একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বিএনপিও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর ‘অনিয়ম ও কারচুপির’ অভিযোগ এনে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
মামলার সময় শেষ হচ্ছে, আগামীকাল মঙ্গলবার। সোমবার পর্যন্ত বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের কোনো প্রার্থী মামলা করেননি। শুধু গণফোরামের পরাজিতরা মামলার ফাইল জমা দিয়েছেন।
জানা গেছে, মামলার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বিএনপি ও তাদের শরিক ২০ দল।
বিএনপি নেতারা বলছেন, দলীয়ভাবে তারা নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করছেন না। তবে কেউ নিজ উদ্যোগে মামলা করতে চাইলে পারবেন, তাকে বাধা দেয়া হবে না।
সিদ্ধান্ত নিয়েও সরে আসার কারণ হিসেবে তারা বিচার বিভাগের ওপর ‘সার্বিক অনাস্থা’কে সামনে আনছেন। বলছেন, ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ, মামলা করেও লাভ হবে না। মেয়াদকালই তা ঝুলিয়ে রাখা হবে। আবার রায় পক্ষে দিয়ে নির্বাচনের বৈধতা নেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পরে এই ইস্যুতে আর জনগণের সামনে কথা বলা যাবে না।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু, এখন আমরা মামলা করছি না। কারণ, এই নির্বাচনে কি হয়েছে, দেশের মানুষ সবই জানে। এখানে মামলা করে কোনো লাভ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কাউকে নিষেধ করিনি। নিজ উদ্যোগে কেউ মামলা করতে চাইলে পারবেন।’
বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের অনিয়মের চিত্র আমাদের হাতে আছে। কিন্তু, বিচার বিভাগের ওপর আমাদের কোনো আস্তা নেই। তাই দলীয়ভাবে আমরা মামলায় যাচ্ছি না।’
২০ দলীয় জোটের শরিক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম বলেন, ‘আমি মামলা করছি না, এটাই বলছি। এ নিয়ে ২০ দল কি ভাবছে, আমার জানা নেই।’
এদিকে, গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক জানান, তাদের পরাজিত প্রার্থীদের অনেকেই নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন।
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৮৮টি আসনে জয়লাভ করে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৮টি আসনে জয়লাভ করে।
এরই মধ্যে গত ৩ জানুয়ারি রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে প্রার্থীদের এক বৈঠকে নির্বাচনে ‘ভোটের অনিয়ম ও কারচুপি’ নিয়ে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলার সিদ্ধান্ত হয়।