Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৩ সোমবার, মে ২০২৪ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যেসব কারণে বিএনপির ‘ভরাডুবি’, জানালেন কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১ জানুয়ারী ২০১৯, ০৫:০১ PM
আপডেট: ০১ জানুয়ারী ২০১৯, ০৫:০১ PM

bdmorning Image Preview


বিএনপির পরাজয়ের বেশ কিছু কারণ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির নেতাদের ভুলের জন্যই নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হয়েছে। মনোনয়ন বাণিজ্য, এজেন্ট দিতে না পারা ও নির্বাচনী প্রচারে অংশ না নেওয়া এই ভরাডুবির প্রধান কারণ। তারা নির্বাচনের নামে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নানা নাটক করেছেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের জনগনের রায় মেনে নিয়ে শপথে অংশ নেওয়ার জন্য ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

ঐক্যফ্রন্টের ৭জন শপথ না করার ঘোষনা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের আবারও ভুল না করার পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, “আমি এখনও মনে করি তারা জনগনের রায়কে অপমান করবে না। তারা গতবার নির্বাচন বর্জন করে ভুল করেছেন এবারও জনগন যে রায় তাদের দিয়েছে, এতে সন্তুষ্ট-অসন্তুষ্ট এটা তাদের ব্যাপার। এর মধ্যে যে কয়জন নির্বাচিত হয়েছে তারা জনগনের রায়ে নির্বাচিত হয়েছেন। জনগনের রায়কে যেন অসম্মান না করে এটা আমি বলতে চাই।”

নির্বাচন প্রত্যাখান করে আন্দোলনের ঘোষণাকে কিভাবে দেখছে আওয়ামী লীগ, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপি দেশে আন্দোলন করার মত কোন অভজেকটিভ কন্ডিশান নেই এবং আন্দোলনে অংশ নেওযার মত কোন সাবজেকটিভ প্রিপারেশনও তাদের নেই। এ অবস্থায় আন্দোলনের সুত্র তাদের বিরুদ্ধে।

তিনি বলেন, “গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তাদের নেতাদের চেহারার দিকে তাকিয়ে দেখেছেন? এত নারভাস, তারা হতাশায় ভেঙ্গে পরেছেন। নেতারাই হতাশায় ভেঙ্গে পরেছেন, কর্মীরা কিভাবে আশাবাদী হবে? কর্মীদের মধ্যে কিভাবে গতি পাবে?”

“আন্দোলন করতে হলে সেরকম চেতনা দরকার, সেরকম মানসিকতা দরকার, সু-সংগঠিত করতে সেরকম প্রস্তুতি দরকার। সেই প্রস্তুতিটা তাদের মধ্যে আছে বলে মনে হয় না। যদি থাকতো তাহলে সারা দেশে তাৎক্ষনিক একটা মিছিল করতে পারতো, এরকমটাও দেখলাম না।”

তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন নিয়ে যে আপত্তি তারা করেছে, এর একটা প্রতিবাদও কোথাও দেখলাম না। বিএনপি নেত্রী জেলে তার পরেও তারা কোন সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন করতে পারে নি।যা তারা এতদিন করতে পারেনি, এখন তাদের আরও ভাঙ্গাহাট। এই ভাঙ্গাহাট নিয়ে নতুন করে কোন আন্দোলনের সক্ষমতা অর্জন করবে এটা ভাবার কোন কারণ নেই। বিএনপি অচিরেই কোন আন্দোলন গড়ে তুলবে এটার কোন ভাবার কোন কারণ নেই।”

নতুন সরকারের কি চ্যালেঞ্জ নিচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “নতুন সরকারের চ্যালেঞ্জ একটাই, যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং বিজয় পেয়েছে। দেশের জনগনের কাছে জাতির কাছে ইশতেহারে যে ওয়াদাগুলো করেছেন সেটার বাস্তবায়নই হচ্ছে আমাদের চ্যালেঞ্জ।”

এবারের নির্বাচন ৭০, ৫৪ সালের মত হয়েছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সারা দেশে যে গণজোয়ার, ৭০ সালের পর আমরা এমন জোয়ার দেখিনি। ৭০ সাল,৫৪ সালের নির্বাচনের ফলাফলটা যেমনটা নৌকার পক্ষে হয়েছিল এবারও সেরকমটাই হয়েছে। তবে আমি অবাক হয়েছি, এতবড় দল বিএনপি যার কোন সাংগঠনিক অবকাঠামোই নেই। তারা যে আন্দোলন করতে পারেনি, সাংগঠনিক কাঠামোতে দূর্বলতা এটাই ছিল বড় কারণ। এবারকার নির্বাচনে দেখা গেছে, তারা তাদের সেই সাংগঠনিক শক্তিটা প্রদর্শন করতে পারেনি। তাদের অবস্থা এতই দূর্বল নড়বড়ে সংগঠন, যে তারা বিভিন্ন কেন্দ্রে, তাদের মধ্যে যাদেরকে হেভিওয়েট বলা হয় তারাও নিজেদের কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে পারেনি।”

“এজেন্ট না দিতে পারলে ভোটের ফলাফলের প্রতিক্রিয়া তো এমন হবেই। আমরা তো তাদেরকে অনুরোধ করেও এজেন্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারিনি। এছাড়াও কোথাও তাদের পোষ্টার নেই ব্যনার নেই এগুলো কিসের লক্ষণ? নির্বাচনে হারার আগেই তারা হাল ছেড়ে দিয়েছেন, তাহলে নির্বাচন করবে কেমন করে। নির্বাচন করার মত কোন প্রস্তুতিই তাদের মধ্যে ছিল না। তবে মওদুদ আহমেদ সাহেরে সঙ্গে এমন জয় আমি আশা করি নি। আমি ভাবছিলাম তিনি থাকবেন, উনার এজেন্টরা থাকবেন, তাহলে তো ভোটের ব্যবধানটা অনেক কমে যেত। এত ব্যবধান হতো না।”

“এবার তাদের পরাজয়টা ছিল অবধারিত। পরাজয়টা হয়তো কোন কোন জায়গায় অস্বাভাবিক মনে হয়, সেটাও তাদের ভুলের কারণে। আপনি এজেন্ট দিবেন না, তাহলে নির্বাচনে অংশ গ্রহনের কি প্রয়োজন ছিল? আপনি ব্যনার পোষ্টার করবেন না কেন? যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন তাহলে প্রচারে পিছিয়ে ছিলেন কেন। আসলে নির্বাচনের নামে একটা নাটক তারা করেছেন, সারা বিশ্বকে দেখানোর জন্য এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেও নির্বাচনের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি তা গ্রহণ করেন নি।”

জাতীয় পার্টি এবারেও প্রধান বিরোধী দল হিসেবে অবস্থান করছে সে ক্ষেত্রে তাদেরকে কি মন্ত্রীত্ব দেওয়া হবে না প্রধান বিরোধী দল হিসেবে রাখা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সরকারের প্রধানমন্ত্রী বিষয়টা শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার পরে স্বিদ্ধান্ত নিবেন।”

মন্ত্রী এমপিদের শপথ কবে নাগাদ হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, “আশাকরি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যা বর্তন দিবস ১০ জানুয়ারীর মধ্যে এমপিদের এবং মন্ত্রীদের শপথ অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাবে।”

Bootstrap Image Preview