Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৫ বুধবার, মে ২০২৪ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চাল ব্যবসায়ী থেকে খাদ্যমন্ত্রী হলেন সাধন চন্দ্র মজুমদার

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০৩:১৫ PM
আপডেট: ০৭ জানুয়ারী ২০১৯, ০৩:১৮ PM

bdmorning Image Preview


একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তৃতীয়বারের মতো মন্ত্রী পরিষদ গঠন করতে চলেছে আওয়ামী লীগ। এবারের মন্ত্রীসভায় যুক্ত হয়েছেন অনেক নতুন মুখ। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নওগাঁ-১ (নিয়ামতপুর-পোরশা-সাপাহার)  আসন থেকে ৩ বারের নির্বাচিত সাধন চন্দ্র মজুমদার হচ্ছেন নতুন খাদ্যমন্ত্রী। এ খবরে উচ্ছ্বসিত তার নির্বাচনী এলাকাসহ জেলাবাসী। জেলার বিভিন্ন স্থানে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন আ'লীগ নেতাকর্মীরা।

সাধন চন্দ্রের পৈত্রিক বাড়ি জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার হাজীনগর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে। তবে নওগাঁ শহরের পোস্ট অফিস পাড়ায় সপরিবারে বসবাস করেন তিনি। বাবা মৃত কামিনী কুমার মজুমদার ও মা মৃত সাবিত্রী বালা মজুমদার।

চার কন্যা সন্তানের জনক সাধন চন্দ্র। বড় মেয়ে সোমা মজুমদার ও সেজ মেয়ে কাদেরী মজুমদার ব্যাংকার, মেজ মেয়ে কৃষ্ণা মজুমদার পেশায় চিকিৎসক এবং ছোট মেয়ে তৃণা মজমুদার প্রকৌশলী।

অত্যন্ত সৎ ও নিষ্ঠাবান হিসেবে সাধন চন্দ্রের সুখ্যাতি রয়েছে সর্বত্রই। আপামর সাধারণ মানুষের মাঝেও তিনি পরম শ্রদ্ধার পাত্র। মধ্যবিত্ত পরিবারের পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ। বাবা ধানের ব্যবসা করতেন। ছাত্রজীবন থেকেই সাধন রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।

১৯৮৪ (৮৪-৮৮) সালে নিজ জন্মভূমি হাজীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। এরপর ১৯৮৯ সালে দ্বিতীয় পর্যায়ে নিয়ামতপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ডা. ছালেক চৌধুরীর কাছে পরাজিত হন আওয়ামী লীগের সাধন চন্দ্র মজুমদার। তবে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেই ডা. ছালেক চৌধুরীকেই পরাজিত করে বিজয়ী হন সাধন।

এরপর ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ঐক্যফ্রন্টের মোস্তাফিজুর রহমানকে পরাজিত করে তৃতীয়বারের মতো বিজয়ী হন তিনি।

স্মৃতিচারণ করে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এ কে এম ফজলে রাব্বি বলেন, সাধন চন্দ্র মজুমদার কৃষক পরিবারেই বেড়ে উঠেছেন এবং তিনি নিজেও কৃষি পেশায় নিয়োজিত। কাজের উপযুক্ত ক্ষেত্র তিনি পেয়েছেন। তার হাত ধরে শুধু নওগাঁ নয়, সারা দেশে কৃষি ও কৃষকের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে বলে আমার বিশ্বাস।

নওগাঁ ধান-চাউল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরোদ বরণ সাহা চন্দন বলেন, বাংলাদেশের চালের যোগানের একটি বড় অংশ আসে উত্তরের জেলাগুলো থেকে, ওই জেলাগুলোর মধ্যে নওগাঁ অন্যতম। সেখান থেকে এই পেশায় জড়িত একজনকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া, তিনি পূর্বসূরিদের চেয়ে ভালো করবেন।

তিনি বলেন, খাদ্য ভাণ্ডারের মধ্যেই তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। তাকে খাদ্যমন্ত্রী নিয়োজিত করার বিষয়টি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। আমি মনে করি, ইতোপূর্বে দায়িত্বপ্রাপ্ত খাদ্যমন্ত্রীদের চেয়ে সাধন চন্দ্র মজুমদার অবশ্যই ভালো করবেন।

ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত সাধন স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে থাকার পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাধনের যাত্রা শুরু হয় নিজের ইউনিয়ন হাজীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। এরপর আশির দশকে এরশাদ আমলে আওয়ামী লীগের সমর্থনেই নিয়ামতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি।

পরে কয়েক দফায় নওগাঁ-১ আসনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গেলেও ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে সংসদে আসেন সাধন। পরে ২০১৪ সালের দশম সংসদ ও গত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের নির্বাচিত হন তিনি।

সাধন চন্দ্র মজুমদার সাংসদ হওয়ার পর ‘ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চল’ হিসাবে পরিচিত নিয়ামতপুর-সাপাহার ও পোরশা এলাকায় বৃক্ষরোপনে জোর দেন। পাশাপাশি রাস্তা-ঘাঁট, ব্রিজ-কালর্ভাট, স্কুল-কলেজ মাদ্রাসাসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে এলাকায় প্রশংসিত হন তিনি। এলাকার মানুষের কাছে ভদ্র, বিনয়ী ও মিষ্ঠ ভাষী হিসেবে পরিচিতি রয়েছে তার।

তাকে মন্ত্রী করায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিভাষ চন্দ্র মজুমদার বলেন, শেখ হাসিনা একজন যোগ্য ব্যক্তিকে মন্ত্রিপরিষদে ঠাঁই দিয়েছেন।

নওগাঁ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ইকবাল শাহারিয়ার রাসেল জানিয়েছেন, নওগাঁ খাদ্য উদ্বৃত্ত জেলা- এ বিষয়টি চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধন চন্দ্র মজুমদারকে খাদ্যমন্ত্রী নিযুক্ত করার সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Bootstrap Image Preview