সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মেসেঞ্জারে শিক্ষিকা-ছাত্রীদের ছবির আপত্তিকর উপস্থাপনা, নিপীড়ন, লাঞ্ছনা এবং মাদক সেবনের পৃথক চার ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ শিক্ষার্থীকে নানা মেয়াদে বহিষ্কার ও জরিমানা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত ১৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৩০৪তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বহিষ্কারাদেশ ও জরিমানার বিষয়টি জানানয়।
জানা যায়, ২০১৭ সালের নভেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ৪৫তম আবর্তনের ১২ ছাত্রের বিরুদ্ধে ফেসবুক মেসেঞ্জারের সিক্রেট গ্রুপে শিক্ষিকা এবং নারী শিক্ষার্থীদের ছবির আপত্তিকর উপস্থাপনার অভিযোগ ওঠে। বিভাগের ৪৫তম আবর্তনের ১৫জন ও ৪৩তম আবর্তনের এক ছাত্রী এর বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অফিস আদেশে জানানো হয়, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের মধ্যে ১১ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার ও জরিমানা করা হয়েছে।
এর মধ্যে- মো. নাঈম-ই-আক্তার, ইজাজ আহমেদ, মো. মেহেদী হাসান ও মো. ইকবাল হোসেনকে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত; মো. সজিব হোসাইন, মো. আল-আমিন শৈশব, মো. আবু নাঈম ও জি এম তারিকুল ইসলামকে ছয় মাস এবং মো. শাহরিয়ার খান, নাহিদুল ইমলাম ও মো. ওমর ফারুককে তিন মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়। নাহিদুল ও ওমর ফারুক ছাড়া বাকি ৯ ছাত্রকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
অফিস আদেশে বলা হয়, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৫তম আবর্তনের এক ছাত্রীকে নিপীড়নের অভিযোগে একই বিভাগের ৪৩তম আবর্তনের আজগর হোসেন রাব্বিকে তিন মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে গত ৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় তিন শিক্ষার্থীকে শারীরিক লাঞ্ছনার ঘটনায় নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের রিজওয়ান রাশেদ সোয়ান, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কে এম মাহিদ হাসান ও মার্কেটিং বিভাগের আহসানুজ্জামান শাওনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা সবাই ৪৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থী।
এছাড়া মাদক সেবনের দায়ে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪২তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং বাংলা বিভাগের ৩৯তম আবর্তনের মো. মইন উদ্দিন জনিকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
সিন্ডিকেট অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখ (১৮ জানুয়ারি) থেকেই এই বহিষ্কারাদেশ কার্যকর হবে বলে ঢাকা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ।