অসুস্থ হয়ে রাজধানী ঢাকার খিলগাঁওয়ের খিদমাহ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর পায়ে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে।
রোববার রাত ১০টায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা আল্লামা বাবুনগরীর বা পায়ে অস্ত্রোপচার করেন বলে জানান মহাসচিবের একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী মাওলানা ইনামূল হক ফারুকী।
তিনি জানান, বর্তমানে অসুস্থ হয়ে হুজুর ঢাকার খিদমাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার বাম পায়ে ইনফেকশন (পচন) হওয়ায় অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচারের পর অভিজ্ঞ ডাক্তাররা বোর্ড বসে জানিয়েছেন, তার কিডনি, হার্ট, লিভার, প্রেশার, ডায়াবেটিস, পায়ের ইনফেকশন সব রোগ একই সঙ্গে মারাত্মক জটিল আকার ধারণ করেছে। চিকিৎসায় ব্যালেন্স আনা বা উন্নত চিকিৎসা এই দেশে কোনো হাসপাতালে সম্ভব না। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে (হুজুর) দ্রুত বিদেশ নিয়ে যেতে হবে। না হলে দিন দিন তার শারীরিক অবনতি ঘটতে পারে।
হেফাজত মহাসচিবের একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী আরও জানান, এ সময় ডাক্তাররা বিদেশের ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরের পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষত মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবাই একমত হয়েছেন। কিন্তু বাদ সাধলো পাসপোর্টের বিষয়।
এদিকে সরকার তার (মহাসচিব) পাসপোর্ট আটকে রেখে পরোক্ষভাবে তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। এ ধরনের অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া চোখে পড়েছ। এমনকি মুহাম্মদ ইবরাহীম খলিল সিকদার নামে এক ফেসবুক আইডি থেকে প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ আল্লামা বাবুনগরীর চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সবিনয় আবেদন জানিয়েছে।
এছাড়া এবার যদি পাসপোর্ট ফেরত দেয়া না হয়, তাহলে আলেম-ওলামা ও সাধারণ তৌহিদি জনতার পক্ষ থেকে কঠোর কর্মসূচি আসছে এমনটা জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হেফাজতের এক শীর্ষ নেতা এ প্রতিবেদককে জানান, গত বছরের ২৩ জুলাই ক্লাস শেষে হঠাৎ পেশার বেড়ে যাওয়ায় বেশ ক’বার বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
পরে তাকে চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তখন পাসপোর্ট ইস্যুতে বেশ আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল এবং হেফাজতের শীর্ষ নেতারা এ ইস্যুতে নানা কর্মসূচিও ঘোষণা করেছিল। পরে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে। তবে প্রশাসনের দেওয়া আশ্বাস আশ্বাসেই রয়ে গেল।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২৬ জানুয়ারি) বিকালে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী অসুস্থবোধ করলে তাকে রিজেন্ট এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে ঢাকায় এসে খিদমাহ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ২০১৩ সালে ৫ মে শাপলা চত্বরের ঘটনার পর সংগঠনটির মহাসচিব আল্লামা বাবুনগরী গ্রেফতার হয়েছিলেন। সে সময় তার পাসপোর্টটি নিয়ে নেয়া হয়। ওই সময় হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়ছিল।