Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কর্মকর্তাদের সাবধান করে দিয়েছি: নসরুল হামিদ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ জানুয়ারী ২০১৯, ০৫:৩৩ PM
আপডেট: ২৬ জানুয়ারী ২০১৯, ০৫:৩৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, কোনো দুর্নীতিবাজই পার পাবে না। যেখানে দুর্নীতি সেখানেই অ্যাকশন হবে। গ্যাস, বিদ্যুৎ, খনিজ সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতি নির্মূলে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ইতিমধ্যে আমি কয়েকবার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসেছি, তাঁদের সাবধান করে দিয়েছি। প্রয়োজনে আমার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদের হিসাবও নিয়ে রাখব এবং দেখব। বঙ্গবন্ধুর কন্যা, আমার নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন। নির্বাচিত হওয়ার আগে জনগণকে কথা দিয়েছি যে আমরা দুর্নীতিমুক্ত একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, নতুন প্রজন্মকে সুন্দর একটি দেশ উপহার দিতে চাই, সেই প্রতিশ্রুতি এখন বাস্তবায়নে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমাদের সব বিভাগের লোকজনই নয়, এ ক্ষেত্রে দেশের জনগণেরও সহযোগিতা আমরা চাই। দুর্নীতিবাজ কোনো কর্মকর্তা উন্নয়নের পথে বাধা হলে কোনোভাবেই তাঁরা পার পাবেন না।

তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পরিবর্তন করে নতুন একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুরো তিতাসকেই ঢেলে সাজানো দরকার। ডিজিটাইজেশনের উদ্যোগ আমরা পর্যায়ক্রমে নিচ্ছি, দুর্নীতি কমিয়ে আনার বিষয়ে বেশ কিছু কাজও চলমান আছে। স্মার্ট কার্ড সিস্টেম থাকলে বোঝা যেত কোথায় চোরাই লাইন নিচ্ছে, কারা বিল পরিশোধ করছে না? সব কিছুই আমরা ধরতে পারতাম। ডিজিটাল কার্ড সিস্টেম করা হলেই দুর্নীতি অনেকাংশে কমে যাবে। স্মার্ট প্রিডেইড মিটার দেওয়া হলে দুর্নীতির প্রশ্নই আসে না, কার্ডে টাকা থাকলেই গ্যাস পাবে, আর টাকা না থাকলে গ্যাস নাই। ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম যত দ্রুত সম্ভব স্মার্ট সিস্টেমে নিয়ে আসার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছি।

এমনকি তিতাসে অনলাইনে আবেদন করে গ্রাহকরা যেন সংযোগ পান সেটার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। অনলাইনে গ্যাসের জন্য আবেদন করবে গ্রাহকরা, ডিজিটালি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। যারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ করবে না, ডি-ফল্টার হিসেবে গণ্য হবে, সেই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। আর তিতাসের যারাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকবে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

দুর্নীতি রোধ করতে হলে সাধারণ মানুষের মনমানসিকতা বদলানোও দরকার। গ্রাহকরা দুর্নীতি প্রশ্রয় দিব না—এই মানসিকতা অবশ্যই থাকতে হবে। গ্রাহকরা অবৈধ কাজকে প্রশ্রয় দিব না—এটাতে শক্ত হতে হবে। আমরা যতটা দ্রুত পারছি টেকনোলজিক্যালি ইমপ্রুভ করতে, ইতিমধ্যে আমরা স্মার্ট প্রিপেইড মিটার লাগাচ্ছি। এটা স্থাপন করা হয়ে গেলে মাঠপর্যায়ের বড় ধরনের দুর্নীতি কমে যাবে। সংযোগ দেওয়ার ব্যাপারে আপনারা দেখছেন—এখন আর বিদ্যুতের জন্য জ্বালাও-পোড়াও করতে হচ্ছে না, মাসের পর মাস অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না। বিদ্যুৎ এখন বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিচ্ছে আমাদের টিম। আলোর ফেরিওয়ালারা বিদ্যুৎ নিয়ে ঘুরছে। এটাতে মানুষ ভোগান্তি এবং দুর্নীতির বাইরে গিয়ে সেবা পাচ্ছে। আর এই ভোগান্তি কমাতে আরো ডিজিটাল হওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যেমন অনলাইনে কেউ আবেদন করলে সেখানেই অনুমোদন পাবে এবং আমাদের বিদ্যুতের লোকজন বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে দিবে। আগামী দিনে ডিজিটাল সেবা দেওয়ার বিষয়ে কাজ চলছে। ইন্টার অপারেটেবল পেমেন্ট সিস্টেম অনলাইনে চালু করতে পারলে আমাদের দুর্নীতি অনেকটা কমে যাবে।

টেকনোলজির দিকে যাওয়ার ইচ্ছা আমাদের যেমন থাকতে হবে, ব্যুরোক্র্যাটদেরও থাকতে হবে। আমি মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত দিলাম, কিন্তু তারা আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করল না, তাহলে যত ভালো সিদ্ধান্তই হোক না কেন কোনো লাভ নেই। আর আমরা যত দ্রুত ডিজিটাইজেশনে যেতে পারব তত দ্রুত আমরা দুর্নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারব। পুরো মিনিস্ট্রিটাকেই ডিজিটাইজেশনের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। কারণ এখন ম্যানুয়ালি ফাইল আসে আমাদের কাছে, এটা ডিজিটালি আসতে পারত, যেমন অনলাইনে। এটা হলে দুর্নীতি থাকত না। কাজগুলো দ্রুততার সঙ্গে করা হতো। যে ফাইলগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না আসত সেটার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জবাবদিহির মধ্যে নিয়ে আসা যেত। প্রধানমন্ত্রী আমাদের পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, মানুষকে দুর্নীতিমুক্ত এবং ভোগান্তিবিহীন সেবা দিতে হবে। আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি। নিচের পর্যায়ের কর্মকর্তারা এখন বাস্তবায়ন করবেন। তাঁদের এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

Bootstrap Image Preview