Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

তালায় ৪৮ বছরে আগের নির্মিত ব্রিজটির সংস্কারে নজর পড়েনি কারো!

এসএম বাচ্চু, তালা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ০১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৮:১০ PM
আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৮:১০ PM

bdmorning Image Preview


সাতক্ষীরার তালা উপজেলার শাকদহা খালের উপর পাকিস্তান আমলে নির্মিত ব্রিজটি সংস্কারের অভাবে ধ্বংস হতে বসেছে। ব্রিজটির এক প্রান্তে সংযোগ রাস্তা না থাকায় কৃষিজোন খ্যাত শাকদহ এলাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য দ্রুত বাজারজাত করতে পারছে না অন্তত ৩০ গ্রামের কৃষকরা। একটি মাত্র সংযোগ সড়কের অভাবে কৃষিতে রীতিমত অনীহা চলে এসেছে সেখানকার কৃষকদের। ব্রিজটি সংস্কারপূর্বক সংযোগ সড়ক নির্মাণ করলে ৩০ গ্রাম হতে কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে পারবেন কৃষকরা।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চরম অযত্ন-অবহেলা ও দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে ব্রিজটির নিরাপত্তা রেলিং নিশ্চিহ্ন হয়েছে অনেক আগেই। মাঠের গভীরে নির্মিত ব্রিজটির অবস্থান তরুণ প্রজন্মের অনেকেরই অজানা। তাই মাদকাশক্তসহ অপরাধীদেরও নিরাপদ পদচারণা রয়েছে সেখানে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কৃষকদের দূর্দশার খবরে ব্রিজ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের শাকদহা ব্রিজের উত্তরদিকে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদ থেকে বেতনা নদীতে মিশ্রিত দীর্ঘ খালের উপর এ ব্রিজটির অবস্থান। জনপদের সাধারণ মানুষের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে দীর্ঘদিন পূর্বে ব্রিজটি নির্মিত হয়েছে। তবে ঠিক কবে কোন সরকারের শাসনামলে ব্রিজটি নির্মিত হয় সে বিষয়ে সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদ বিভাগ কিংবা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কোন সঠিক তথ্য দিতে না পারলেও স্থানীয়দের ধারণা করে বলেন, পাকিস্তান শাষনামল কিংবা তারও পূর্বে নির্মিত হতে পারে ব্রিজটি।

ব্রিজের কারুকাজ শৈলী বা নিদর্শন দেখে এটি দেশ ভাগেরও অনেক পূর্বে নির্মিত বলে অনেকের ধারণা। অনেকে বলেন, পাকিস্তান আমলে নির্মিত একাধিক ব্রিজের সাথে এ ব্রিজটির নকশার অনেক মিল রয়েছে। ব্রিজটি কংক্রিটের ৩টি আরসিসি ওয়াল এর উপর ৬টি স্প্রিং দিয়ে বসানো হয়েছে।

দীর্ঘদিন ব্যবহার না থাকা বা সংস্কার না করা অথবা অবহেলার নমুনা হিসেবে ব্রিজের পশ্চিম দিকে মিঠাবাড়ি, নগরঘাটা, পাঁচপাড়া, ভৈরবনগর, মঠবাড়িয়া, কালিবাড়ি সহ ১০টি গ্রামের মানুষ এক প্রান্তে আসতে পারলেও পূর্ব দিকের প্রান্তে সংযোগ রাস্তা না থাকায় ২০ গ্রামের মানুষ ব্যবহার করতে পারছে না। ফলে শাকদহা খালের অববাহিকায় বর্তমান সমন্বিত মৎস্যঘেরে সবজি, কুল, ধান, পাট ইত্যাদি জাতীয় কৃষিণ্য বাজারজাত করতে ব্রিজটি ব্যবহার করতে পারাছে না। ফলে ১০ কিলোমিটার ঘুরে পাটকেলঘাটা বাজার ও মৌলভীবাজার যেতে হচ্ছে তাদের।

এ ছাড়া ঐ এলাকায় উৎপাদিত দ্রুত পচনশীল মাছ ও সবজিসহ বিভিন্ন কাঁচামাল যথাসময়ে বাজারজাত করতেও এলাকাবাসীকে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। অল্প সময়ে দ্রুত পণ্যগগুলো বাজারজাত করতে এলাকাবাসীর দাবি- দ্রুত ব্রিজের পূর্ব প্রান্তের অধিগ্রহণকৃত রাস্তার জমি দখলদারদের কবল থেকে মুক্ত করে ব্যবহারের উপযোগী করতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক জানান, ব্রিজের পূর্বপ্রান্ত হতে শাকদহা বিলের মধ্যভাগ দিয়ে বড়বিলার ঈদগাহ হয়ে কলারোয়া সড়কে মিলিত হয়েছে। ব্রিজের কাছাকাছি রাস্তার জায়গা স্থানীয় প্রভাবশালীরা দখল করে মৎস্যঘেরে রূপান্তির করেছে। বর্তমান সরকার কৃষি ও কৃষিপণ্যের মানোন্নয়ন ও তা সুষ্ঠু ভাবে বাজারজাত করতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করলেও সুদুর পাকিস্তান আমলে নির্মিত ব্রিজটির সংস্কারে দীর্ঘদিনেও নজর পড়েনি কারো।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ জানিয়েছেন, কৃষকদের ভাগ্যন্নয়নে উক্ত ব্রিজ সরেজমিন পরিদর্শন করে পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হবে।

Bootstrap Image Preview