মৌসুমি বায়ু পরিবর্তনের পালাবদলের সাথেই পৌষের হাড় কাঁপানো শীতেও বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি পরজয়া পাখির আগমনে মুখরিত ও অভয়াশ্রমে পরিনত হয়েছে শার্শার পদ্মবিল। পঞ্চাশ গজ দূরেই ওপারে ভারতের কাটাতারের বেড়া, পাশেই সবুজ বেষ্টনীতে ঘেরা শার্শা উপজেলার দুর্গাপুরের ৬৫ বিঘার জমিতে বিশাল জলাশয় পদ্মবিলে হরেক রকম পাখির অভ্যারন্য গড়ে উঠেছে। নিরিবিল মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা অভয়াশ্রমে পাখির কলতানে মুখরিত এলাকা। প্রতিদিন এ দৃশ্য উপভোগ করছে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পাখিপ্রেমী মানুষেরা।
দূর্গাপুর গ্রামের হাজী গোলাম মোর্সেদের ভেড়ীবাধের জলাশয়ে চরছে সরাইল, পানকৌড়ি, ডংকুর, বেগ ও কাসতেচুড়া। উড়ছে তারা আকাশ নীড়ে। পাখির কিচির মিচিরে মুগ্ধ হচ্ছে মানুষ।
পাখির অভায়রন্যে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছে নারী শিশুসহ দর্শনার্থীরা। উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক দৃশ্য। নিরাপদ ও এলাকাবাসির করা নজরদারী থাকায় সবুজ বেষ্টনীতে ঘেরা জলাশয়ে পাখির অভয়ারন্য গড়ে উঠেছে বলে জানান স্থানীয়রা।
দেশি ও বিদেশি জাতের-বিভিন্ন স্থান থেকে ঝাকে ঝাকে আসছে অতিথি পাখি। দেখছে সবাই প্রাণভরে, মন জুড়াচ্ছে ঘুরে ফিরে। গ্রাম ও শহর থেকে আসছে মানুষ অতিথি পাখির অভয়াশ্রমে। প্রকৃতির দৃশ্য ও পাখির আওয়াজ দেখছে তারা প্রাণ খুলে।
পাখির কিচিরমিচিরে মুগ্ধ দর্শনার্থী আব্দুল জববার ও আলী হোসেন বলেন, শিশু যেমন মাতৃক্রোড়ে সুন্দর তেমনি, পাখি সুন্দর বনে জলাশয়ে নির্জনে। এ অভয়াশ্রমে এসে পুলকিত তারা।
তবে নাজুক যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে কম দর্শনার্থী আসছে বলে জানান স্থানীয়রা। এ গ্রামের শামিম হোসেন ও আরমান আলী বলেন, উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে আসেনি আজও। নেয়নি খোঁজ-খবর। উপজেলা প্রাণীসম্পদ ও বন বিভাগের সহযোগিতা কামনা করেন তারা।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি (লক্ষনপুর ই্উনিয়ন পরিষদ) আনোয়ারা বেগম জানান, পাখির এ অভয়াশ্রম রক্ষায় গ্রামবাসি কাজ করছেন। পদ্মবিল পরিদর্শন করেছেন তিনি। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় বিষয়টি সুরাহে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে তিনি।
শার্শা উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা জয়দেব কুমার সিংহ বলেন, সন্ধায় আসে হাজার হাজার পাখি। সকালে খাদ্যের সন্ধানে ফিরে যায় তারা। তবে উপজেলায় অনেকস্থানে পাখি শিখারীরা ফাঁদ ও ইয়ারগান দিয়ে করছেন পাখি শিকার। ফলে পরিবেশে বিরুপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকছে। তবে পদ্মবিলসহ বিভিন্ন এলাকায় পখি সংরক্ষণে কাজ করছেন উপজেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগ।