Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ শনিবার, মে ২০২৪ | ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

'আমাদের আবেগ ও অনুভূতির নাম সৈয়দ আশরাফ'

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ জানুয়ারী ২০১৯, ০১:৪৬ PM
আপডেট: ০৬ জানুয়ারী ২০১৯, ০১:৪৬ PM

bdmorning Image Preview


বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একজন গৌরব উজ্জ্বল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। জাতীয় চার নেতার অন্যতম সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম একজন আপাদমস্তক রাজনীতিবিদ ছিলেন। স্বচ্ছ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে তিনি ছিলেন সকলের শ্রদ্ধার পাত্র। 

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৭১ সালের দেশের জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন তিনি।  

১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্য তিন জাতীয় নেতার সঙ্গে আশরাফুলের পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছিল। পিতার মৃত্যুর পর সৈয়দ আশরাফুল যুক্তরাজ্যে চলে যান এবং লন্ডনের হ্যামলেট টাওয়ারে বসবাস শুরু করেন।

লন্ডনে বসবাসকালে তিনি বাংলা কমিউনিটির বিভিন্ন কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন। সে সময় তিনি লন্ডনস্থ বাংলাদেশ যুব লীগের সদস্য ছিলেন। আশরাফুল ফেডারেশন অব বাংলাদেশি ইয়ুথ অর্গানাইজেশন (এফবিওয়াইইউ) এর শিক্ষা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিল।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে এসে কিশোরগঞ্জ-১ (সদর) আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। চারবার কিশোরগঞ্জ-১ (সদর) এবং সংস্কারকৃত কিশোরগঞ্জ- ১ (সদর ও হোসেনপুর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। তিনি প্রথমে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এবং পরে দলের মুখপাত্র এমনকি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে সর্বশেষ জনপ্রশাসনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে খুব কাছে থেকে দেখা কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ পারভেজ সৈয়দ আশরাফকে নিয়ে স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে কান্না জড়িত কণ্ঠে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সৈয়দ আশরাফ বলতেন- ‘আওয়ামী লীগ আমার অনুভূতির নাম’। আর আমরা কিশোরগঞ্জবাসী বলি, সৈয়দ আশরাফ আমাদের কিশোরগঞ্জবাসীর আবেগ ও অনুভূতির নাম, আমাদের হৃদস্পন্দনের নাম। এসব বলতে বলতে একপর্যায়ে কেঁদে ফেলেন তিনি।

তিনি বললেন, আমাদের মাথার ওপরের আকাশটা সরে গেছে।

সৈয়দ আশরাফের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও রণাঙ্গনের সাথী কিশোরগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদ্য বিদায়ী কমান্ডার মো. আসাদউল্লাহ বললেন, সততার প্রতীক রাজনীতিক সৈয়দ আশরাফ খুবই মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন ও হৃদয়বান মানুষ ছিলেন। ভুল চিকিৎসার কারণে আমার ক্যান্সার হয়েছে বলা হলে ভারতে গিয়ে চিকিৎসার জন্য আমাকে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছিলেন। এমনকি আমাদের কিশোরগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধাদের বসার একটি ভালো স্থান ছিল না, তার সহযোগিতায় দেশের প্রথম বহুতল মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স কিশোরগঞ্জে নির্মিত হয়। এ ভবনটি তিনি এসে উদ্বোধন করবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। আমরা আশা করেছিলাম তিনি সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আমাদের এ কমপ্লেক্স উদ্বোধন করবেন। কিন্তু আমাদের সেই স্বপ্ন, স্বপ্নই রয়ে গেল।

ছাত্রজীবন ও রাজনৈতিক জীবনের সঙ্গী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান বললেন, সৈয়দ আশরাফ তার শহীদ পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামের সুযোগ্য উত্তরাধিকার ছিলেন। এখানে না উল্লেখ করলেই নয় যে, সামরিক বাহিনী সমর্থিত বিগত ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের সময় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়ে কারাগারে অন্তরীণ হলে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়ে আওয়ামী লীগ।

Bootstrap Image Preview