Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ শনিবার, মে ২০২৪ | ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘তোমরা ক্ষমা করোনি আমরাও করব না’

বিডিমর্নিং ডেস্ক-
প্রকাশিত: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:৪১ PM
আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০১:৪১ PM

bdmorning Image Preview


নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করছেন দ্বিতীয় দিনের মতো। এ সময় অধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফেরার আহ্বান জানালে তারা তা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘তোমরা ক্ষমা করোনি, আমরাও ক্ষমা করব না।’

ক্লাসে প্রমোশন না পেয়ে ২০১২ সালের ১২ মে বিজ্ঞান বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী চৈতী রায়ও আত্মহত্যা করেছেন, যার বিচার আজ পর্যন্ত হয়নি। তাই এবার শিক্ষার্থীরা অনড়। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে।

এদিকে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী অরিত্রী আত্মহত্যার ঘটনায় ৩ শিক্ষককে বরখাস্ত এবং বিভাগীয় মামলার নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। বুধবার, ৫ ডিসেম্বর সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি। এই নির্দেশের পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনা ও প্রভাতি শাখার প্রধান শিক্ষক জিনাত আরাকে বরখাস্ত করা হয়। তাদের এমপিও বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

বুধবার সকাল থেকেই অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এদিকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাসিনা বেগম বলেন, ক্লাস বন্ধ করা যাবে না, সামনে নির্বাচন হাতে সময় কম; আমি মেয়েদের আহ্বান করছি-সবাই ক্লাসে ফিরে এসো, জড়িত সবাইকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

শিক্ষক প্রতিনিধি মোস্তারি বেগম বলেন, শাস্তি সঙ্গে সঙ্গে হয় না-এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, দোষীদের শাস্তি পেতে হবে। তোমাদের দাবি পূরণ হবে সেটি আইনি প্রক্রিয়ায়। আমি তোমাদের দ্বিতীয় মা, তোমরা আমার দ্বিতীয় সন্তান।

বিশেষ করে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ‘শাসন করুন অপমান নয়,’ ‘কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে আর কত শিক্ষার্থী প্রাণ দেবে,’ ‘শিক্ষার্থীদের অপরাধের শাস্তি যদি টিসি হয়, তবে শিক্ষকদের অপরাধের শাস্তি কি হবে?’ বলে স্লোগান দিচ্ছে।

বিক্ষোভকারীরা বলছেন, শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়ে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষকদের কখনও বাচ্চাদের সমস্যা নিয়ে গার্ডিয়ানদের সঙ্গে কথা বলতে চায় না, বাচ্চার কোনো সমস্যা নিয়ে গেলে সমাধান করার চেষ্টা করে না। ‘আমরা সন্তানকে স্কুলে পাঠাই শিক্ষার জন্য। কিন্তু স্কুলের প্রত্যেকটা শিক্ষকের কাছে ব্যক্তিগত কোচিংয়ে পড়াতে হয়।

এক অভিভাবক আফরোজা ইয়াসমিন বলেন, শিক্ষকরা কেবল শাসন না এখানে শোসনও করেন। কোচিংটা বাধ্যতামূলক করে ফেলেছে- সবার সঙ্গে অমানবিক আচরণ করে। বাচ্চাদের শাসন করবে করুক। কিন্তু বাচ্চার সামনে বাবা-মাকে অপমান করে এমন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমরা চাই না। মামলা হয়েছে আমরা অতিসত্বর দোষীদের গ্রেফতার দেখতে চাই।

বিক্ষোভে অংশ নিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী রুবানা বলেন, আমরা পরীক্ষা বয়কট করে এখানে এসেছি, আমি ১০ বছর ধরে এখানে পড়ছি। সামান্য বিষয় নিয়ে বাবাকে ডেকে অপমান করা হয়, যার জন্য আমরা মানসিক চাপে থাকি। এমন অস্বাভাবিক মৃত্যু আমরা চাই না, এমন যেন আর না হয়, সে জন্য শিক্ষক ও সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে।

অরিত্রির সহপাঠীর মা কনিকা শেখ বলেন, এমন শিক্ষকের কাছ থেকে বাচ্চারা কি শিখবে! শিক্ষকরা বাচ্চাদের অনেক মানসিক চাপে রাখেন, এখানে শিক্ষার কোনো সুষ্ঠু পরিবেশ নেই।

Bootstrap Image Preview