী চৌধুরী জানান, আমরা এখন আর আগের মতো ধান ফলাতে পারছি না। সময় মতো সার দিতে পারছি না। দাম অনেক হওয়ায় জমিতে অল্প পরিমাণে সার দিতে হচ্ছে। বাধ্য হয়েই কৃষিকাজে নিয়োজিত থাকতে হয়। বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হলে আমাদের বাঁচা বড় কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।

এছাড়াও হবিগঞ্জ শহরের সার ব্যবসায়ী ইলিয়াছ মিয়া জানান, বিভিন্ন ধরনের সার সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করা হচ্ছে। কোনও কৃষকের কাছ থেকে এক টাকাও বেশি নেওয়া হচ্ছে না। তবে ধানের দাম কিছুটা বাড়ানো গেলে কৃষকরা খরচ উঠিয়ে কিছুটা লাভবান হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

 

 

 

Bootstrap Image Preview