Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৪ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ৩১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চাঁপাইনবাবগঞ্জে তিন আসনেই সমান আওয়ামী লীগ-বিএনপি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:০৭ PM
আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:০৭ PM

bdmorning Image Preview


চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি আসনেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমানতালে প্রচার চালিয়েছেন বিএনপির প্রার্থীরা।চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতাও নির্বিঘ্নে চালান প্রচার। প্রচারে মুখরিত ছিল আসন দুটির গ্রাম-মহল্লাগুলো।

আসন তিনটিতে বিরাজ করছে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া প্রচারে প্রতিপক্ষের কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। উৎসবমুখর পরিবেশেই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সভা-সমাবেশ, মিছিল-মাইকিং আর গণসংযোগ করেন প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকরা। নির্বাচনী ক্যাম্পগুলো থেকেও ভোট চাওয়া হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ): ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত চারবার এ আসনে সংসদ সদস্য (এমপি) ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহজাহান মিয়া। ২০০৮ ও ২০১৪ সালে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের মুহাম্মদ এনামুল হক ও গোলাম রাব্বানী। এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্বাচিপ নেতা ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল। আর বিএনপির প্রার্থী শাহজাহান মিয়া। এ ছাড়া বিএনএফের নুরুল ইসলাম জেন্টু (টেলিভিশন) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনিরুল ইসলাম (হাতপাখা) প্রার্থী হলেও তাঁদের তৎপরতা নেই বললেই চলে।

নির্বাচনে জয়ী হয়ে হ্যাটট্রিকের স্বপ্ন দেখছে আওয়ামী লীগ। বেশ আলোড়ন তুলেছেন নৌকার প্রার্থী ডা. শিমুল। তাঁর প্রয়াত বাবা ডা. মইনুদ্দিন আহমেদ মন্টু ছিলেন এই আসনে আওয়ামী লীগের এমপি। ছিলেন ব্যাপক জনপ্রিয়। দল ও বাবার জনপ্রিয়তা এবং নিজের ব্যক্তিত্ব দিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চান শিমুল। শিমুল চিকিৎসক নেতা হওয়ায় বিএমএ, স্বাচিপ ও অর্থোপেডিক সোসাইটির কেন্দ্রীয় নেতাও অংশ নেন তাঁর প্রচারে। এ ছাড়া সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক, বুয়েটের ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস প্রকৌশলী মাহতাব উদ্দিনসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতারা মাঠে নামেন নৌকার প্রচারে।

সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১০ বছরে তাঁর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ ভোটারদের ১৭ দফা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন। তাই নির্বাচনে নৌকার বিজয় হবেই। তিনি অভিযোগ করেন, ‘বিএনপি সহিংসতার চেষ্টা করছে। বিভিন্ন স্থানে নৌকার অফিসে হামলা করেছে তারা। তার পরও কর্মীদের শান্ত থাকতে বলেছি আমরা।’

শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। জামিনের জন্য প্রতিদিনই আদালতে ঘুরতে হচ্ছে আমাদের। দুই-তিন দিনে বিনোদপুর, মনাকষা ও শাহাবাজপুর ইউনিয়নে ধানের শীষের অফিস ভেঙে দিয়েছে নৌকার সমর্থকরা। তার পরও কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচনে টিকে থাকার চেষ্টা করছি। এমপি থাকাকালে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হলে ধানের শীষের জয় অনিবার্য।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (গোমস্তাপুর, নাচোল ও ভোলাহাট) : ১৯৯১ থেকে ২০০১ সালের চারটি সংসদ নির্বাচনে আসনটি ছিল বিএনপির দখলে। ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।

সাধারণ মানুষ ও দলের নেতাকর্মীরা জানায়, এবার আসনটিতে তিনজন প্রার্থী থাকলেও মূলত লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যে। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) গোলাম মোস্তফা বিশ্বাসকে বাদ দিয়ে এবার নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হয় সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ জিয়াউর রহমানকে। এর প্রতিবাদে গোমস্তাপুর ও নাচোল উপজেলায় বিক্ষোভ করে মোস্তফার অনুসারীরা। কিন্তু জিয়াউর রহমান প্রতিপক্ষ নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিরোধ মিটিয়ে ফেলেন। ফলে জিয়াউর রহমানের পক্ষে ভোট চেয়ে বেশ কয়েকটি নির্বাচনী পথসভায় বক্তব্য দেন গোলাম মোস্তফাও। তবে মোস্তফা সক্রিয় হলেও তাঁর অনেক অনুসারীকে নৌকার প্রচারে পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেন নাচোলের এক আওয়ামী লীগ নেতা। তবে জিয়াউর রহমান বলেন, দলে বিরোধ নেই। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েই প্রচার চালাচ্ছে। বর্তমান সরকারের উন্নয়নে খুশি সাধারণ মানুষ। প্রচারের সময় মানুষের ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন। তাঁর জয় সুনিশ্চিত।

অন্যদিকে দলীয় কোন্দল মিটিয়ে নব-উদ্যমে মাঠে নামেন বিএনপির প্রার্থী আমিনুল ইসলাম। গোমস্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির বাইরুল ইসলামসহ অভিমান করে থাকা অন্য নেতাদেরও মাঠে নামান তিনি। ফলে প্রচারে আসে নতুন মাত্রা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) : বিভিন্ন দলের ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও আওয়ামী লীগের আব্দুল ওদুদ (নৌকা), বিএনপির হারুনুর রশিদ (ধানের শীষ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা নুরুল ইসলাম বুলবুলের (আপেল) মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে মনে করছে সাধারণ ভোটাররা। তবে বিএনপি ও জামায়াতের দুই নেতা প্রার্থী হওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে আছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল ওদুদ। নির্বাচনে জয়ী হয়ে হ্যাটট্রিক করতে চান আওয়ামী লীগের এই নেতা। আব্দুল ওদুদ বলেন, তিনি এমপি থাকা অবস্থায় এলাকার যে উন্নয়ন হয়েছে তা অন্য কোনো সময় হয়নি। তাই ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে নৌকার বিজয় হবে।

Bootstrap Image Preview