Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৪ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ৩১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

অবৈধ ইটভাটায় ক্ষতিগ্রস্ত নবাবগঞ্জ

সৈয়দ রোকনুজ্জামান রোকন, নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৬:০০ PM
আপডেট: ২৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৬:০০ PM

bdmorning Image Preview


দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় কৃষিজমি ও জনবসতি এলাকায় ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এসব ইটভাটার নিবন্ধন ও পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্রও নেই। তারপরও বছরের পর বছর ধরে ইটভাটাগুলো চালু রয়েছে। ওইসব ইটভাটাগুলোতে অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ ও খড়ি। এতে একদিকে যেমন রাস্তার দুই ধার বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছে অন্যদিকে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। 

কথিত ইটভাটা মালিক সমিতি প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের কর্তা ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে ইটভাটাগুলো চালু রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেয়া হয় না এমন অভিযোগও রয়েছে স্থানীয়দের।

তবে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মশিউর রহমান উপজেলার রামপুর এলাকার বাবা ব্রিক্স প্রোঃ রুমি আক্তার নামে অবৈধভাবে নব-নির্মিত একটি ইটভাটা গুড়িয়ে দিয়েছিলেন। এছাড়া ওই এলাকায় কাগজপত্র না থাকায় ইউএনওর নির্দেশে আইনকে শ্রদ্ধা করে নিজের হাতে তৈরি করা ইটভাটা গুড়িয়ে দিয়েছেন আরেক ইটভাটা মালিক।

সম্প্রতি সরেজমিন ইটভাটাগুলো ঘুরে দেখা যায়, এই উপজেলার অধিকাংশই ইটভাটা কৃষিজমি ও জনবসতি এলাকায় গড়ে উঠেছে। এসব ইটভাটাগুলোতে শত শত মণ কাঠ ও খড়ির স্তুপ করে রেখে অবাধে কাঠ ও খড়ি পোড়ানো হচ্ছে।
ভাটাগুলো হচ্ছে হেয়াতপুর এলাকার আবু শাহাদৎ সায়েম, পত্নীচান গ্রামের সিরাজুল, কাশিপুর আমতলার মোসলেম, মিঠাপুকুর গ্রামের মোস্তাফিজুর, খলিশা গ্রামের রফিকুল, আমিনুল, আনোয়ার, রতন ও রামভাদ্রপুর এলাকার মিঠুর ভাটা।

আবু শাহাদৎ সায়েমের এসআরবি ব্রিক্স নামের অবৈধ ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর অপরাধে গত বছর এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছিল। তারপরও থেমে নেই খড়ি দিয়ে ইট পোড়ানো। ভাটামালিক সোহরাওয়ার্দী বাবুলের মৃত্যুর পর হাল ধরেছেন তার ছেলে আবু শাহাদৎ সায়েম। তার অবৈধ ইটভাটাটি দাউদপুর বাজারের পূর্বপাশে হেয়াতপুর মৌজায়।

এলাকাবাসীর দাবি, অবৈধ এসআরবি ইটভাটার কারণে তাদের বিভিন্ন ফলের বাগানে আশানুরূপ ফল হচ্ছে না। শিশুদের নানা রোগবালাই লেগেই আছে।

এসব ইটভাটা অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন সময় নির্দেশ দিয়েছিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তা অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়নি।

ইটভাটা সংলগ্ন বাড়ির মালিকরা জানান, ইটভাটার কারণে তাদের ফলদ গাছগুলো নষ্ট হয়েছে। মাঠের ফসলেরও ক্ষতি হচ্ছে। এ বিষয়টি তারা স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কোনো ফল পাননি।

নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও কেন ইটভাটাগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেননি এমন প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইটভাটার মালিক বলেন, আইন মেনেই ইটভাটা করেছিলাম। কেউ আমার ওপর বিরাগভাজন হয়ে এই কাজটি করিয়েছেন। তার ইটভাটাটি আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব বলে তিনি জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি ইটভাটার মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অধিকাংশই ইটভাটার পরিবেশ অধিদফতর ছাড়পত্র ও নিবন্ধন নেই। প্রতিবছর ইটভাটা চালুর পরপরই উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতিকে তাদের মোটা অঙ্কের চাঁদা দেন। ইটভাটা মালিক সমিতির কর্তা ব্যক্তিরা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের লোকজনকে খুশি রাখেন।
 

Bootstrap Image Preview