যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে তুরস্কে বাংলাদেশের মহান বিজয়ের ৪৭তম বার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। এতে প্রবাসী বাঙালিসহ তুরস্কের নাগরিকরা অংশগ্রহণ করে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত করে তুলেন।
১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ দূতাবাস, আঙ্কারা দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বিজয় দিবসের সকালে তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম. আল্লামা সিদ্দীকী’র নেতৃত্বে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার মধ্য দিয়ে দিবসটি পালনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। অতঃপর দূতাবাস মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় দুতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের নিয়ে স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা করা হয়। আলোচনা শেষে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
দুপুরে আঙ্কারায় অবস্থিতমোনেক হোটেলের সম্মেলন কক্ষেবাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস-২০১৮ উদযাপন উপলক্ষে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে আঙ্কারায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশী, তুরস্কে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীবৃন্দসহ তুরস্ক ও অন্যান্য দেশের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। দূতাবাসের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান সবুজ আহমেদের সঞ্চালনায় উপস্থাপিত অনুষ্ঠানে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনান দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি পরিচালনায় ছিলেন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোঃ আখতার আহসান। অতঃপর বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রার উপর নির্মিত দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ দূতাবাস অনুষ্ঠানস্থলে বাংলাদেশের ইতিহাস, ভাষা, সংস্কৃতি, প্রকৃতি এবং উন্নয়নের উপর একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
উক্ত অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তৃতায় রাষ্ট্রদূত এম. আল্লামা সিদ্দীকী স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশের বিজয় অর্জনের উপর বিশদ আলোচনা করেন।
তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যা কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটবদলে যাওয়ার বিস্তারিত বিবরণ উপস্থিত অতিথিদের সম্মুখে তুলে ধরেন।
তিনি বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমে অংশীদার হওয়ার জন্য সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার জন্যউপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশেী ও শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান।
পরিশেষে, অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদ গ্রহণ করেন এবং খাবার শেষে আয়োজিতসাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশী, ছাত্র-ছাত্রী এবং দূতাবাসের কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের উপর দেশাত্ববোধক গান ও কবিতা পরিবেশন করেন। অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি সফলতার সাথে অনুষ্ঠিত হয়।