Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটিতে থাকছেন না মোশাররফ-মওদুদ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:৫৭ AM
আপডেট: ২৫ জানুয়ারী ২০১৯, ১২:২৪ PM

bdmorning Image Preview


জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে টানাপোড়েন স্টিয়ারিং কমিটিতে আসছে পরিবর্তন। কমিটিতে মতের গরমিলের কারণে অনেকেই কমিটিতে থাকতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাদের স্থলে নেয়া হচ্ছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্য দুই সদস্যকে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটিতে থাকতে চাচ্ছেন না বিএনপির স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরই দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে তাদের নাম।

সূত্র থেকে জানা যায়, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে থাকার বিষয়ে নিজেদের অনীহার কথা দলের হাইকমান্ডকে জানিয়ে দিয়েছেন। হাইকমান্ডও সব কিছু বিবেচনায় এতে সায় দিয়েছে। তাদের স্থলে নতুন দুজনকে স্টিয়ারিং কমিটিতে যুক্ত করা হচ্ছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম হচ্ছে স্টিয়ারিং কমিটি। এ কমিটির সদস্যরা আলোচনা করেই যে কোনো সিদ্ধান্ত নেন। এতে বিএনপিসহ শরিক সব দলের তিনজন করে প্রতিনিধি আছেন।

বিএনপি থেকে স্টিয়ারিং কমিটিতে রয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র), স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে এ কমিটির সদস্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপির অভ্যন্তরীণ জটিলতা এবং টানাপোড়েনে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটিতে থাকা নিয়ে নিজেদের অনীহা প্রকাশ করেন। 

তাদের এমন মনোভাব লন্ডনে থাকা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জানানো হলে দলের পক্ষ থেকে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ড. আবদুল মঈন খানকে স্টিয়ারিং কমিটির দায়িত্ব পালনের জন্য বলা হয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের আগামী বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘নো কমেন্টস’। এ ছাড়া আরও তিনজন স্থায়ী কমিটির সদস্যকে ফোন দেয়া হলে এ নিয়ে তারা কথা বলতে রাজি হননি।

জানা গেছে, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন শুরু থেকেই বিএনপির প্রতি ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মনোনয়ন ইস্যুসহ নানা বিষয়ে ‘চাপ’ মেনে নিতে পারছিলেন না। তিনি বিষয়টি নিয়ে দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা এবং বিএনপির বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে আলাপও করেছেন।

এমনকি বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে মোশাররফের একটি কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েও পড়ে। যাতে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের টানাপোড়েনের বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে।

এর পর থেকে তিনি ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির আর কোনো বৈঠকে অংশ নেননি। নির্বাচনের আগে ঐক্যফ্রন্টের কোনো প্রার্থীর প্রচারেও দেখা যায়নি বর্ষীয়ান এ নেতাকে। তিনি ব্যস্ত থেকেছেন নিজ নির্বাচনী এলাকা কুমিল্লায়।

বিএনপির রাজনীতিতে খন্দকার মোশাররফ ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের গাঁটছড়া পুরনো। ‘ম’ অদ্যাক্ষরের এ দুই নেতা প্রায়ই দলীয় নানা ইস্যুতে একই মত দিয়ে থাকেন। তাদের মধ্যে মতের অমিল খুব একটা পাওয়া যায় না। ব্যারিস্টার মওদুদ কেন ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটিতে থাকতে চাইছেন না তা স্পষ্ট নয়। ধারণা করা হচ্ছে খন্দকার মোশাররফের প্রতি সংহতি জানাতেই তিনি এই কমিটিতে থাকতে চাইছেন না।

এদিকে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটি পুনর্গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে ঐক্যফ্রন্টের শরিক দল নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটির দুজন সদস্যকে নতুন করে স্টিয়ারিং কমিটিতে নেয়ার বিষয়ে শুনেছি। বিএনপির পক্ষ থেকে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে এ রকম একটি কথা বলা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ড. আবদুল মঈন খানকে স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য করার বিষয়টি স্বীকার করে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, হ্যাঁ এ রকম হয়েছে। কারণ অনেক কাজ তো থাকে তাদের। এ জন্য হয়তো তারা সংখ্যাটা বাড়িয়ে নিল।

তবে ঐক্যফ্রন্টের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দুজনের পরিবর্তে দুজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

Bootstrap Image Preview