Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১০ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সৈয়দ আশরাফের মাকে আমার মায়ের মতোই দেখতাম: শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩০ জানুয়ারী ২০১৯, ০৫:৪৪ PM
আপডেট: ৩০ জানুয়ারী ২০১৯, ০৫:৪৪ PM

bdmorning Image Preview


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মাকে নিজের মায়ের মতো করেই দেখতাম। এ সময় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

আজ বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবের উপর আলোচনাকালে তিনি এ কথা বলেন।

আজ বিকালে পুনর্নির্বাচিত স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়।  

তিনি বলেন, সৈয়দ আশরাফের পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ্বস্ত সহযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ছিলেন তার বাবা। সৈয়দ আশরাফ ছিলেন মন্ত্রী অথচ তার মায়ের চিকিৎসা করানোর টাকাও ছিল না। 

তিনি বলেন, সৈয়দ আশরাফকে আমি ছোটবেলা থেকেই চিনি। সৈয়দ আশরাফের ভাই-বোনরা ছোটবেলা থেকেই আমাদের বাসায় আসা যাওয়া করতেন। যখন আমরা লন্ডনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ মহিলা আওয়ামী লীগ গড়ে তোলার কাজ করি তখন আমাদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। 

সৈয়দ আশরাফ সারা জীবন আমাকে বড় বোনের মতোই জানতো। মূলত ১৯৭৫ এরপর আমরা যারা পরিবারকে হারিয়েছি তাদের দিন গেছে কষ্টে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশরাফ খুব মেধাবী ছিল আমি তাকে পঁচাশি সালে লন্ডন থেকে নিয়ে আসি নির্বাচন করার জন্য। তাকে বলি দেশে এসে নির্বাচন করো। প্রথমে আমরা তাকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিই পরবর্তীতে তাকে মন্ত্রী করি। সৈয়দ আশরাফ আমাদের একই সাথে ছাত্রলীগ করত এবং সে খুবই নিবেদিতপ্রাণ ছিল। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন। তাকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে তাকে প্রেসিডিয়াম সদস্য করি। ২০০৭ সালে যখন ইমার্জেন্সি দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশের ক্ষমতা নেন তখন আমি বাহিরে ছিলাম এবং আমি দেশে আসলে আমাকে গ্রেফতার করা হয়। জিল্লুর রহমান তখন অ্যাক্টিং প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং দলের সাধারণ সম্পাদক জলিলকে গ্রেফতার করা হয় এবং সেই সময় তিনি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। আমাদের পুনরায় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার পেছনে তার গুরুত্ব অনেক বেশি ছিল। 

তিনি বলেন, আমরা ভাবতেও পারিনি সৈয়দ আশরাফ আমাদের ছেড়ে এত দ্রুত চলে যাবেন। লন্ডনে এমন অবস্থায় সে থাকতো যে কখনো কখনো তার কাছে খাবার পয়সা থাকতো না তবুও তিনি সৎ এবং নিষ্ঠার সাথে রাজনীতি করেছেন। আর একদিন তিনি আমাকে বললেন আপা খাবার খাবো। আমি বললাম চলে আসো, তখন তিনি বললেন- আমি যে যাবো আমার কাছে তো ট্রেনের ভাড়া নাই। একটা  বড় বোনের কাছে যে একটা আবদার করে তিনি আমার কাছে সেইভাবে আবদার করতেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি সৈয়দ আশরাফের মেয়ের প্রতি সমবেদনা জানাই, তার ভাই-বোনদের প্রতি সমবেদনা জানাই। আমি তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। এবং সেই সাথে আরো যে সকল শোক প্রস্তাব এসেছেন তাদের প্রতি সমবেদনা জানাই। আমি কিশোরগঞ্জ সদরের আসনের লোকদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। সৈয়দ আশরাফের অনুপস্থিতিতেও তাকে এত পরিমাণে ভোট দিয়েছেন এবং তারা ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করেছেন। 

তিনি বলেন, সবচেয়ে কষ্টকর ব্যাপার হচ্ছে যে দিন আমরা শপথ নিলাম সেদিনই তাঁর মৃত্যুর সংবাদ শুনলাম। তার বোনকে আমরা উপ নির্বাচনে নমিনেশন দিয়েছি। আশা করব তার বোনকে কিশোরগঞ্জবাসী ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন এবং আশরাফের স্মৃতি ধরে রাখবেন।
 

Bootstrap Image Preview