Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৫ বুধবার, মে ২০২৪ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দিন দিন বেঁকে যাচ্ছে সাজিদের হাত-পা

এসএম বাচ্চু, তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারী ২০১৯, ০৭:৩২ PM
আপডেট: ৩১ জানুয়ারী ২০১৯, ০৭:৩২ PM

bdmorning Image Preview


দিন দিন বেঁকে যাচ্ছে সাজিদ হোসেনের হাত-পা। শরীরের মধ্যে গুটি গুটি উঠেছে তার। বয়স ১২ বছর। ছোট বেলায় স্বাভাবিক থাকলেও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের হাড়ের উপর গুটি উঠতে শুরু করে। ছেলের চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা, খুলনা, যশোর, ঢাকা এমনকি ভারতেও নিয়ে গেছেন গরিব বাবা মুন্সি আবু তালেব। ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের চিকিৎসক ও ভারতের ব্যাঙ্গালুর-ভেলোরের চিকিৎসক দুই ধরনের মত দিয়েছেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাজিদের বয়স ২৫ বছর হওয়া পর্যন্ত তার শরীরে অপারেশন করা সম্ভব নয়।

অন্যদিকে, ভারতের চিকিৎসকরা এখনই অপারেশন করতে বলেছেন। শরীরের মধ্যে হাড়ের উপর উঠা গুটির প্রত্যেকটি অপারেশনের জন্য ৭০ হাজার টাকা করে প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সেখানকার চিকিৎসকরা।

তার শরীরে এমন গুটির সংখ্যা ৬০-৭০টি। চিকিৎসকের এমন কথা শুনে সাজিদকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে তার বাবা। বর্তমানে বন্ধ রয়েছে সাজিদের সকল চিকিৎসা।

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া গ্রামের সাজিদ হোসেনের মা তাহেরা পারভীন বলেন, জন্মের এক বছর পর থেকে ছেলের গায়ে প্রথমে কয়েকটি গুটি উঠে। তখন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ওষুধপত্র দেয়া হলেও কোনো লাভ হয়নি। ধীরে ধীরে গুটিগুলো শরীরের বিভিন্নস্থানে বাড়তে থাকে। দুই বছর আগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তার বলেন, বোন টিউমার (হাড়ের টিউমার) হয়েছে। বয়স ২৫ বছর না হলে অপারেশন করা যাবে না।

এরপর ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর মনিপাল হাসপাতালের অর্থপেটিকস বিভাগের প্রধান ডা. রাজেনকে দেখানো হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিনি বলেন, অপারেশন করলে সুস্থ হয়ে যাবে। প্রত্যেকটি অপারেশনের জন্য খরচ হবে ৬০-৭০ হাজার টাকা।

সরকার ও হৃদয়বান মানুষের সহযোগিতা চেয়ে তাহেরা পারভীন বলেন, টাকার অভাবে আমার একমাত্র ছেলের চিকিৎসা করতে পারছি না। আমার ছেলেকে আপনারা সহযোগিতা করে বাঁচান।

সাজিদের বাবা মুন্সি আবু তালেব জানান, ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমার যা কিছু ছিল সব শেষ করে ফেলেছি। নতুন কিছু বিক্রি করে চিকিৎসা করাবো এমন উপায় নেই। সাজিদ তালার মডেল হাইস্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। ছোট বেলায় চঞ্চল স্বভাবের থাকলেও এখন শান্ত হয়ে গেছে। ঠিকমত হাঁটতেও পারে না এখন। দিন দিন হাত-পা বেঁকে যাচ্ছে তার। আমি কৃষি কাজ করে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছি না।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক স্বহৃদ্বয়বান মানুষ তিনি। অনেককে চিকিৎসার জন্য সাহায্য প্রদান করে থাকেন। আমার একমাত্র ছেলের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন সোনা বলেন, ছেলেটির গায়ে গুটি গুটি ভরে গেছে। ছেলেটিকে সুস্থ করতে চিকিৎসা প্রয়োজন।

ছেলেটির রোগের বিবরণ শুনে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, এটা সাধারণত জন্মগত ত্রুটির কারণে হতে পারে। এ ছাড়া রোগটিও বিরল। হাড়ের মধ্যে থেকে টিউমারের মতো সৃষ্টি হয়। এগুলো অপারেশন করে কেঁটে ফেলা যায়। এছাড়া ছেলেটিকে না দেখে এর থেকে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।

সাজিদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন ০১৭৬১৭৭৭১৯৩ নম্বরে।

Bootstrap Image Preview