হবিগঞ্জের টঙ্গীরঘাট গ্রামে শশুরবাড়িতে জামাতা কাউছার হত্যা মামলার মূল আসামি মর্তুজ আলী (৫০) কে আটক করেছে পুলিশ। আটক মর্তুজ আলী টঙ্গীরঘাট গ্রামে মৃত সুলতান মিয়ার পুত্র।
বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) ভোর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি (অপারেশন) প্রজিত কুমার দাশের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তার বসতবাড়িতে অভিযান চালায়।
পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসার সময় আসামি মর্তুজ আলী পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। এসময় ২ পুলিশ সদস্য আহত হন।আহত পুলিশ সদস্যদের হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার টঙ্গিরঘাট গ্রামে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজের ৫ দিন পর কাউছার আহমেদ (২৮) নামে এক জামাতার গলাকাটা লাশ গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। নিহত কাউছার মিয়া উমেদনগর গ্রামের মৃত আকল মিয়ার ছেলে।
পরে এ ঘটনা নিহতের বড় ভাই জালাল মিয়া বাদী হয়ে নিহত কাউছারের স্ত্রী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ীসহ কয়েকজনকে অজ্ঞাত নামা আসামী করে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জলাল মিয়া স্থানীয় সংবাদকর্মীদের জানান, যে তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর সুখ বানুর পরকীয়া প্রেমে বলি হয়েছে আমার ভাই।
মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে নিহতের স্ত্রী সুুখ বানু , শশুর মকসুদ আলী, শাশুড়ি খাইরুনেচ্ছছাকে আটক করা হয়।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি (অপারেশন) প্রজিত কুমার দাশ জানান, আটককৃত ৩ জনই জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে কাউছারকে কিভাবে ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে দ্বি-খন্ডিত করে হত্যা করা হয়, কেনই বা তাকে হত্যা করে ছিল সে বিষয়ে আটককৃতরা স্বীকারোক্তি দেন।
পরে নিহত কাউছার মিয়ার মৃত দেহ কোথায় লুকিয়ে রেখেছে জিজ্ঞেসা করলে মকসুদ আলী (শশুর) পুলিশকে সে জায়গায় নিয়ে জায়। এসময় মৃতদেহ উদ্ধার করতে গিয়ে হতবাক হয়ে যায় পুলিশ। নিহতের লাশ সদর উপজেলার রওয়াইল হাওরে ইট ও পাথর দিয়ে বাঁধা অবস্থায় পানির নীচ থেকে উদ্ধার করা হয়। হাওরে যে অবস্থায় ও যে জায়গা থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয় তা ছিল অকল্পনীয়।
পরে আটককৃৃতরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম এর আদালতে হাজির করলে বিজ্ঞ আদালতে আটককৃতরা নৃশংসভাবে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং হত্যাকাণ্ডের সাথে যারা ছিল তাদের কথাও স্বীকার করেন।
তাদের জবানবন্দির প্রেক্ষিতে মর্তুজ আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা পুলিশ।