Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৮ বুধবার, মে ২০২৪ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কাঁচামালের অভাবে হারাতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্প

রাজকুমার সেন, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ০৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৫:০৮ PM
আপডেট: ০৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৫:০৮ PM

bdmorning Image Preview


মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মনিপুরী তাঁত পল্লীগুলোতে সুতা না পাওয়ায় কোয়ালিটি সম্পন্ন কাপড় তৈরি করতে পারছে না। পুঁজির অভাব আর সুতার মূল্য বৃদ্ধির কারণে তাঁতের কাপড় বুননে এখন অনেকেই অনাগ্রহী হয়ে পড়ছেন। ফলে হারাতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্প।

মৌলভীবাজারের বিভিন্ন স্থানে মণিপুরীদের বসবাস হলেও সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মণিপুরী বসবাস করে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায়। তাই মণিপুরী তাঁতিদের অধিকাংশও এই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বসবাস করছে। এখানকার আদমপুর, তিলকপুর, মাধবপুর, গোলেরহাওর, বালিগাঁও, কুমড়াকাপন, মঙ্গলপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের মণিপুরীদের বাড়িতে বাড়িতে দিনরাত চলে কর্মব্যস্ততা।

এ জেলায় তাঁত শিল্পের জন্য মণিপুরী সম্প্রদায়ের পাশাপাশি তাঁতের কাজ করছেন বাঙালিরাও। এই কাজ করে তারা নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে তাঁত পণ্য বাণিজ্যিকভাবে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। নিজস্ব পুঁজি না থাকায় তাদেরকে দ্বারস্থ হতে হচ্ছে দাদন ব্যবসায়ীদের। কিন্তু এই দাদন ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে অনেকেই আজ বিমুখ হচ্ছে এই কাজ থেকে। ফলে ঐতিহ্যবাহী এই শিল্প পড়েছে এখন হুমকির মুখে। যদিও এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সবধরণের সহযোগিতার আশ্বাস রয়েছে প্রশাসনের।

তাঁত পল্লীগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে মণিপুরী মহিলা তাঁতি শুক্লা সিন্হা, সীমা সিনহা, কস্তরি সিনহা ও চিত্রালী সিনহার সাথে কথা বললে তারা জানান, বাজারে তাঁত কাপড়ের চাহিদা থাকলেও কাঁচামালের অভাবে চাহিদা মতো পাইকারি বিক্রেতাদের পণ্য সরবরাহ করতে পারেন না। কাঁচামাল না থাকায় অনেকে তাঁতের কাপড় বুনা ছেড়ে দিয়েছেন।

মণিপুরি তাঁত শিল্পী অনামিকা সিনহা বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক পাইকারই এসে অর্ডার দিচ্ছেন। তবে সুতা না পাওয়ার কারণে সব ক্রেতার চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছে না। শুধু দেশেই নয়,বিদেশেও বাহারি মণিপুরী পোশাকের প্রচুর চাহিদা থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাব রয়েছে। আগে মনিপুরী তাঁত কাপড়ের কাঁচামাল সিলেটে পাওয়া যেতো কিন্তু এখন ঢাকা, নরসিংদী কিংবা চট্টগ্রাম থেকে আনতে হয়। তাই সবার আগে এ শিল্পের কাঁচামালের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড সূত্রে জানা যায়, তাঁতশিল্পকে আরও সম্প্রসারিত করতে মাধবপুর এলাকায় নির্মাণ করা হয় তাঁত বোর্ডের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। যেখানে নিয়মিত তাতিঁদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, এ কার্যালয় মাসের অধিকাংশ সময়ই বন্ধ থাকে।

এদিকে বেসরকারি উদ্যোগে আদমপুরের মণিপুরী কমপ্লেক্সেও একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু রয়েছে। সেখানে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় তাঁত কাজের।

পাত্রখোলা বেসিক সেন্টারের লিয়াঁজো কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এমরান হোসেন বলেন, হস্তচালিত তাঁতশিল্প বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ কুটির শিল্প। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় এ অঞ্চলের তাঁতশিল্পীদের প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা হয়। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সবধরণের সহযোগিতাও প্রদান করে যাচ্ছি আমরা।

Bootstrap Image Preview