অবৈধভাবে টাকা আদায়ের অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নুরজাহান হামিদাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি বাবদ বাধ্যতামূলকভাবে বেআইনিভাবে টাকা গ্রহণ ও হয়রানির অভিযোগে সোমবার (২৮ জানুয়ারি) অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নূরজাহান হামিদার বিরুদ্ধে ভাউচার এবং কোনো প্রমাণ ছাড়া ৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে দুদক।
সোমবার সকালে দুদকের অভিযানে এসবের প্রমাণ পায় দুদক। দুদকের কর্মকর্তাদের কাছে এসব অভিযোগ স্বীকার করেন নূরজাহান হামিদা।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাবদ বাধ্যতামূলক বেআইনি অর্থগ্রহণ ও হয়রানির অভিযোগ পেয়ে সোমবার (২৮ জানুয়ারি) মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অভিযান চালায় দুদক।
দুদক হটলাইনে (১০৬) ভুক্তভোগী অভিভাবকরা অভিযোগ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী তাৎক্ষণিক অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন। নির্দেশ পাওয়ার পর দুদকের সহকারী পরিচালক নার্গিস সুলতানা ও উপ-সহকারী পরিচালক সবুজ হাসানের সমন্বিত টিম এ অভিযান চালায়।
অভিযানে দেখা যায়, অভিভাবকদের কাছ থেকে মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরজাহান হামিদা বাধ্যতামূলক বিনা রশিদে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা আদায় করছেন। এমনকি হতদরিদ্র ব্যক্তিদের সন্তানদেরও বিনামূল্যে ভর্তি করানো হয়নি। বরং তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে।
দুদক টিম প্রমাণ পায়, ২০১৯ সালের ভর্তি বাবদ ওই প্রধান শিক্ষক এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকা অবৈধভাবে আদায় করেছেন।
এসব টাকার কোনো আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখা হয়নি। প্রধান শিক্ষক দুদক টিমের কাছে অবৈধ অর্থ আদায়ের ঘটনা স্বীকারও করেন।
এদিকে ঘটনাটি উদঘাটন হওয়ার পরপরই দুদক মহাপরিচালক (প্রশাসন) বিষয়টি তাৎক্ষণিক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।
এরপরই প্রধান শিক্ষক নুরজাহান হামিদাকে বরখাস্তের আদেশ জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
অভিযান প্রসঙ্গে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, দুদক শিক্ষা সেক্টরে দুর্নীতির শেকড় উৎপাটনে কঠোর অভিযান চালাবে।
তিনি বলেন, তবে এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদেরও প্রতিরোধমূলক মানসিকতা থাকতে হবে। শিগগিরই বেআইনিভাবে আদায়কৃত অর্থ অভিভাবকদের কাছে ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।