Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২১ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

তীব্র পানি সঙ্কটে লাউয়াছড়া ও সাতছড়ি উদ্যানের বন্যপ্রাণীরা

হৃদয় দেবনাথ, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ০৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০৯:০২ PM
আপডেট: ০৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০৯:০২ PM

bdmorning Image Preview


তীব্র খাওয়ার পানির সঙ্কটে পড়ছে মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া এবং হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বন্যপ্রাণীরা। দিন দিন ছড়া, খাল, জলাভূমিগুলোতে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় এ সঙ্কটে পড়ছে বন্যপ্রাণীরা। দিন দিন নিচে নামছে পানির স্তর। তৃষ্ণা মেটাতে বন্যপ্রাণীরা লোকালয়েও দিগ্বিদিক ছুটা-ছুটি করতে গিয়ে আহত হচ্ছেন অনেক বন্যপ্রাণী, আবার ট্রেনে কাটা পড়ে কিংবা গাড়ি চাপায় মারাও যাচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, লাউয়াছড়া ও সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বিরল প্রজাতির উল্লুকসহ বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল। বনের ভেতরে সবকটি ছড়া শুকিয়ে যাওয়ায় প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ জাতীয় উদ্যানসমূহে বন্যপ্রাণীর খাওয়ার পানি সঙ্কট তীব্র হয়ে উঠেছে। বন্যপ্রাণীর খাওয়ার পানি যোগাতে লাউয়াছড়ায় দুটি ও সাতছড়ি উদ্যানে তিনটি সংরক্ষণাগার তৈরি করা হয়েছে। বিশাল বনের বন্যপ্রাণীদের তৃষ্ণা মেটাতে দু-একটি জলাধার পর্যাপ্ত নয় বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

শ্রীমঙ্গলস্থ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সীতেশ রঞ্জন দেব পানি সংকটের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কিছুদিন আগে বন্যপ্রাণীদের খাওয়ার পানি সংকট ছিল প্রকট। বন্যপ্রাণী উন্মুক্ত স্থানে পানি পান করে না। সাধারণত এরা বন-জঙ্গলের ঝোপজঙ্গলে, গর্ত, নালার পাশের পানি খেয়ে থাকে।

পরিবেশবিদদের মতে, নদীমাতৃক এই দেশের নদ-নদী, খাল-বিল, হাওরসহ এর জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য পরিষ্কার ও নিরাপদ পানি সরবরাহের উপরও নির্ভরশীল। জীববৈচিত্র্য জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এবং দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খরা, বন্যা ও সুনামির মতো চরম বিপর্যয়ের প্রভাব হ্রাসে বনভূমি, জলাভূমি ও ম্যানগ্রোভ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পাহাড় রক্ষা উন্নয়ন কমিটির সভাপতি সালাউদ্দিন আহমেদ বিডিমর্নিংকে, শুষ্ক মৌসুমে উদ্যানের ভেতরে ছড়া ও জলাশয়সমূহ শুকিয়ে যায়। লাউয়াছড়ায় দু-একটি স্থানে কিছু পানি থাকলেও সাতছড়ি উদ্যানে সমস্তটাই শুকিয়ে পড়ে। জাতীয় উদ্যানে বন্যপ্রাণীর খাবার পানির সংকট মোকাবিলায় সাতছড়ি উদ্যানে তিনটি ও লাউয়াছড়া উদ্যানে দুটি পানি সংরক্ষণাগার তৈরি করা হয়েছে বলে শুনেছি। এসব সংরক্ষণাগার থেকে পাইপের মাধ্যমে অন্যত্র পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে বন্যপ্রাণীর জন্য এগুলো মোটেই পর্যাপ্ত নয়। বন্যপ্রাণীর খাওয়ার পানি সংরক্ষণাগারের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করা দরকার।

এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আবু মুসা শামসুল মুহিত এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বিডিমর্নিংকে বলেন, উদ্যানে বন্যপ্রাণীর খাবার পানির সংকট মোকাবিলায় সাতছড়ি উদ্যানে তিনটি ও লাউয়াছড়া উদ্যানে দুটি পানি সংরক্ষণাগার তৈরি করা হয়েছে। এগুলো যথেষ্ট নয় বলেও স্বীকার করেন তিনি।

Bootstrap Image Preview