Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৪ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মন্ত্রীর তোপের মুখে চুপ ওয়াসার এমডি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৬:১৭ PM
আপডেট: ২৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৬:১৭ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


সাংবাদিকদের ওয়াসা ভবনে ঢুকতে না দেওয়ায় ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় অবস্থিত ওয়াসা ভবনে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে এলজিআরডি মন্ত্রীর মতবিনিময় সভা চলাকালে এ পরিস্থিতে পড়তে হয় তাকে। এসময় এমডি তাকসিম চুপ ছিলেন।

এসময় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ছাড়াও এ মন্ত্রণালয়ের সচিব এসএম গোলাম ফারুক ও ওয়াসার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের দাওয়াত দিয়ে ভবনে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না-এমন অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মন্ত্রী সাংবাদিকদের ডেকে পাঠান। সাংবাদিকরা সভায় আসার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওয়াসা এমডিকে প্রশ্ন করেন, কেনো গণমাধ্যম কর্মীদের এখানে আসতে দেননি। আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলতে চাই। আপনি এ ধরনের আচরণ করতে পারেন না।

একই সময় শূন্যপদে নিয়োগ না দিয়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ায় ওয়াসা সিবিএ নেতারা ওয়াসা ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। তারা এমডির বিরুদ্ধে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে নানা স্লোগান দেন।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, কাউকে বাইরে রেখে কিছু করতে চাই না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে দেশটাকে এগিয়ে নিতে চাই। ওয়াসা চরম অবহেলা-অব্যবস্থাপনায় চলেছে। আর এ অবস্থায় দেখতে চাই না। সবার জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

তবে, এ ব্যাপারে সাংবাদিকরা এমডিকে প্রশ্ন করতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আজ আমি উপস্থিত আছি, আজ না। তবে আমি সাংবাদিকসহ সবার কথা শুনতে চাই। আমাকে ব্যক্তিগতভাবে জানাবেন, আপনাদের স্বাগত জানাবো।

আমরা সবাইকে সমান সেবা দিতে চাই। আমাদের জন্য একদিন জ্বালানী ও বিদ্যুৎ ছিল চ্যালেঞ্জ জানিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, আগামীতে আমরা অনেক দৃশ্যমান কিছু দেশকে দিতে চাই। দেশকে একটি ভিন্ন অবস্থায় নিয়ে যেতে চাই।

বৃহস্পতিবার(২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ ঢাকা ওয়াসা-এর দাপ্তরিক ও উন্নয়ন কার্যক্রম পর্যালোচনা, পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, সামনের দিনে বিশুদ্ধ পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। আমাদেরকে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, অনেক দিনের অবজ্ঞা, অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার কারণে নাগরিক সেবা প্রদানকারী সংস্থার উপর মানুষের আস্থা উঠে গেছে। এখন আর পেছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই। নতুন উদ্যমে, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় ও দুর্নীতিমুক্ত থেকে নাগরিকদের সেবা দিতে হবে। এ বিষয়ের ব্যতয় ঘটলে কোন ছাড় দেয়া হবে না।

ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশে নাগরিক ভোগান্তির জন্য মূলত অব্যবস্থাপনা দায়ী বলে জানিয়েতাজুল ইসলাম আরো বলেন, আমরা শুধু শহরে নয় গ্রামেও সকল নাগরিক সুবিধা পৌঁছানোর অঙ্গীকার নিয়ে ক্ষমতায় এসেছি। সকল ধরণের নাগরিক ভোগান্তি হ্রাস করে বসবাসযোগ্য পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অবহেলা-অব্যবস্থাপনা দূর করতে হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে করণীয় ঠিক করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহের সাথে আমরা শীঘ্রই বসবো। আশা করি ঢাকাবাসী একটি কার্যকর সমাধান উপহার পাবে।

মন্ত্রী ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা অতীতের ত্রুটি-বিচ্যুতির ব্যাপারে সতর্ক না হলে পরিণতি ভালো হবে না। আমরা অনেক দূরে যেতে চাই, আর অন্যায় সহ্য করা হবে না। আপনাদের যার যেখানে দুর্বলতা আছে তা এক্ষুনি শোধরান, তা না হলে পরিণতি খারাপ হবে। আর কোনো অন্যায় সহ্য করা হবে না। অব্যবস্থাপনার কারণে আমাদের অগ্রগতি অনেক বাধাগ্রস্ত হয়েছে, আর নয়।

মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, ঢাকা ওয়াসা ঢাকা মহানগর ও নারায়ণগঞ্জ শহরের ৪০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ১ কোটি ৭০ লক্ষ নাগরিকের জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ করছে। দৈনিক ২ শত ২০ কোটি লিটার পানির চাহিদার বিপরীতে বর্তমানে ২৪২ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছে। ঢাকা ওয়াসার সিস্টেমলস বর্তমানে শতকরা ২০ ভাগের নিচে নেমে এসেছে। ভূ-উপরিভাগের পানির উৎস হতে পানি সরবরাহের লক্ষ্যে ৪৫ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে পদ্মা-যশোলদিয়া পানি শোধনাগার প্রকল্প, ৭০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগার ও ৫ কোটি ৫ লক্ষ মার্কিন ডলার ব্যয়ে তেতুঁলঝরা-ভাকুর্তা ওয়েফিল্ড প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে বলে জানানো হয়।

সভায় ২০২৮ সালের মধ্যে ১৮৫ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার ফেজ-৩, পদ্মা-যশোলদিয়া পানি শোধনাগার ফেজ-২ ও গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগার ফেজ-২ প্রকল্প গ্রহণ করা হবে বলে অবহিত করা হয়। পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য স্যুয়ারেজ মাস্টার প্ল্যানের আওতায় দাশেরকান্দি, মিরপুর, উত্তরা, রায়ের বাজার, পূর্বাচল, পাগলা, নারায়ণগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, সাভার, টঙ্গী ও গাজীপুরে মোট ১১ টি স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনে প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে বলে অবহিত করা হয়।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এস এম গোলাম ফারুক, ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোঃ হাবিবুর রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার তাকসিম এ. খানসহ মন্ত্রণালয় ও ঢাকা ওয়াসার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।

Bootstrap Image Preview