‘বাইরের কাজের পাশাপাশি ছেলেদের ঘরের কাজে অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে, অপরদিকে ঘরের কাজের পাশাপাশি মেয়েদের বাইরের কাজে অংশগ্রহণের হার বাড়াতে হবে। এভাবে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির ক্রমপরিবর্তন করতে হবে। জেন্ডার ইক্যুয়ালিটির বিষয়ে নারী-পুরুষ উভয়ের সমান উপলব্ধি থাকা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকাস্থ সুইডেন দূতাবাসের মাননীয় রাষ্ট্রদূত শারলোতা স্লাইটার।
ঢাকার রমনায় ইঞ্জিনিয়ারস্ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আজ ২৫ জানুয়ারি শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জাতীয় পরিষদ সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। সভায় এবারের শ্লোগান ছিলো ‘সংগঠকের গুণগতমান বৃদ্ধি করি, সংগঠনের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করি’।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। বিশেষ অতিথি হিসেবে সভায় অংশগ্রহণ করেন ঢাকাস্থ সুইডেন দুতাবাসের মাননীয় রাষ্ট্রদূত শারলোতা স্লাইটার ও ইউ.এন. উইম্যান-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি শোকো ইশিকিয়া।
সভাপতির বক্তব্যে আয়শা খানম বলেন, সরকার ও রাজনীতিতে নারীর পদায়ন নয়, প্রকৃত অর্থে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন দরকার। দেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নারীদের সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশে উন্নীত করা এবং সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য নারীআন্দোলন দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে এবং সরকারসহ রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহে সুপরিকল্পিত সুপারিশ পেশ করে আসছে।
তিনি বলেন, বিশ্বায়নের প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের নারীর জীবনে যে ইতিবাচক বিষয়গুলো প্রভাব ফেলছে সেগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এছাড়া নারীর গৃহকাজের আর্থিক মূলায়ন না করলে দেশের জিডিপি সম্পূর্ণ হিসাবায়ন হয় না। সকল ক্ষেত্রে দেশের মূল ধারায় নারী একটি অনস্বীকার্য শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে, এই শক্তিকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে।
ঢাকাস্থ সুইডেন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত শারলোতা স্লাইটার বলেন, বাংলাদেশে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে সুশাসন একটি বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি বলেন, সুইডেনে সমাজ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নারী আন্দোলন বড় ভূমিকা রেখেছিল, বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তা হতে পারে। এখন থেকে একশ বছর আগে সুইডেনে নারীরা ভোটাধিকার অর্জন করেছে এবং বর্তমানে দেশের সংসদে এবং মন্ত্রী পরিষদে নারী ও পুরুষের সংখ্যা প্রায় সমান। এজন্য সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দরকার।
ইউ.এন. উইম্যান, বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ শোকো ইশিকিয়া বলেন, বাংলাদেশ প্রতিনিধি বৈশ্বিকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে #মিটু ম্যুভমেন্ট শুরু হয়েছে তা নারীর অধিকারের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশেও এই আন্দোলনের মাধ্যমে তরুণ সমাজের মধ্যে সাহস ও সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে এবং নারী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি বলেন, ২০২০ সালে অনুষ্ঠিতব্য বেজিং+২৫ এর পর্যালোচনার লক্ষ্যে বাংলাদেশে নারী আন্দোলন সময়োপযোগী পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন এবং এ কার্যক্রমে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সরকার এবং সামাজিক ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করতে পারে।