Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১২ রবিবার, মে ২০২৪ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আবজাল দম্পতির বাড়ি-গাড়ি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারী ২০১৯, ১১:১৩ AM
আপডেট: ২৩ জানুয়ারী ২০১৯, ১১:১৩ AM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


অবৈধভাবে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রী রুবিনা খানমের নামে থাকা ২৫টি বাড়ি-প্লট ও জমি জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এছাড়াও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, এবি ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাদের নামে থাকা কয়েকটি অ্যাকাউন্ট এবং রুবিনার নামে থাকা ২০০০ সিসির ‘টয়োটা হ্যারিয়ার’ একটি গাড়িও জব্দ করা হয়েছে।

আবজালের স্ত্রী রুবিনা খানম (কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক স্টোনোগ্রাফার) এবং আবজাল হোসেনের দুই ভাই ফরিদপুর টিবি হাসপাতালের ল্যাব সহযোগী মো. বেলায়েত হোসেন ও মো. লিয়াকত হোসেন এবং আবজালের তিন শ্যালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাখালী অফিসের গাড়িচালক মো. রফিকুল ইসলাম, একই অফিসের উচ্চমান সহকারী মো. বুলবুল ইসলাম ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অফিস সহকারী মো. শরিফুল ইসলাম পরস্পর যোগসাজসে শত শত কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন বলে প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে দুদকের অনুসন্ধানে। এরপরই দুদক এইসব সম্পত্তি জব্দ/ক্রোক ও স্থীতিতাদেশ চায় আদালতের কাছে।

এদিকে আবজালের ভাই ও শ্যালকরা মঙ্গলবার দুদকে হাজির না হয়ে সময় চেয়ে আবেদন করেন।

মঙ্গলবার বিশেষ জজ আদালত এ নির্দেশ দেন বলে জানান দুদকের উপ পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য।

দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদের তথ্য পাওয়ার গেছে। আদালতের আদেশ নিয়ে তাদের সম্পত্তি জব্দ করা হয়েছে। জব্দ করা ২৫টি বাড়ি-প্লটের মধ্যে ১৫টি ঢাকায়।

আবজাল হোসেন ১৯৯৫ সালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি আঞ্চলিক প্রকল্পে ‘অফিস সহকারী’ পদে অস্থায়ীভাবে যোগ দেন। পরে তিনি হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে অধিদফতরের মহাখালী এডুকেশন শাখায় কর্মরত ছিলেন। তার স্ত্রী রুবিনা খানম একই অধিদফতরের আরেকটি আঞ্চলিক প্রকল্পে ‘স্টেনোগ্রাফার’ পদে দুই বছর চাকরি করে স্বেচ্ছায় অবসরে যান। এরপর তিনি একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নানা রকমের কাজ করতেন।

সম্প্রতি আবজালকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়। দুর্নীতি বিষয়ে সত্যতা পাওয়ার পর আবজাল হোসেনকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে তাদের দুই লাখ ডলারে বাড়ি কেনার বিষয়টিও নিশ্চিত হয়।

আবজাল হোসেনের জব্দ করা সম্পদের মধ্যে রয়েছে ঢাকার উত্তরার ১৫/সি নম্বর সেক্টরে তিন কাঠা জমির ২৪ নম্বর প্লট, উত্তরার ১৫/সি নম্বর সেক্টরে তিন কাঠা জমির ২৬ নম্বর প্লট, খিলক্ষেতে তিন কাঠা জমি, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় চার কাঠার প্লট, মিরপুরে আড়াই কাঠা জমির ওপর টিনসেড বাড়ি, পল্লবীতে ছয় কাঠা জমি, ফরিদপুরের কোতয়ালী পৌরসভা মৌজা এলাকায় সাড়ে ১০ শতাংশ জমিতে দোতলা বাড়ি, একই এলাকার রঘুনন্দনপুর মৌজায় সাড়ে ১৩ শতাংশ জমি, জেলার পশ্চিম টেপাখোলা এলাকায় ১১৩ শতাংশ জমি, রাজবাড়ী জেলার বসন্তপুর ইউনিয়নে ২৩০ শতাংশ জমি, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের খালিশপুর বয়রা মৌজায় সাড়ে পাঁচ কাঠা জমি, একই সিটি কর্পোরেশনের মুজগুন্নি আবাসিক এলাকায় সাড়ে তিন কাঠা প্লট।

এছাড়াও দুদক রুবিনার নামে থাকা ঢাকার মিরপুরে একটি টিনসেড বাড়ি, পল্লবীতে আড়াই কাঠা জমি, বসুন্ধরা আবাসিক প্রকল্পের ৩০৬৭ নম্বর ব্লকে তিন কাঠার একটি প্লট, বসুন্ধরা আবাসিক প্রকল্পের ৩০৬৬ নম্বর ব্লকে তিন কাঠার একটি প্লট, ঢাকার কেরাণীগঞ্জের একটি মার্কেটে দোকান, রাজধানীর উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কে সাড়ে তিন কাঠা প্লটে ছয়তলা বাড়ি, উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর সড়কে তিন কাঠা প্লটে ছয়তলা বাড়ি, ঢাকার সাভারে ১৫ শতাংশ জমি, ফরিদপুরের কোতয়ালী পৌরসভার হাবেলী গোলাপপুরে দোতলা বাড়ি, একই জেলার চর পশ্চিম টেপাখোলা এলাকায় আট শতাংশ জমি, জেলার একই এলাকায় আরেকটি নয় শতাংশ জমি, জেলার একই এলাকায় সাড়ে পাঁচ শতাংশের আরেকটি জমি জব্দ করা হয়েছে।

Bootstrap Image Preview