মোঃ হারুন-উর-রশীদ, দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনমমজুরি নাম ইয়াকুব আলী, জাতীয় পরিয়চপত্রে তার বয়স ৫২ বছর কিন্তু তার মায়ের হিসাব অনুযায়ী তার বয়স ৬২ বছর। সে সময়ের সেখানকার প্রাইমারী শিক্ষক তার বয়স ঠিকমত যাচাই বাছাই না করে এবং কারো কাছে না শুনে, মনগড়া বয়স জাতীয় পরিচয়পত্রে তৈরী ফরমে তুলে দিয়ে তার বয়স করে দেয় ৫২ বছর। আর সে কারণেই সরকারের বরাদ্দকৃত বয়স্ক ভাতার কার্ড তার পাওয়া সম্ভব হয়নি।
১৯৭৪ সাল থেকে পায়ে হেটে জেলার বিভিন্ন শহরে এসে ফেরি করে বিক্রয় করছে বাঁসের তৈরী ডালি, কুলা, খলাই ইত্যাদি। শিক্ষক কর্তৃক যে বয়স তার ভাগ্যে জুটেছে তাতে তার ঘোর আপত্তি, কিন্তু কি করে তার সমাধান পাবে তা তার জানা নাই।
ইয়াকুব আলীর বাড়ী দিনাজপুর পার্বতীপুর ১০নং হরিরামপুর ইউনিয়ানের পাটিকাঘাট ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা, ১৯৭৪ সাল থেকে সে অদ্যবধি বাঁসের তৈরী সামগ্রী বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। তার দুই পুত্র, এক স্ত্রী, ছয়জন নাতি নাতনী থাকলেও অভাবের কারণে তার দুই ছেলে তাদের বৌ বাচ্চা নিয়ে আলাদা খায়। আর ই্য়াকুব আলী এখনও আগের মতোই নিজে কামাই করে চলছে। এই ষার্ট উর্ধ বয়সের এই লোকটি প্রতিদিন জীবন জীবিকার তাগিদে বাঁসের তৈরী সামগ্রী ডালি, কুলা নিয়ে পায়ে হেঁটে চলতে হয় প্রায় ২০ কিলোমিটার যা বর্তমানে অনেক অল্প বয়সের মানুষের দ্বারা চলা অসম্ভব।
ইয়াকুব আলী পাকিস্তান অমলে ক্লাস টু পর্যন্ত পড়েছে তাই তার সকল কথার মাঝে হালকা করে ইংলিশ শব্দ বসিয়ে কথা বলে, তার এই রসিক সুলভ কথা গুলো শুনে অনেকে আনন্দ পায়। সে তার ব্যবসার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার মোড়ে স্বাধিনতা যুদ্ধের কাহিনি তুলে ধরে জারি গান গায়। তার সংক্ষিপ্ত এই জারি গানের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম একটু হলেও জানতে পারে বাংলাদেশের স্বাধীনতা কিভাবে এসেছে। সাধামাটা ভাবে তার গাওয়ায় শ্রতাকে বেশি আর্কষিত করে।