গত তিনদিন ধরে একটি মালবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করছিলেন চালক। কিন্তু কিছুতেই তা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে চালক ট্রেনের ইঞ্জিন পরীক্ষা-নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেন। রেলের ইন্সপেক্টররা পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় ওই ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচে স্প্রিংয়ের ফাঁকে একটি ধড়হীন মুণ্ড দেখতে পান।
এই মুণ্ড নিয়ে প্রায় একশ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে মালবাহী ওই ট্রেনটি। স্প্রিংয়ে মাথা আটকে থাকায় ট্রেনের গতি বাড়ানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন ইন্সপেক্টররা।
ইঞ্জিনের নিচ থেকে মুণ্ড উদ্ধারের এ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে। তিন দিন ধরে ইঞ্জিনের নিচে আটকে ছিল ধড়হীন এই মাথা। মঙ্গলবার সকালের দিকে কর্ণাটকের চিক্কামাগালুরু জেলার বিরুর জংশনের রেলকর্মীরা ওই মাথাটি উদ্ধার করেন।
ট্রেনের চালক বলেছেন, গতি বাড়ানোর চেষ্টা করেও তিনি ট্রেনের গতি বাড়াতে পারছিলেন না। আর এই অবস্থা চলছিল গত তিনদিন ধরে। এ কারণে বিরুর জংশনে পৌঁছাতেই মালবাহী ট্রেনটির ইঞ্জিন পরীক্ষা করতে যান রেলের ইন্সপেক্টররা। ইঞ্জিনের নিচে গিয়ে দেখতে পান, বিশাল স্প্রিংয়ের ফাঁকে আটকে আছে একটি কাটা মুণ্ড।
মাথাটি উদ্ধার করে বিরুর সরকারি হাসপাতালে পাঠানোর পরে রেল পুলিশের সব কন্ট্রোলরুমে খবরটি ছড়িয়ে দেয়া হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে রানেবুন্নুর স্টেশনের কর্মীরা ফোনে জানান, শুক্রবার মাঝরাতে তীব্র গতিতে ছুটে চলা ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন এক যুবক। তার দেহ উদ্ধার করা গেলেও শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া মাথা খুঁজে পাওয়া যায়নি।
দুই স্টেশনের কর্মীদের মধ্যে ধড় ও মুণ্ডের ছবি পাঠানো হলে জানা যায়, একই শরীরের দুই অংশ দুই প্রান্তে পৌঁছেছে।
ভারতীয় একটি দৈনিক বলছে, কর্ণাটকের চাল্লাগেরের বাসিন্দা কুমার পরশাপ্পা তলাবার (৩১) ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপরে একটি হোটেলে চাকরি করতেন। শুক্রবার রাতে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে তিনি আত্মঘাতী হন।
ইঞ্জিনের চাকার চাপে শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে লাফিয়ে উঠে নিচের স্প্রিংয়ের ফাঁকে আটকে যায়। শরীর পড়ে থাকে রেললাইনের উপর। সেই অবস্থায় ১১০ কিলোমিটার সফর করে মালবাহী ট্রেনের এই ইঞ্জিন।